মার্কিন অভিনেত্রী, চলচ্চিত্র নির্মাতা ও মানব হিতৈষী অ্যাঞ্জেলিনা জোলি। তিনবার গোল্ডেন গ্লোব পুরস্কার, দুইবার স্ক্রিন অ্যাক্টরস গিল্ড পুরস্কার এবং একবার একাডেমি পুরস্কার লাভ করেছেন। চলচ্চিত্র জগতের বাইরে তিনি জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার শুভেচ্ছাদূত মনোনীত হয়েছেন।এবার ফিলিস্তিনের গাজায় বেসামরিক নাগরিকদের ওপর ইসরায়েলের হামলার ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানালেন অস্কারজয়ী হলিউড তারকা অ্যাঞ্জেলিনা জোলি। সেখানকার অধিবাসীদের সহায়তা করতে এবং অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি ঘোষণার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
ইন্সটাগ্রাম হ্যান্ডেলে দেওয়া এক বিবৃতিতে এই মার্কিন অভিনেত্রী বলেন, ‘বিশ্বজুড়ে লাখ লাখ মানুষের মতো আমিও বিগত সপ্তাহগুলোতে ইসরায়েলে সন্ত্রাসী হামলা, পরবর্তী সময়ে অনেক নিরপরাধ নাগরিকের মৃত্যুতে অসুস্থবোধ করেছি এবং ক্ষুব্ধ হয়েছি। এই পরিস্থিতিতে কীভাবে সর্বোত্তম সাহায্য করা যায় তা নিয়ে ভাবছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি প্রত্যেক জিম্মির অবিলম্বে, নিরাপদে প্রত্যাবর্তনের জন্য প্রার্থনা করছি। এছাড়া যেসব পরিবার প্রিয়জনের হত্যার অকল্পনীয় যন্ত্রণা বহন করছে তাঁদের জন্যও প্রার্থনা করছি। সর্বোপরি, শিশুদের হত্যা করা হয়েছে এবং অনেক শিশু এখন এতিম হয়ে গেছে।’
হামাসের হামলার পরিপ্রেক্ষিতে ফিলিস্তিনের সাধারণ নাগরিকদের ওপর ইসরায়েলি নিপীড়নের বিপক্ষে তিনি।
তিনি বলেন, ‘ইসরায়েলে যা ঘটেছে তা সন্ত্রাসের কাজ। কিন্তু এটি গাজায় অবিরাম বোমাবর্ষণে নিরীহ মানুষকে হত্যার ন্যায্যতা দিতে পারে না। এদের কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই, খাবার বা পানি নেই, কোথাও আশ্রয় পাওয়ার কোনো সম্ভাবনাও নেই, এমনকি আশ্রয় নেওয়ার জন্য সীমান্ত অতিক্রম করার মৌলিক মানবাধিকারও নেই।’
বিবৃতিতে জোলি আরও বলেন, ‘যেকোনো প্রেক্ষাপটে সহিংসতার কারণে বাস্তুচ্যুত হওয়া মানুষের প্রতি আমার মনোযোগ রয়েছে। গাজার জনসংখ্যা ২০ লাখেরও বেশি। এদের অর্ধেক আবার শিশু। এরা প্রায় দুই দশক ধরে বাস্তুচ্যুত এবং রাষ্ট্রহীন অবস্থায় একটি গুরুতর অবরোধের মধ্যে বসবাস করছে।’
বর্তমান গাজায় ত্রাণ বিতরণ নিয়ে হলিউডের জনপ্রিয় এই তারকা বলেছেন, ‘গাজায় কয়েকটি ত্রাণবাহী ট্রাক প্রবেশ করেছে যা প্রয়োজনের একটি ভগ্নাংশ মাত্র। খাদ্য, জ্বালানি ও পানি বন্ধ করে দিয়ে তাদের সমষ্টিগতভাবে শাস্তি দেওয়া হচ্ছে। মানবতার খাতিরে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি দাবি করছি। ফিলিস্তিনি এবং ইসরায়েলিদের জীবন ও বিশ্বব্যাপী সকল মানুষের জীবন সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ।’
প্রসঙ্গত, গত ৭ অক্টোবর হামাস ইসরায়েলে রকেট নিক্ষেপ করার পর থেকেই নতুন করে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। একের পর এক বিমান হামলা চালায় ইসরায়েল। পাল্টা আক্রমণ করে হামাসও। এখন পর্যন্ত উভয় পক্ষ্যের হাজার হাজার মানুষ নিহত ও আহত হয়েছে। ইতোমধ্যে বিশ্ব তারকারা যুদ্ধ বন্ধের দাবিতে সরব হয়েছেন। জোয়াকিন ফিনিক্স, কেট ব্লানচেট, টেইলর সুইফট, বেলা হাদিদ, দুয়া লিপা ও জায়েন মালিকের মতো তারকা ফিলিস্তিনের সমর্থনে কথা বলেছেন এবং শান্তি ও ন্যায়বিচারের আহ্বান জানিয়েছেন।