শেষ শ্রদ্ধা জানাতে সদ্য প্রয়াত অভিনেতা আহমেদ রুবেলের মরদেহ বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) সকালে রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমিতে নেওয়া হবে। সেখানে তার মরদেহের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবেন সর্বস্তরের মানুষ। ঢাকা থিয়েটারের উদ্যোগে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এরপর বিকালে গাজীপুরের নিজ বাড়িতে তাকে দাফন করা হবে।
বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব নাসির উদ্দীন ইউসুফ বাচ্চু।
ঢাকা থিয়েটারের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক নাসির উদ্দীন ইউসুফ জানান, ‘আহমেদ রুবেল তিন দশকের বেশি সময় ঢাকা থিয়েটারের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ঢাকা থিয়েটারের হয়ে তিনি ‘কির্ত্তন খোলা’, ‘কেরামত মঙ্গল’, ‘হাদহদাই’, ‘একাত্তরের পালা’, ‘যৈবতী কন্যার মন’, ‘মার্চেন্ট অব ভেনিস’ ও ‘বনপাংশুলে’র মত কালজয়ী নাটকে অভিনয় করেছেন। দীর্ঘদেহী এ অভিনেতার কম্ভুকণ্ঠ চিরকাল দর্শকের স্মৃতিতে অম্লান থাকবে। তার মৃত্যুতে ঢাকা থিয়েটার গভীরভাবে শোকাহত।’
এসময় তিনি আরও জানান, “আহমেদ রুবেলের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে আগামীকাল সকালে তার মরদেহ শিল্পকলা একাডেমিতে নেওয়া হবে। এ আনুষ্ঠানিকতা চলবে বেলা সাড়ে ১২টা পর্যন্ত। পরে তার মরদেহ নিজ এলাকা গাজীপুরে নেওয়া হবে। সেখানে জানাজা শেষে গাজীপুর গোরস্থানে তাকে সমাহিত করা হবে।”
বুধবার সন্ধ্যায় নুরুল আলম আতিকের ‘পেয়ারার সুবাস’ সিনেমার বিশেষ প্রদর্শনী ছিল। এ সিনেমাতে গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেছেন আহমেদ রুবেল। ছবির প্রদর্শনীতে যোগ দিতে উত্তরা থেকে নিজে গাড়ি চালিয়ে রাজধানীর পান্থপথের বসুন্ধরা সিটি শপিং কমপ্লেক্সে এসেছিলেন তিনি। গাড়ি থেকে নামার সময়ই অসুস্থতা অনুভব করেন অভিনেতা। এরপর হেঁটে এগোতে থাকলে কিছুক্ষণ পরই অচেতন হয়ে নিচে পড়ে যান। সঙ্গে সঙ্গে স্কয়ার হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
আহমেদ রাজিব রুবেল ওরফে আহমেদ রুবেল ১৯৬৮ সালের ৩ মে চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের রাজারামপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ছোটবেলা থেকেই বেড়ে উঠেছেন ঢাকা শহরে, বর্তমানে পরিবারের সঙ্গে ঢাকার গাজীপুরে স্থায়ীভাবে বসবাস করছিলেন।
সেলিম আল দীনের ‘ঢাকা থিয়েটার’ থেকে আহমেদ রুবেলের অভিনয়ের হাতেখড়ি। আহমেদ রুবেল অভিনীত প্রথম নাটক গিয়াসউদ্দিন সেলিমের স্বপ্নযাত্রা। বনপাংশুল, যৈবতী কন্যার মন, হাতহদাই, মার্চেন্ট অফ ভেনিস নাটকে বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেন।
এরপর তিনি হুমায়ূন আহমেদের ঈদনাটক পোকা–তে অভিনয় করেন, যেখানে তাঁর অভিনীত ‘ঘোড়া মজিদ’ চরিত্রটি ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে। ২০০৫ সাল থেকে টেলিভিশন নাটকে নিয়মিত অভিনয় করতেন। তাঁর অভিনীত উল্লেখযোগ্য নাটক– ‘অতিথি’, ‘নীল তোয়ালে’, ‘বিশেষ ঘোষণা’, ‘প্রতিদান’, ‘নবাব গুন্ডা’, ‘এফএনএফ’।
আহমেদ রুবেল ১৯৯৩ সালে আখেরী হামলা সিনেমার মাধ্যমে রুপালি পর্দায় (চলচ্চিত্রে) পা রাখেন। পরে তিনি অভিনয় করেছেন চন্দ্রকথা, ব্যাচেলর, শ্যামল ছায়া, গেরিলা ইত্যাদি সিনেমায়।
২০১৪ সালে ভারতের নির্মাতা সঞ্জয় নাগ পরিচালিত সিনেমা পারাপার–এর প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেন।