ছোট পর্দার জনপ্রিয় অভিনেত্রী হুমায়রা হিমুর মৃত্যু ঘিরে দেখা দিয়েছে রহস্য। অভিনেত্রীর গলায় রশির দাগ পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। যা নিয়ে শুরু হয়েছে নানা আলোচনা, হিমুর মৃত্যু কি হত্যা নাকি আত্মহত্যা!
হিমুর মৃত্যুর বিষয়ে উত্তরা পশ্চিম থানার উপ পরিদর্শক (এস আই) মাসুদা খাতুন সংবাদমাধ্যমকে জানান, বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর) রাত ৮টার দিকে অভিনেত্রীর লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করা হয়। পরে মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য সোহরাওয়ার্দী কলেজের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
সুরতহাল শেষে মাসুদা খাতুন বলেন, ‘‘অভিনেত্রীর পরিচিতরা তাকে হাসপাতালে এনেছিল। আমরা তাকে হাসপাতালেই পেয়েছি। এখানেই আমরা প্রাথমিকভাবে হুমায়রা হিমুর লাশের সুরতহাল করেছি। তার শরীরে আঘাতের চিহ্ন ছিল না, তবে তার গলায় রশির দাগ পাওয়া গেছে। সম্ভবত তিনি আত্মহত্যা করেছেন।’’
পুলিশের এই উপ পরিদর্শক আরও বলেন, ‘‘অভিনেত্রীর মৃত্যুর শতভাগ সঠিক কারণ জানা যাবে ময়নাতদন্তের পর।’’
এ বিষয়ে অভিনয় শিল্পী সংঘের সাধারণ সম্পাদক রওনক হাসান জানান, হত্যা নাকি আত্মহত্যা সেটা নিশ্চিত নয়। তবে শোবিজের অনেক তারকার পোস্টই আত্মহত্যার দিকে ইঙ্গিত দিচ্ছে। তদন্ত চলছে, মৃত্যুর কারণ এখনও জানা যায়নি। হত্যা নাকি আত্মহত্যা এ বিষয়ে ব্রিফিং করবেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও পুলিশ।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, মেকআপম্যান মিহির ও অভিনেত্রীর প্রেমিক তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন। অভিনেত্রীর গলায় দাগ দেখে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পুলিশের সহায়তা নিতে চাইলে অভিনেত্রীর প্রেমিক পালিয়ে যান। তবে, অভিনেত্রীর মৃত্যুর ঘটনায় তার কথিত প্রেমিক মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন রুফি ওরফে উরফি জিয়াকে আটক করেছে র্যাব। শুক্রবার (৩ নভেম্বর) সকালে জিয়াউদ্দিনকে আটক করা হয় বলে র্যাবের লিগ্যাল ও মিডিয়া উইং থেকে এক বার্তায় বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।
এদিকে রওনাক হাসান জানিয়েছেন, হুমায়রা হিমুকে ময়নাতদন্তের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে শুক্রবার (০৩ নভেম্বর) বাদ জুম্মা চ্যানেল আই চত্বরে জানাযা অনুষ্ঠিত হবে। জানাজা শেষে শেষ শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করা হবে। এরপর লক্ষ্মীপুরে মায়ের কবরের পাশে তাকে সমাহিত করা হবে তাকে।
তবে, ছোট পর্দার জনপ্রিয় এই অভিনেত্রীর মৃত্যু হত্যা নাকি আত্মহত্যা তা দ্রুতই তদন্ত করে বের করার দাবি জানিয়েছেন নেটিজেনরা।
অসংখ্য টিভি নাটকে অভিনয় করা হুমায়রা হিমু এরমধ্যে ‘ডিবি’, ‘সোনাঘাট’, ‘চেয়ারম্যান বাড়ি’, ‘শোনে না সে শোনে না’ অন্যতম। ‘আমার বন্ধু রাশেদ’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে বড় পর্দায় অভিষেক হয় হিমুর। মুক্তিযুদ্ধের গল্প নিয়ে নির্মিত হয় এ চলচ্চিত্র। এতে অসাধারণ অভিনয় করে সমালোচকদের ভূয়সী প্রশংসা কুড়ান এই অভিনেত্রী।