‘সবার জন্য চলচ্চিত্র, সবার জন্য শিল্প সংস্কৃতি’ স্লোগানে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির আয়োজনে তৃতীয় বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উৎসব- ২০২৩’-এর পর্দা উঠল। ১৫ দিন ব্যাপী এ উৎসব দেশের ৬৪ জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে চলবে।
শুক্রবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় রাজধানীর সেগুনবাগিচায় জাতীয় শিল্পকলা একাডেমিতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে উৎসবটির উদ্বোধন ঘোষণা করেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ।
বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকির সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, চলচ্চিত্র নির্মাতা ও শিক্ষক হায়দার রিজভী। অন্যদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন, অভিনেতা ও চলচ্চিত্র শিল্প সমিতির সভাপতি ইলিয়াস কাঞ্চন, চলচ্চিত্র নির্মাতা শামীমা আখতার প্রমুখ।
প্রধান অতিথির বক্তব্য সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী বলেন, “চলচ্চিত্র এমন একটি অঙ্গন যা সমাজে খুব দ্রুত প্রভাব ফেলে। এই সংকটকালে ৬৪ জেলার শিল্পকলার আয়োজনে এ আয়োজনকে আমি সাদুবাদ জানাই। আশা করছি সব বাঁধা অতিক্রম করে উৎসবটি আয়োজন করে যাবে তারা।”
ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, “চলচ্চিত্র বানানো যত সহজ সিনেমা প্রদর্শন করা তত কঠিন হয়ে গেছে আমাদের। এর কারণে সিনেমা হলের সংকট। এ মুহূর্তে শিল্পকলা একাডেমির এমন উদ্যোগ দেশের সিনেমা শিল্পী এগিয়ে যেতে বড় ভূমিকা রাখবে।”
উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে অনুষ্ঠিত হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এরপর সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় প্রদর্শন হয় উৎসবের প্রথম চলচ্চিত্র নুরুল আলম আতিক পরিচালিত ‘লাল মোরগের ঝুটি’।
জানা গেছে, এবারের চলচ্চিত্র উৎসবে পাঁচটি ভিন্ন ক্যাটাগরিতে-সমকালীন চলচ্চিত্র, নারী নির্মাতাদের চলচ্চিত্র, মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র, ধ্রুপদী চলচ্চিত্র এবং আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত বা পুরস্কার প্রাপ্ত চলচ্চিত্রের মধ্য থেকে সিলেকশন কমিটি কর্তৃক বাছাইকৃত মোট ৩৬টি চলচ্চিত্র প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এর মধ্যে ২৩টি সমকালীন চলচ্চিত্র (২০১৮-২০২২ সাল) এবং ১৩টি অন্যান্য ক্যাটাগরির চলচ্চিত্র রয়েছে।
সমকালীন দেশীয় চলচ্চিত্র বিভাগে বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে চলচ্চিত্র জমা নেওয়া হয়, জমাকৃত প্রায় অর্ধশতাধিক চলচ্চিত্র থেকে বাছাই করে ২৩টি চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শনীর জন্য মনোনীত করা হয়। সেখান থেকে সাতটি ক্যাটাগরিতে শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র (দুই লাখ টাকা), শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র নির্মাতা (এক লাখ পঞ্চাশ হাজার টাকা), বিশেষ জুরি (এক লাখ টাকা) এবং শ্রেষ্ঠ চিত্রগ্রাহক, শ্রেষ্ঠ সম্পাদক, শ্রেষ্ঠ শব্দ পরিকল্পক এবং শ্রেষ্ঠ প্রযোজনা পরিকল্পককে পঞ্চাশ হাজার টাকা করে পুরস্কার প্রদান করা হবে। এছাড়া উৎসব স্মারক, সনদপত্র প্রদান করা হবে।
পুরস্কার প্রদানের লক্ষ্যে সাত সদস্যবিশিষ্ট জুরি বোর্ড গঠন করা হয়। উৎসবের চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হবে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা ও জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তন এবং দেশব্যাপী ৬৪ জেলার শিল্পকলা একাডেমিতে। চলচ্চিত্র প্রদর্শনী সকলের জন্য উন্মুক্ত রাখা হয়েছে। এ আয়োজনের পর্দা নামবে আগামী ৩ মার্চ।