আলোচিত অভিনেতা জায়েদ খান নানা বিষয় নিয়ে সবসময়ই আলোচনায় থাকেন । কখনো ‘ডিগবাজি’ কখনো দেশের বাইরের শো। যেমন এখন তিনি আছেন লন্ডনে। সেখানে বেশ কয়েকটি অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন আলোচিত এই অভিনেতা।
অন্যদিকে অভিনেতা থেকে উপস্থাপক বনে যাওয়া শাহরিয়ান নাজিম জয় প্রায়ই তার অনুষ্ঠানে অতিথিদের বির্তকিত প্রশ্ন করার জন্য আলোচিত। এছাড়া কদিন আগে নায়িকা মিষ্টি জান্নাতও অভিযোগের তীর ছোড়েন জয়ের দিকে। তাকে লং ড্রাইভে নিয়ে যাওয়া ও চুমু খাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন জয়, এমন অভিযোগ জানান এই অভিনেত্রী। সবকিছু মিলিয়ে গত সপ্তাহ দুয়েক ধরে নানা ইস্যুতে আলোচনায় জায়েদ খান ও শাহরিয়ার নাজিম জয়।
এবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নতুন করে আলোচনায়ে এলেন এই দুজন। সেটির সুত্রপাত মাত্র ২৫ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ক্লিপস দিয়ে।
কয়েকদিন আগে শাহরিয়ার নাজিম জয়ের উপস্থাপনায় ‘১৩ টি প্রশ্ন’ নামে একটি অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন জায়েদ খান। সেখানে জায়েদ খান কে জয় প্রশ্ন করেন, ‘অনেকে বলে, জায়েদ খানকে ধইরা যদি ধুমসে পিঠাইতে পারতাম। তাহলে মনে খুব শান্তি পেতাম।’
উত্তরে জায়েদ বলেন, ‘এটা আপনার ব্যাপারেও শুনছি বিদেশে গেলে। আমি বলেছি, পিঠাইতে পারবো না। চ্যানেল আইয়ের ভিতরে থাকে। মারার সুযোগ নাই।’
এসময় খানিকটা বিব্রত হয়ে যান জয়। তবে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার জন্য জয় জানতে চান, ‘এরকম শুনছেন? জায়েদ বলেন, ‘অনেক। আপনার আমার আমার সেইম কেস। আমারে যারা গালি দেয়, তারা আপনারেও গালি দেয়। আমাকে ফোন করে বলে যে, এই বেহায়া লোকের শো তে যাওয়া যাবে না। আমি বলেছি, ভাই আমিও আরেক বেহায়া। আমরা দুজনই বেহায়া।’
নেটিজেনরা এই ভিডিওর নাম দিয়েছেন ‘ইট আর পাটকেলের সংঘর্ষ’। এরইমধ্যে এই ২৫ সেকেন্ডের ভিডিওটি অনেকেই শেয়ার করেছেন। অনেকে মজা করে লিখেছেন ক্যাপশনও।
নাফিদা নওরীন নামে একজন লিখেছেন, জায়েদ খান কিন্তু উত্তর ভালো দেয়! শাহাত হেসেন নামে একজন কমেন্ট করেছেন, আবার ভাইরালের নেশায় এটাও তাদের স্ক্রিপ্টেট হতে পারে। আরেকজন লিখেছেন, জায়েদ ব্রো অলওয়েজ রকস। ব্যাডারে কোনো দিন শরম পাইতে, অপ্রস্তুত হইতে দেখি নাই।
এদিকে সম্প্রতি রকস্টার জেমসের সঙ্গে লন্ডন গেলেন ঢাকাই চলচ্চিত্রের অভিনেতা জায়েদ খান। এফডিসির নির্বাচন নিয়ে যে জায়েদ খান কদিন আগেও নিবিষ্ট ছিলেন সেই জায়েদ খানের কদর যেন হঠাৎ করেই দেশে বিদেশে বেড়ে গেল। কদিন আগেও অস্ট্রেলিয়ার সিডনি ও মেলবোর্ন মাতিয়ে এলেন। আর এবার গেলেন লন্ডনে। তাও দেশের শীর্ষ রকস্টার মাহফুজ আনাম জেমসের সঙ্গে বিজনেস ক্লাসে।
লন্ডনে জায়েদ খানের উপস্থাপনায় মঞ্চ মাতাবেন কিংবদন্তি এই শিল্পী। দুই দিনব্যাপী আয়োজনের উপস্থাপনা করবেন জায়েদ খান। আর দু’দিনই মঞ্চ মাতাবেন জেমস।
‘বাংলাদেশ ফেস্টিভ্যাল লন্ডন’ আয়োজনে অংশ নেওয়া প্রসঙ্গে এই অভিনেতা জায়েদ বলেন, আমি এখন শুধু দেশের দর্শকদের জন্য না। বিদেশেও প্রচুর ভক্ত তৈরি হয়েছে। তাদের ভালোবাসা নিতে ও দিতে আমাকে দেশের বাইরে নিয়মিত যেতে হচ্ছে। সেখানে গিয়ে দর্শকদের যে ভালোবাসা পাচ্ছি, তা অতুলনীয়। তাদের ভালোবাসা দেখে মনে হচ্ছে, আমি এখন আন্তর্জাতিক তারকা হয়ে গেছি।’
জায়েদ খান বলেন, ‘অনেক আগেই লন্ডনে শোয়ের প্রস্তুতি নিয়েছি। অনেক দিন আগে শোটি চূড়ান্ত করা হয়। পারফরম করার পাশাপাশি পুরো অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করব। সবচেয়ে আনন্দের বিষয়, আমাদের দেশের কিংবদন্তি তারকা জেমস ভাই অনুষ্ঠানে গান পরিবেশন করবেন আমার উপস্থাপনায়। বিষয়টি আমার জন্য অনেক আনন্দের। দেশে ফিরে আবার সিনেমা ও শোয়ের কাজ করব। সব মিলিয়ে ব্যস্ততা বেশ উপভোগ করছি।’
জয় ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন অভিনেতা হিসেবে। তবে তিনি এখন দেশব্যাপী পরিচিত জাদরেল একজন উপস্থাপক হিসেবে। বলছি শাহরিয়ার নাজিম জয়ের কথা। যার সঙ্গে সাক্ষাৎকারে বসলে যেকোনো মানুষেরই মাথায় দুশ্চিন্তা এসে ভর করে, কখন কী প্রশ্নে ঘায়েল করেন জয়।
প্রিয় এই অভিনেতার বিরুদ্ধেও অভিযোগের শেষে নেই তারকাদের। নায়িকা মিষ্টি জান্নাত তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন।
এই চিত্রনায়িকা জানিয়েছেন, জয়ের বিরুদ্ধে শিল্পী সমিতি ও অভিনয় শিল্পী সংঘে অভিযোগ দিয়েছেন তিনি। প্রয়োজন হলে নেবেন আইনি ব্যবস্থাও।
সংবাদ সম্মেলনে মিষ্টি জান্নাত জানিয়েছেন, ` জয় ভাইয়ের বাজে আচরণ নতুন কিছু নয়। ২০২০ সালে প্রথম তার অনুষ্ঠানে গিয়েছিলাম। সে সময় তিনি আমাকে প্রচণ্ড অপমান করে কথা বলেছিলেন। তখনই আমি তার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে চেয়েছিলাম। তিনি প্রত্যেক শিল্পীকে নিয়ে বাজে বাজে কথা বলেন। মুরাদকে বলেন টাকলা মুরাদ, ইকবালকেও বলেন টাকলা ইকবাল। ডিপজল ভাই তার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। ওমর সানী ও মৌসুমী আপু তাকে মারতে গিয়েছিলেন। বাপ্পী একবার তাকে বেয়াদব বলেছিল। অপু বিশ্বাস দিদি ও পরীমণিও তার বিরুদ্ধে কথা বলেছেন। তিনি যেভাবে কথা বলেন, সেটাই তো ভালো না। কাউকে অপমান করে কথা বলতে পারেন না উনি।`
মিষ্টি আরও বলেন, `শাহরিয়ার নাজিম জয়ের অনুষ্ঠান প্রত্যেক শিল্পীর উচিত বয়কট করা। ইতোমধ্যে এ বিষয়ে সিনিয়র শিল্পীদের সঙ্গে কথা হয়েছে। তাদের পরামর্শেই জয় ভাইয়ের বিরুদ্ধে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি ও অভিনয় শিল্পী সংঘে চিঠি দিয়েছি। আমি চাই, জয় ভাই এখানেই যেন থেমে যান। তিনি যদি চুপ না হন, তাহলে তার বেহায়াপনার বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেব।