• ঢাকা
  • শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
বিশেষ সাক্ষাৎকার

অনেক কষ্ট করে এই পর্যন্ত এসেছি : জান্নাতুল রশিদ


দেব রায় দীপ্ত
প্রকাশিত: জুলাই ১০, ২০২২, ০৩:৪২ পিএম
অনেক কষ্ট করে এই পর্যন্ত এসেছি : জান্নাতুল রশিদ

ঈদ মানেই অন্যরকম এক আমেজ। এই আমেজ ছুঁয়ে যায় সাধারণ থেকে তারকা সবার মাঝে। তারকারা তাদের বিভিন্ন কাজ ও কথা দিয়ে এই আমেজকে আরও এক ধাপ বাড়িয়ে দেয়। ঈদে আনন্দের মাত্রা বাড়িয়ে দিতে সংবাদ প্রকাশের বিনোদন প্রতিবেদক কথা বলেছেন নবাগত অভিনেত্রী জান্নাতুল রশিদের সাথে। কথা হয়েছে তার ক্যারিয়ার ও ঈদের বেশ কিছু মজার ঘটনা নিয়ে।

সংবাদ প্রকাশ : শুরুতেই আপনাকে ঈদ মোবারক

জান্নাতুল রশিদ :  আপনাকে এবং সংবাদ প্রকাশ‍‍কেও ঈদ মোবারক।

সংবাদ প্রকাশ : কেমন আছেন?

জান্নাত : হ্যাঁ, অনেকটা ভালো আছি। 

সংবাদ প্রকাশ : অভিনেত্রী জান্নাতুল রশিদ বলবো নাকি শুধু জান্নাতুল রশিদ? 

জান্নাত : এই প্রশ্নে বলবো, আপাতত আমার যাত্রা শুরু। এখনো শিক্ষানবিশ হিসেবেই আছি। আরও কিছুটা সময় যাক। অনেক কিছু অর্জন করা বাকি। যখন ওটা হয়ে যাবে, তখন হয়তো অভিনেত্রী জান্নাতুল রশিদ শুনতে খুব ভালো লাগবে। আপাতত জান্নাত ঠিক আছে।

সংবাদ প্রকাশ : ঈদের সময়টা কেমন কাটে?

জান্নাত : ছোটবেলার মতো তো আর এখন মজা হয় না। কারণ, এখন কাজ করছি। ব্যস্ততা আছে। ঈদের দিন কাজের চাপ থাকে না। তাই সেই সময়টা নিজেকেই দিই। বাসায় থাকি, একা একা ঘুরতে বের হই। বড় যত হচ্ছি, উৎসবের আমেজ কমে যাচ্ছে। আমার একটি বাজে অভ্যাস আছে। কেন জানি উৎসবের দিনগুলাতে একা থাকতেই ভালো লাগে। যদি কখনো সুযোগ হয়, পেছনে মানে ছোট বেলায় ফেরত যাবার; আমি দ্রুত চলে যাব। 

সংবাদ প্রকাশ : কিছু কি মিস করেন ছোটবেলার ঈদের?

জান্নাত : মিস তো অনেক কিছুই করি। কারণ, আমি যৌথ পরিবারে বেড়ে উঠেছি। আমরা প্রায় ১৮-১৯ জন এক সাথে থাকতাম। ছোটবেলার অনেক অনেক স্মৃতি আছে। তার ভেতর ঈদকে কেন্দ্র করে যদি বলেন, তাহলে চাঁদ রাতের কথা খুব মনে পড়ে। অসম্ভব সুন্দর সময় কাটতো। একে তো যৌথ পরিবার, এতে করে কোনো অনুষ্ঠান হলে সবাই মিলে খুব আনন্দ হতো। যে অনুষ্ঠানই হোক, একপ্রকার বিয়ে বাড়ির মতো রমরমা থাকতো। বাচ্চারা আনন্দ করতো। সবাই মিলে মেহেদি দিতো। ছোটবেলার চাঁদ রাতের সময়টা খুব মিস করি। 

সংবাদ প্রকাশ : পরিবারে কে কে আছেন?

জান্নাত : মা-বাবা, আমি এবং আরও এক ভাই-বোন আছে। সবার বড় আমি। 

সংবাদ প্রকাশ : একটু জানতে চাই আপনার পড়াশুনার ব্যাপারে।

জান্নাত : আমি এসএসসি, এইচএসসি মতিঝিল আইডিয়াল থেকে করেছি। এখন কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি থেকে বিবিএ করছি। স্কুলকে আমি খুব মিস করি। কারণ, আমি জান্নাত আজ যতটুকুই যা করতে পেরেছি, তা আমার স্কুলের জন্য। কলেজের অবদানও অনেক। বিভিন্ন ক্লাবে ছিলাম। এর ফলে অনেক কিছুই করতে পেরেছি। ধন্যবাদ আমার আইডিয়াল স্কুলকে।

সংবাদ প্রকাশ : অভিনয়ে আসার শুরুটা একটু বিস্তারিত জানতে চাই।

জান্নাত : একটু পিছন ফিরে তাকাতে হবে। ২০১৭ সালে। আমি মূলত গল্প লেখার মাধ্যমে ইন্ডাস্ট্রিতে আসি। আমি একজন স্ক্রিপ্ট রাইটার। আমার প্রথম লেখা নাটক ছিল ভালোবাসার ছয় গল্পের একটি সিরিজ। ওখানের দুইটা অংশ আমি লিখি। যার ডিরেকশন দিয়েছিলেন কাজল আরেফিন অমি ভাইয়া। সেটাই ছিল আমার টার্নিং পয়েন্ট। এছাড়াও ছোট ছোট কন্টেন্ট লিখতাম। তার বাইরেও ভয়েস দিতাম। ও হ্যাঁ, আমি কিন্তু ভয়েস আর্টিস্ট হিসেবেও কাজ করেছি। এই মিডিয়া জগতে আমার পা পড়ে বলতে পারেন আমার বয়স যখন ৬ বছর। কারণ, ‘প্রথম আলো’র ‘কিশোর আলো’র সাথে ছিলাম। ডিরেক্টরদের মেইল করতাম লিখা। অনেক সময় রিপ্লাই আসতো অনেক সময় আসতো না। এমনও হয়েছে ৫৬টি স্ক্রিপ্ট আমি পাঠিয়েছি। তার ভেতর সবচেয়ে ছোট লেখাটা সিলেক্ট হয়েছে। আর এভাবেই আসলে ধীরে ধীরে আসা। সম্প্রতি আমার একটি সিনেমায় কাজ করা হয়েছে। অনন্য মামুন পরিচালিত ‍‍‘রেডিও‍‍’ সিনেমায় কাজ করছি।

সংবাদ প্রকাশ : মনের মানুষের কথা ভক্তরা জানতে চায়।

জান্নাত : মনের মানুষ তো মনের ভেতরের ব্যাপার। এখন মনের ভেতর থেকে বের করতে চাচ্ছি না (মুচকি হাসি)। যদি তেমন কোনো কিছু হয়, তাহলে সেদিন না হয় আছে কি নেই সেই প্রশ্নের জবাব দেবো।

সংবাদ প্রকাশ : রান্না করতে পারেন?

জান্নাত : হ্যাঁ, রান্না পাড়ি। তবে লবণ ও ঝাল নিয়ে একটু ঝামেলা হয় (মুচকি হাসি)। আমার মনে হয়, চিংড়ি ভুনাটা আমি সবচেয়ে ভালো পাড়ি।

সংবাদ প্রকাশ : আমরা এলে কী রান্না করে খাওয়াতে চান ?

জান্নাত : আপনারা কী কী খেতে চান জানাবেন। অবশ্যই রান্না করে খাওয়াবো। চিন্তা করেবন না। যেদিন আমার এই ইন্টারভিউটা প্রকাশ হবে সেদিন রান্না করে খাওয়াবো। (লম্বা এক হাসি)

সংবাদ প্রকাশ : ঈদে কি খেতে পছন্দ করেন?

জান্নাত : ঈদে আমি ফুচকা খেতে পছন্দ করি (হাসি)। আমি এমন একটা মেয়ে যে, বাইরে ফুচকা খেতে তেমন একটা পছন্দ করি না। শুনলে অবাক হবেন যে, বছরে মাত্র তিন বার আমার ফুচকা খাওয়া হয়। রোজার ঈদ এবং কোরবানির ঈদে ফুচকা খাওয়া হয়। আর অন্য সময়ে একবার। ঈদে ফুচকা বাসায় বানানো হয়। ওটাই তখন উপভোগ করি।

সংবাদ প্রকাশ : অভিনয়ে আইডল কে?

জান্নাত : অভিনয়ে আইডল হুমায়ূন ফরীদি স্যার। আমি ছোটবেলা থেকে তার কাজ অনেক পছন্দ করি। তার ব্যক্তিত্বের আমি ভক্ত। আর এখন মোশাররফ করিম ভাইয়ার কাজ ভালো লাগে।

সংবাদ প্রকাশ : এখন পর্যন্ত কী কী কাজ করলেন?

জান্নাত : ভালোবাসার ছয় গল্প, আমার প্রথম সিনেমা ‘রেডিও’। ‘রেডিও’ সিনেমায় রিয়াজ ভাইয়া ও মম আপুর সঙ্গে পর্দা ভাগাভাগি করেছি। মিশু সাব্বির ভাইয়া ও সারিকা আপুর সাথে একটা কাজ করেছি। ‍‍‘বিশুদ্ধ ভালোবাসা‍‍’ নামের একটি নাটকে কাজ করেছি। আরও বেশ কিছু কাজ আছে। সবগুলোর আসলে নাম মনে নেই। 

সংবাদ প্রকাশ : ভক্তদের উদ্দেশে যদি কিছু বলতে চান।

জান্নাত : কাজ করছি। অনেক কষ্ট করে এই পর্যন্ত এসেছি। অনেক দূর যেতে চাই। ভক্ত বলবো না, ভালাবাসার মানুষ বলবো। তাদের কাছে অনুরোধ থাকবে, আমাদের দেশীয় কাজ দেখুন। আমাদের পাশে থাকুন। আর হ্যাঁ, সবাইকে আবারও ঈদের শুভেচ্ছা। ঈদ মোবারক। সংবাদ প্রকাশকেও ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

Link copied!