এবার নিভে গেল সন্ধ্যা-প্রদীপও। ৯০ বছর বয়সে সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।
মঙ্গলবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) রাতে টুইট করে তার মৃত্যুর খবরটি জানিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের সংসদ সদস্য শান্তনু সেন।
সাদাকালো ফ্রেমে গানের প্রজাপতি ছিলেন সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়। বাংলা আধুনিক গানের স্বর্ণযুগের শেষ তারকা শিল্পী ছিলেন তিনি। আধুনিক বাংলা গানের শ্রেষ্ঠ কণ্ঠশিল্পীদের মধ্যে হেমন্ত মুখোপাধ্যায়, মান্না দে, শ্যামল মিত্র, মানবেন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়রা একে একে চলে গিয়েছেন আগেই।
বাঙালির প্রিয় গায়িকা সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় গলা থেকে বের হয়েছে অনেক কালজয়ী গান। তার মধ্যে অন্যতম হলো ‘এই পথ যদি না শেষ হয়’, ‘মধু মালতী ডাকে আয়’, ‘এ শুধু গানের দিন’, ‘তুমি যে আমার ওগো তুমি যে আমার’।
জনপ্রিয় এই সঙ্গীত শিল্পী ২৫ জানুয়ারি ভারতের চতুর্থ সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা পদ্মশ্রী ফিরিয়ে দিয়েছেন।
ভারতীয় গণমাধ্যমের সূত্রে জানা যায়, দিল্লির কেন্দ্রীয় সরকারের সংশ্লিষ্ট সচিবালয় থেকে সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়কে ফোন করে ‘পদ্মশ্রী’ সম্মাননার জন্য মনোনীত করার কথা জানানো হলে তিনি সম্মাননা ফিরিয়ে দেন।
হতাশ কণ্ঠে সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় বলেন, “আমি ফোনকলেই স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছেন পদ্মশ্রী নেব না। আমার কাছে ভক্তদের ভালোবাসাই যথেষ্ট। শেষে এই ৯০ বছর বয়সে এসে আমাকে পদ্মশ্রী নিতে হবে! শিল্পীদের কি কোনো সম্মান নেই। পদ্মশ্রী একজন জুনিয়র আর্টিস্টের ক্ষেত্রে বেশি গ্রহণযোগ্য, গীতশ্রী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের জন্য নয়।”
সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় ১৯৭১ সালে “জয় জয়ন্তী” এবং “নিশিপদ্ম” চলচ্চিত্রে গান গেয়ে শ্রেষ্ঠ কণ্ঠশিল্পী হিসেবে জাতীয় পুরস্কার পেয়েছিলেন। পশ্চিমবঙ্গের অন্যতম সেরা এ কণ্ঠশিল্পীকে ২০১১ সালে রাজ্য সরকার সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার “বঙ্গ বিভূষণ”-এ সম্মানিত করা হয়েছিল।
এদিকে সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়সহ কলকাতার আরও দুইজন গুণীব্যক্তি ‘পদ্মশ্রী’ পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করেছেন। তারা হলেন পশ্চিমবঙ্গের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য এবং বিশিষ্ট তবলা বাদক পণ্ডিত অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়।