• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাধীনতা দিবসে দেখতে পারেন যে ১০ চলচ্চিত্র


মো. আসিফ খান
প্রকাশিত: মার্চ ২৬, ২০২২, ০৩:৩৪ পিএম
স্বাধীনতা দিবসে দেখতে পারেন যে ১০ চলচ্চিত্র

১৯৭১ সালে ৯ মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে জন্মলাভ করে বাংলাদেশ। স্বাধীনতার পর সুস্থ ধারার চলচ্চিত্রের বড় অংশ জুড়ে রয়েছে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক চলচ্চিত্র। চলচ্চিত্রগুলোতে যেমন সরাসরি যুদ্ধের ভয়াবহতা উঠে এসেছে, সেই সঙ্গে কিছু ছবিতে প্রত্যক্ষভাবে যুদ্ধকে উপস্থাপন না করে পরোক্ষভাবে এর ভয়াবহতাকে উপস্থাপন করা হয়েছে।

স্বাধীনতা দিবসে দেখে নিতে পারেন মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক এই ১০টি সিনেমা:

ওরা ১১ জন

স্বাধীনতাযুদ্ধের পটভূমিতে নির্মিত বাংলাদেশে প্রথম চলচ্চিত্র ‘ওরা ১১ জন’। ছবিটি ১৯৭২ সালে নির্মাণ করেন চাষী নজরুল ইসলাম। ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার ডাক দেন, এই ছবির গল্পে সেই ঐতিহাসিক ভাষণের কিছু অংশ দেখানো হয়েছে। ওরা ১১ জন মুক্তিযোদ্ধা গেরিলার বিভিন্ন অপারেশন এতে চিত্রিত হয়েছে। এতে অভিনয় করেছেন রাজ্জাক, শাবানা, নূতন, সৈয়দ হাসান ইমাম, আলতাফ, মুরাদ, নান্টু ,বেবী, আবু, খলিলউল্লাহ খান সহ আরও অনেকে।

অগ্নিসাক্ষী

ছবিটি মুক্তি পায় ১৯৭২ সালে। অগ্নিসাক্ষীর সিনেমায় উঠে এসেছে পাকিস্তানি বাহিনীর নৃশংসতার বিরুদ্ধে বাঙালিদের প্রতিরোধযুদ্ধ। ছবিটি ধর্ষিত নারীকে একজন অভিনেতার স্ত্রী হিসেবে গ্রহণ নিয়ে। চলচ্চিত্রটি নির্মাণ করেছিলেন বাংলাদেশের বিখ্যাত পরিচালক সুভাষ দত্ত। এতে অভিনয় করেছেন ববিতা, উজ্জল ও আনোয়ার হোসেন।

হাঙর নদী গ্রেনেড (১৯৯৭)

মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র ‘হাঙর নদী গ্রেনেড’ ১৯৯৭ সালে মুক্তি পায়। প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেনের উপন্যাস হাঙর নদী গ্রেনেড অবলম্বনে নির্মিত এই ছবিটি পরিচালনা করেছেন বাংলাদেশের বিখ্যাত চলচ্চিত্রকার চাষী নজরুল ইসলাম। এই ছবিতে অভিনয় করেছেন সুচরিতা, সোহেল রানা, অরুনা বিশ্বাস, অন্তরা, ইমরান, দোদুল ও আশিক প্রমুখ।

একাত্তরের যীশু এবং গেরিলা

একুশে পদকপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা ও নির্মাতা নাসিরউদ্দীন ইউসুফ নির্মাণ করেছেন বেশ কয়েকটি মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র। তার দুইটি উল্লেখযোগ্য মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র হলো একাত্তরের যীশু (১৯৯৩) এবং গেরিলা (২০১১)।

আগুনের পরশমণি

সাহিত্যিক, নাট্যকার হুমায়ূন আহমেদের মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক ছবি আগুনের পরশমণি (১৯৯৫)। ঢাকা শহরের রুদ্ধ পরিবেশে একটি পরিবারের আতঙ্ক এবং বদি নামের একজন মুক্তিযোদ্ধার গেরিলার অপারেশন ও শহীদ হওয়ার ঘটনা নিয়ে এই চলচ্চিত্র। এতে অভিনয় করেছেন বিপাশা হায়াত, আসাদুজ্জামান নূর, আবুল হায়াত, ডলি জহুরসহ আরও অনেকে।

মাটির ময়না

মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক নাট্য চলচ্চিত্র মাটির ময়না। এটি রচনা এবং পরিচালনা করেছেন তারেক মাসুদ। চলচ্চিত্রে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রাক্কালে গণঅভ্যুত্থানের পটভূমি উঠে এসেছে। চলচ্চিত্রের মূল ভূমিকায় অভিনয় করেছেন নুরুল ইসলাম বাবলু, রাসেল ফরাজী, জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়, রোকেয়া প্রাচী, শোয়েব ইসলাম এবং লামিসা আর রিমঝিম। ছবিটি জুড়ে ঐতিহাসিক ঘটনার উদ্ধৃতি থাকলেও সেগুলো একটি কিশোরের মানবিক অভিজ্ঞতায় প্রকাশিত হয়েছে। মাদ্রাসায় তার শিক্ষক, সহপাঠীদের আচরণ আর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে তার সম্পর্কের মধ্য দিয়ে এই চলচ্চিত্রটির কাহিনী এগিয়ে যায়।

জয়যাত্রা

বাংলাদেশের বিখ্যাত কাহিনিকার ও চলচ্চিত্র পরিচালক আমজাদ হোসেনের কাহিনী নিয়ে ‘জয়যাত্রা’ সিনেমা সংলাপ, চিত্রনাট্য ও পরিচালনা করেন তৌকির আহমেদ। জয়যাত্রা বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধকালীন একদল মানুষের হাসি-কান্না, সুখ-দুঃখ, মৃত্যু ও বেঁচে থাকার সংগ্রামের গল্প। ছবিটিতে বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন বিপাশা হায়াত, আজিজুল হাকিম, মাহফুজ আহমেদ, হুমায়ুন ফরীদি, তারিক আনাম খান, আবুল হায়াত, মেহবুবা মাহনূর চাঁদনী।

আমার বন্ধু রাশেদ

২০১১ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘আমার বন্ধু রাশেদ’ মুক্তিযুদ্ধভিত্তক চলচ্চিত্র। মুহম্মদ জাফর ইকবালের রচিত কিশোর উপন্যাস অবলম্বনে বাংলাদেশ সরকারের অনুদানে চলচ্চিত্রটি পরিচালনা করেছেন মোরশেদুল ইসলাম। এতে প্রধান চরিত্রে অভিনয়ে করেছেন চৌধুরী জাওয়াতা আফনান। অভিনয় করেছেন রাইসুল ইসলাম আসাদ, পীযুষ বন্দ্যোপাধ্যায়, ইনামুল হক। এছাড়া শিশুশিল্পী হিসেবে অভিনয় করেছেন রায়ান ইবতেশাম চৌধুরী, কাজী রায়হান রাব্বি, লিখন রাহি। ১৯৭১ সালে মফস্বল শহরের কয়েকজন কিশোর কীভাবে মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে, তারই কিছু চিত্র ফুটে উঠেছে গল্পে।

নদীর নাম মধুমতী

১৯৯৫ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র ‘নদীর নাম মধুমতী’। ছবিটির রচনা ও পরিচালনা করেছেন তানভীর মোকাম্মেল। এই ছবির প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন তৌকীর আহমেদ, আলী যাকের, রাইসুল ইসলাম আসাদ, সারা জাকের এবং আফসানা মিমি প্রমুখ।

লাল মোরগের ঝুঁটি

এই সিনেমাটি মুক্তিযুদ্ধ এবং বাঙালির আনন্দ ও বেদনার গল্প। মার খেতে খেতে দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া বাঙালির ঘুরে দাঁড়ানোর গল্প। চিত্রনাট্য ও পরিচালনা করেছেন গুণী ও খ্যাতিমান পরিচালক নুরুল আলম আতিক। এর বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন লায়লা হাসান, আহমেদ রুবেল, আশনা হাবিব ভাবনা, অশোক বেপারী, আশীষ খন্দকার, জয়রাজ, শিল্পী সরকার, ইলোরা গওহর, জ্যোতিকা জ্যোতি, দিলরুবা দোয়েল।

১৯৭১-এর ভয়াল সময়ে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর বিধ্বস্ত হওয়ার গল্প ‘লাল মোরগের ঝুঁটি’।
 

Link copied!