প্রবাদ আছে, যা রটে তা কিছুটা হলেও ঘটে! এবার থলের বেড়াল বেরিয়ে এলো। বলিউড অভিনেত্রী জ্যাকুলিন ফার্নান্দেজের বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রমাণ পেয়েছে মুম্বাই পুলিশ। অভিযোগ প্রমাণের পরই জ্যাকুলিনের বিদেশ ভ্রমণ আটকে দিয়েছে দেশটির প্রশাসন।
এনডিটিভি জানায়, রোববার (৫ ডিসেম্বর) দুবাই উদ্দেশ্যে রওনা করার আগেই মুম্বাই বিমানবন্দরে জ্যাকুলিনকে আটকে দেওয়া হয়। দেশটির এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট বা ইডির নোটিশের ভিত্তিতে তার দেশত্যাগে বাধা দেওয়া হয়েছে।
২০০ কোটি রুপির একটি প্রতারণা মামলায় অভিযুক্ত সুকেশ চন্দ্রশেখরের বিরুদ্ধে তদন্ত করছে ইডি। তদন্তে জ্যাকুলিনের সঙ্গে সুকেশের ঘনিষ্ট সম্পর্কের প্রমাণ পেয়েছে পুলিশ। সম্প্রতি তাদের ঘনিষ্ট মুহূর্তের কিছু ছবিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। জ্যাকুলিনকে একাধিকবার জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়েছে।
প্রতারক মামলার আসামি সুকেশ চন্দ্রশেখরের বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশ করেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ইডি) দেওয়া অর্থ পাচার মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়, সুকেশের কাছ থেকে ১০ কোটি রুপির উপহার নেন। উপহারের মধ্যে ছিল ৫২ লাখ রুপি মূল্যের একটি ঘোড়া এবং ৯ লাখ রুপির পার্সিয়ান বিড়াল। এছাড়াও জেলে থাকা অবস্থাতেই জ্যাকুলিনের সঙ্গে ফোনে কথাও বলতেন সুকেশ।
এরপরই জ্যাকুলিনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞার নোটিশ দেওয়া হয়। দুবাইয়ের একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়ে জ্যাকুলিন বিমানবন্দরে গেলে সেখানে তাকে আটকে দেওয়া হয়। এই অভিনত্রীর বিরুদ্ধে লুকআউট নোটিশ জারি থাকায় তাকে আটকে দেওয়া হয়েছে বলে জানান ইমিগ্রেশন কর্মীরা।
এদিকে ইডি কর্মকর্তারা জানান, জ্যাকুলিনকে শিগগিরই ইডির দিল্লি দপ্তরে নেওয়া হবে । সেখানে আবারও তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
অভিনেত্রী জ্যাকুলিন ফার্নান্দেজ ছাড়াও বলিউড আইটেম গার্ল খ্যাত নোরা ফতেহির নামও উল্লেখ রয়েছে চার্জশিটে। সেখানে বলা হয়, নোরাকে একটি দামি গাড়ি উপহার দেয় সুকেশ।
মামলার চার্জশিটে বলা হয়, নোরা ফাতেহিকে একটি বিএমডব্লিউ গাড়ি ও একটি আইফোন উপহার দিয়েছিলেন সুকেশ। এ দুই উপহারের মূল্য ১ কোটি রুপি।
সুকেশের আইনজীবী দাবি করেছেন, তার মক্কেল সুকেল ও জ্যাকুলিনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। গত সপ্তাহে জ্যাকুলিন ও সুকেশের কয়েকটি ছবি ভাইরাল হয়। ছবিতে দেখা গেছে, সুকেশকে জড়িয়ে ধরে চুমু খাচ্ছেন জ্যাকুলিন। চার্জশিটের মতে, চলতি বছরের জানুয়ারিতে জ্যাকুলিন ও সুকেশের ঘনিষ্ঠতার শুরু। এরপরই জ্যাকুলিনের জন্য দামি উপহার পাঠাতে থাকেন সুকেশ।
চার্জশিটে আরো বলা হয়েছে, জ্যাকুলিনকে যেসব উপহার দিয়েছেন সুকেশ তার মধ্যে ছিল জুয়েলারি, ক্রোকারিজ ও চারটি পার্সিয়ান বিড়াল। সুকেশ জেলে থাকা অবস্থায়ও জ্যাকুলিনের সঙ্গে ফোনে কথা হয়। জামিনে মুক্তির পর সুকেশ প্রাইভেট বিমানে জ্যাকুলিনকে চেন্নাই উড়িয়ে আনেন এবং শহরের একটি হোটেলে ওঠেন তারা দুজন। জামিন পাওয়ার পর সুকেশ চন্দ্রশেখর ৮ কোটি রুপি খরচ করেছেন শুধু বিমান ভ্রমণ বাবদ। এছাড়াও সুকেশ জ্যাকুলিনের আত্মীয়স্বজনকেও বিপুল অর্থ পাঠিয়েছেন।
চার্জশিটের অভিযোগ আরও বলা হয়, এক ওষুধ সংস্থার প্রাক্তন মালিক শিবেন্দ্র সিং ও মালবেন্দ্র সিংয়ের পরিবারের সঙ্গে ২০০ কোটি রুপির প্রতারণা করেছিলেন প্রতারক সুকেশ চন্দ্রশেখর ও তার স্ত্রী লিনা পাল। সেই মামলায় গ্রেপ্তার হোন এ দম্পতি।