আশা চৌধুরী
চলতি বছরের শুরুতেই ৪ জানুয়ারি মধ্যরাতে মিরপুরের দারুস সালাম এলাকায় ট্রাকচাপায় মারা যান ছোট পর্দার অভিনেত্রী আশা চৌধুরী। বাংলাদেশ টেলিভিশনের তালিকাভুক্ত শিশুশিল্পী ছিলেন আশা চৌধুরী। একক নাটকে নিয়মিত অভিনয় করতেন তিনি। টেলিফিল্ম ও ধারাবাহিক নাটকেও অভিনয় করতে দেখা গেছে তাকে।
এ টি এম শামসুজ্জামান
চলতি বছরের ২০ ফেব্রুয়ারি সূত্রাপুরের নিজ বাসভবনে শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন বরেণ্য অভিনেতা এ টি এম শামসুজ্জামান। ১৯৬৫ সালে অভিনেতা হিসেবে এ টি এম শামসুজ্জামানের সিনেমায় অভিষেক ঘটে। ১৯৭৬ সালে আমজাদ হোসেনের ‘নয়নমণি’সিনেমায় খলনায়ক হিসেবে তার আত্মপ্রকাশ ঘটে। সিনেমার পাশাপাশি অসংখ্য খণ্ডনাটক ও ধারাবাহিকে অভিনয় করেছেন তিনি। পাঁচবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার এবং একুশে পদক পেয়েছেন এ টি এম শামসুজ্জামান।
জানে আলম
‘একটি গন্ধমেরও লাগিয়া’ গানের শিল্পী জানে আলম ২ মার্চ মারা গেছেন। রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। এর মাসখানেক আগে জানে আলম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন। করোনামুক্ত হলেও তার নিউমোনিয়া ধরা পড়ে। এর পর থেকে তার অবস্থার অবনতি হলে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। সেখানেই শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন এই গায়ক।
শাহীন আলম
একসময়ের জনপ্রিয় চলচ্চিত্র অভিনেতা শাহিন আলম ৮ মার্চ মারা গেছেন। রাজধানীর আজগর আলী হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে থাকা অবস্থায় শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। এর আগে, কিডনিজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন শাহীন আলম।
মিতা হক
বরেণ্য রবীন্দ্রসংগীতশিল্পী মিতা হক চলতি বছরের ১১ এপ্রিল সকালে বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন। এর আগে ৩১ মার্চ মিতা হক করোনায় আক্রান্ত হন। তার রিপোর্ট নেগেটিভ হলে হাসপাতাল থেকে বাসায় চলে আসেন। তবে তিনি কিডনি রোগে আক্রান্ত ছিলেন।
ফরিদ আহমেদ
করোনায় আক্রান্ত হয়ে ১৩ এপ্রিল সকাল ৯টার দিকে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে তিনি শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত সংগীত পরিচালক ফরিদ আহমেদ। এর আগে ২০ মার্চ ফরিদ আহমেদ অসুস্থ হয়ে পড়েন। এরপর ২১ ও ২৩ মার্চ টেস্ট করালে তার করোনা রিপোর্ট নেগেটিভ আসে। কিন্তু শারীরিক অবস্থার উন্নতি না ঘটলে তিনি পুনরায় ২৫ মার্চ টেস্ট করান এবং তখন তার রিপোর্ট পজিটিভ আসে। সংকটাপন্ন অবস্থায় ১১ এপ্রিল ফরিদ আহমেদকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। শেষ পর্যন্ত চিকিৎসকদের চেষ্টাকে ব্যর্থ করে তিনি না-ফেরার দেশে পাড়ি জমান
সারাহ বেগম কবরী
ঢাকাই চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি অভিনেত্রী ও রাজনীতিবিদ সারাহ বেগম কবরী ১৭ এপ্রিল চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন। তিনিও করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যান। চলতি বছরের ৫ এপ্রিল কবরীর নমুনা পরীক্ষায় করোনাভাইরাসের রিপোর্ট পজিটিভ আসে। এরপর ওই দিন রাতেই শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল থেকে স্থানান্তর করা হয়। ৮ এপ্রিল দুপুরে তাকে শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের আইসিইউতে নেওয়া হয়। ১৫ এপ্রিল নেওয়া হয় লাইফ সাপোর্টে। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় না-ফেরার দেশে পাড়ি জমান নন্দিত এই অভিনেত্রী।
চিত্রনায়ক ওয়াসিম
বর্ষীয়ান অভিনেতা ওয়াসিম ১৮ এপ্রিল রাতে রাজধানীর শাহাবুদ্দিন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন। এই অভিনেতার বয়স হয়েছিল ৭৪ বছর। বেশ কিছুদিন বাসায় শয্যাশায়ীও ছিলেন তিনি। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে অভিনয় করেছেন ১৩৩টি সিনেমায়।
এস এম মহসীন
করোনায় প্রাণ হারিয়েছেন একুশে পদকপ্রাপ্ত মঞ্চ ও টেলিভিশন অভিনেতা এস এম মহসীন। ১৮ এপ্রিল সকালে রাজধানীর বারডেম হাসপাতালে শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন এই অভিনেতা। এর আগে পাবনায় ওয়াজেদ আলী সুমন পরিচালিত ও শাকিব খান অভিনীত ‘অন্তরাত্মা’ সিনেমার শুটিং সম্পন্ন করে ২ এপ্রিল ঢাকায় ফেরেন এস এম মহসীন। এরপর থেকে তার করোনার উপসর্গ দেখা দিলে তাকে প্রথমে একটি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখান থেকে পরে ইমপালস হাসপাতালে নেওয়া। অবস্থার অবনতি ঘটলে তাকে বারডেম হাসপাতালের আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। সেখানেই শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
ফকির আলমগীর
কিংবদন্তি গণসংগীত শিল্পী ও স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শব্দসৈনিক ফকির আলমগীর ২৩ জুলাই রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তিনি শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন। এর আগে ১৪ জুলাই ফকির আলমগীরের শরীরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হয়। এর এক দিন পর ১৫ জুলাই তার জ্বর ও শ্বাসকষ্ট বেড়ে গেলে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। ১৮ জুলাই থেকে তিনি ভেন্টিলেশনে ছিলেন। ২৩ জুলাই রাতে তার স্ট্রোক হয়। এর কিছুক্ষণ পর চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ড. ইনামুল হক
চলতি বছরের ১১ অক্টোবর বিকেলে নিজ বাসায় তিনি শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন একুশে পদকপ্রাপ্ত বরেণ্য অভিনেতা, নাট্যকার, নির্দেশক ও শিক্ষক ড. ইনামুল হক। বাধ্যক্যজনিত কারণে মারা যান ৭৮ বছর বয়সী এ অভিনেতা।
কায়েস চৌধুরী
নির্মাতা, অভিনেতা ও নাট্যকার কায়েস চৌধুরী ২১ অক্টোবর সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় বাসায় ইন্তেকাল করেন। দীর্ঘদিন ধরেই কিডনি রোগে ভুগছিলেন তিনি। কায়েস চৌধুরী দীর্ঘদিন নির্মাতা ও অভিনেতা হিসেবে কাজ করেছেন। নাট্যকার হিসেবেও অনেক দর্শকপ্রিয় নাটক উপহার দিয়েছেন তিনি।
মাহমুদ সাজ্জাদ
চলতি বছরের ২৪ অক্টোবর রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান অভিনেতা মাহমুদ সাজ্জাদ।
এ অভিনেতার বয়স হয়েছিল ৭৩ বছর। এর আগে গত ১ সেপ্টেম্বর তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তার করোনা পজিটিভ ছিল। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে আইসিইউতে নেওয়া হয়। তারপর কোভিড নেগেটিভ আসে। কিন্তু করোনা-পরবর্তী জটিলতার কারণে আবারও তাকে আইসিইউতে নেওয়া হয়, সেখানে মারা যান তিনি।