• ঢাকা
  • রবিবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬
ফিরে দেখা-২০২১

শোবিজে বিতর্কিত ঘটনার সাতকাহন


সংবাদ প্রকাশ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২৮, ২০২১, ০৫:১৭ পিএম
শোবিজে বিতর্কিত ঘটনার সাতকাহন
শেষ হচ্ছে ২০২১। আর এই শেষলগ্নে নতুন করে মনে করিয়ে দেয় ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো। বিদায়ী বছরটি বিনোদন দুনিয়ার জন্য ছিল বেশ ঘটনাবহুল। দেশের প্রথম সারির তারকারা জন্ম দিয়েছেন একের পর এক বিতর্ক। তাদের সেই ঘটনাবহুল বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের সাতকাহন জানানো যাক।

১. পরীমনিকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ

গত জুন মাসে নাসির ইউ মাহমুদ নামের এক ব্যবসায়ীর নামে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ এনে ফেসবুকে পোস্ট করেন পরীমনি। তিনি অভিযোগ করেন, তাকে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টা করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে বিচার দাবি করেন পরীমনি।

তখন পরীমনি গণমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, গত ৮ জুন রাতে পারিবারিক বন্ধু অমি ও ব্যক্তিগত রূপসজ্জাশিল্পী জিমির সঙ্গে বাইরে বের হন। বন্ধুটি তাদের নিয়ে যান আশুলিয়ার একটি ক্লাবে। সেখানে মদ্যপানরত কয়েকজনের সঙ্গে পরীমনির পরিচয় করিয়ে দেন অমি। ওই ব্যক্তিদেরই একজন হঠাৎ জোর করে তার মুখে পানীয়র গ্লাস চেপে ধরেন এবং ধর্ষণের চেষ্টা করেন। এ সময় মারধর করা হয় পরীর সঙ্গে থাকা জিমিকেও।

চিত্রনায়িকা পরীমনির অভিযোগ, ঘটনার পরপরই বনানী থানায় অভিযোগ করতে গিয়েছিলেন তিনি। তবে সে সময় দায়িত্বপ্রাপ্ত কোনো কর্মকর্তা তার অভিযোগ রেকর্ড করেননি। বরং সকালে এসে অভিযোগ করার পরামর্শ দেন। এ সময় পুলিশের সাহায্যে পরীমনি হাসপাতাল পর্যন্ত গিয়েও আতঙ্কবশত চিকিৎসা না নিয়েই বাড়ি ফিরে যান। এ ঘটনায় ভেঙে পড়েন পরীমনি। ভীষণ অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি।

যদিও এর কিছুদিন পর পরীমনি রূপনগর থানা ও সাভার থানায় ধর্ষণচেষ্টার লিখিত অভিযোগ করেন। মামলাটি এখনো বিচারাধীন। 

২. মাদক-কাণ্ডে গ্রেপ্তার পরীমনি

বছরের সব থেকে আলোচিত ঘটনার জন্ম দিয়েছে জনপ্রিয় চিত্রনায়িকা পরীমনির গ্রেপ্তার। গত ৪ আগস্ট রাজধানীর বনানীতে পরীমনির বাসায় অভিযান চালায় র‍্যাব। পরে গুলশান থানায় করা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

মামলা হওয়ার দুই মাসের মাথায় গত ৪ অক্টোবর আদালতে পরীমনিসহ তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। পরীমনিসহ তিনজনের বিরুদ্ধে দেওয়া অভিযোগপত্রে ১৯ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে।

অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, পরীমনির বাসা থেকে জব্দ মাদকদ্রব্যের বৈধ কোনো কাগজপত্র ছিল না। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে লিখিতভাবে সিআইডিকে জানানো হয়, ২০১৯-২০ অর্থবছরে পরীমনির নামে মদজাতীয় পানীয় সেবনের লাইসেন্স দেওয়া হয়েছিল। গত বছরের ৩০ জুন ওই লাইসেন্সের মেয়াদ শেষ হয়। পরীমনি বিভিন্ন স্থান থেকে এ মামলার দুই আসামি আশরাফুল ইসলাম ও কবির হোসেনের মাধ্যমে অবৈধ মাদকদ্রব্য সংগ্রহ করে বাসায় রেখেছিলেন। মাদকদ্রব্য রাখার বিষয়ে তিনি কোনো সন্তোষজনক জবাব দিতে পারেননি। পরীমনি তার গাড়িটি মাদকদ্রব্য বহনের কাজে ব্যবহার করতেন।

পরীমনি এখন জামিনে আছেন। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের বিষয়ে শুনানির জন্য ২ জানুয়ারি তারিখ ঠিক করেছেন আদালত।

৩. চলচ্চিত্র পরিচালক চয়নিকা চৌধুরী আটক

পরীমনি ইস্যুতে পরিচালক চয়নিকা চৌধুরীকে আটক করেছিল ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। ৬ আগস্ট বেসরকারি একটি টিভিতে সাক্ষাৎকার শেষ করে বের হওয়ার পর গোয়েন্দা পুলিশ পান্থপথ থেকে চয়নিকাকে আটক করে। এরপর তাকে নিয়ে যাওয়া হয় মিন্টু রোডের ডিবির কার্যালয়ে। এর আগে পরীমনি গ্রেপ্তারের পর ব্ল্যাকমেলিংসহ বেশ কয়েকটি অভিযোগ ওঠে পরিচালক চয়নিকা চৌধুরীর বিরুদ্ধে। তখন থেকেই গুঞ্জন চলছিল যে গ্রেপ্তার হতে পারেন এই নির্মাতা। যদিও আটকের পর তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ছেড়ে দেওয়া হয়।

৪. ইভ্যালি লাইভে তাহসান-মিথিলা

বিতর্কিত ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির প্রচারণায় একটি ফেসবুক লাইভে অংশ নেন তাহসান ও মিথিলা। তাদের ডিভোর্সের পর দুজনের ফেসবুক লাইভ নিয়ে অনুরাগীদের আগ্রহ ছিল আকাশচুম্বী। গত ১৫ মে রাত ৯টায় তাদের দেখা যায় ইভ্যালির ফেসবুক পেজে একসঙ্গে। তাহসান-মিথিলার ওই অনুষ্ঠান করতে অর্ধকোটি টাকার বেশি খরচ হয় ইভ্যালির।

তবে সমালোচনার মুখেও পড়তে হয় তাদের। নেটিজেনরা মন্তব্য করেন, টাকার কাছে নিজেদের ব্যক্তিগত জীবন বিক্রি করে দিয়েছেন এই দুই তারকা।

৫. তাহসান-মিথিলা ও ফারিয়ার বিরুদ্ধে মামলা

ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির প্রতারণামূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকায় অভিনেতা ও সংগীতশিল্পী তাহসান খান, অভিনেত্রী রাফিয়াত রশিদ মিথিলা, শবনম ফারিয়াসহ ৯ জনের নাম উল্লেখ করে একটি মামলা হয়েছিল। সাদ স্যাম রহমান নামের ইভ্যালির এক ভুক্তভোগী গ্রাহক মামলাটি করেন। ১০ ডিসেম্বর ধানমন্ডি থানায় মামলাটি করেন তিনি। এই মামলায় আগাম জামিনে আছেন মিথিলা ও শবনম ফারিয়া।

ইভ্যালির শুভেচ্ছাদূত ছিলেন তাহসান ও মিথিলা এবং প্রধান জনসংযোগ কর্মকর্তা হিসেবে ছিলেন শবনম ফারিয়া। এ কারণেই তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়।

৬. কল রেকর্ড ফাঁস

বছরের শেষের দিকে হঠাৎ করে ফাঁস হয় সাবেক তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান, ইমন ও মাহির কল রেকর্ড। অডিও কলে চিত্রনায়িকা মাহিকে পাঁচতারকা একটি হোটেলে (যেখানে তিনি অবস্থান করছিলেন) সেখানে নিয়ে যেতে ইমনকে নির্দেশ দেন।

অন্যদিকে মাহিয়া মাহিকে ধর্ষণের হুমকিসহ, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে ধরিয়ে আনার ভীতি প্রদর্শন করেন। এমন অডিও কল প্রকাশের পর ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন নেটিজেনরা। ‘টক অব দ্য কান্ট্রি’ হয়ে পড়ে একজন প্রতিমন্ত্রী হয়ে এমপি মুরাদের এমন আচরণ।

Link copied!