চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনে সাধারণ সম্পাদক পদে জায়েদ খানের প্রার্থিতা বৈধ বলে বুধবার (২ মার্চ) রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। হাইকোর্টের রায়ের পর তাৎক্ষণিক এক প্রতিক্রিয়ায় জায়েদ খান বলেন, জনপ্রিয়তাই আমার শত্রুতার কারণ। শিল্পীরাই আমার বিরোধিতা করেছেন।
জায়েদ খান বলেন,‘‘আদালতের রায়ের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। ন্যায়বিচার পেয়েছি আমি। আমার জন্য অনেক শিল্পী ও শুভাকাঙ্ক্ষী রোজা রেখে দোয়া করেছেন। আমি সবার প্রতি কৃতজ্ঞ।’’
বিচারপতি মামনুন রহমান ও বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের ভার্চুয়াল বেঞ্চ নিপুণের আপিল অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন।
গত ২৮ জানুয়ারি শিল্পী সমিতির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। পরদিন প্রাথমিক ফলে জায়েদ খানকে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে জয়ী ঘোষণা করা হয়। পরে নির্বাচনি আপিল বোর্ডের কাছে এ নিয়ে লিখিত অভিযোগ করেন নিপুণ।
আপিল বোর্ড সমাজসেবা অধিদপ্তরে চিঠি পাঠায়। পরিপ্রেক্ষিতে ২ ফেব্রুয়ারি সমাজসেবা অধিদপ্তর এক চিঠিতে জানায়, আপিল বোর্ড এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। ৫ ফেব্রুয়ারি আপিল বোর্ড জায়েদ খানের প্রার্থিতা বাতিল করে নিপুণকে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করে।
এর আগে ২৩ ফেব্রুয়ারি জায়েদ খানের প্রার্থিতা বাতিলের সিদ্ধান্ত কেন অবৈধ হবে না, এ মর্মে জারি করা রুলের প্রথম দিনের শুনানি হয়।
১৪ ফেব্রুয়ারি চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক পদ নিয়ে হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করে চেম্বার আদালতের আদেশ বহাল রাখেন আপিল বিভাগ। একই সঙ্গে সাধারণ সম্পাদক পদে স্থিতাবস্থাও বহাল রাখা হয়। পাশাপাশি এ বিষয়ে জারি করা রুল হাইকোর্টকে নিষ্পত্তির নির্দেশ দেন আদালত। প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বে ছয় বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
১৩ ফেব্রুয়ারি চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি নির্বাচনে জায়েদ খানের প্রার্থিতা বাতিলের সিদ্ধান্ত স্থগিত করে দেওয়া হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে চিত্রনায়িকা নিপুণ আক্তার লিভ টু আপিল দায়ের করেন।
গত ৯ ফেব্রুয়ারি চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি নির্বাচনে জায়েদ খানের প্রার্থিতা বাতিলে হাইকোর্টের দেওয়া সিদ্ধান্ত স্থগিত করেন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত। একই সঙ্গে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক পদে দায়িত্ব পালনের ওপর স্থিতাবস্থা জারি করেন আদালত।
এর আগে, হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে আবেদন করেন চিত্রনায়িকা নিপুণ।
৭ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনে সাধারণ সম্পাদক পদে জায়েদ খানের প্রার্থিতা বাতিল করে নির্বাচনী আপিল বোর্ডের দেওয়া সিদ্ধান্ত স্থগিত করে হাইকোর্ট। একই সঙ্গে জায়েদ খানের প্রার্থিতা বাতিলের সিদ্ধান্ত কেন অবৈধ হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করা হয়। এক সপ্তাহের মধ্যে সংশ্লিষ্টদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়।
বিচারপতি মামনুন রহমান ও বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
৭ ফেব্রুয়ারি সকালে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনে সাধারণ সম্পাদক পদের প্রার্থিতা বাতিল করে দেওয়া সিদ্ধান্তের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্ট রিট করেন জায়েদ খান।
বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির ২০২২-২৪ মেয়াদের নির্বাচনের প্রাথমিক ফলাফলে সাধারণ সম্পাদক পদে জয়ী হয়েছিলেন জায়েদ খান। পরে তার প্রার্থিতা বাতিল করে আপিল বোর্ড। এতে পদ হারান তিনি।
৫ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় নির্বাচনের আপিল বোর্ডের চেয়ারম্যান সোহানুর রহমান সোহান এক সভা শেষে এ সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন। একই সঙ্গে নায়িকা নিপুণকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী ঘোষণা করেন।
২৮ জানুয়ারি বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এর প্রাথমিক ফলাফলে জয়ী হন চিত্রনায়ক জায়েদ খান। পরের দিন (শনিবার) আরেক প্রার্থী নিপুণ নির্বাচনে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ তুলে আবেদন করলে জায়েদ খানের প্রার্থিতা বাতিল করে আপিল বোর্ড।