ছবির শুটিং সেটে ক্ষুদে শিল্পীকে আংটি উপহার দিয়েছেন চিত্রনায়িকা পরীমনি। তবে এটি কোন সাধারণ আংটি ছিলো না। খোদ পরীমনির এনগেজমেন্টে আংটি। আর এই ঘটনা ফেসবুক ওয়ালে বর্ণনা করেছেন নির্মাতা অরণ্য আনোয়ার।
শুক্রবার রাতে পরিচালক অরণ্য আনোয়ার ফেসবুকে বড় এক স্ট্যাটাসে লিখেছেন,‘বেলা তিনটার দিকে শুটিং প্যাকআপ করে আমি টিমের সঙ্গে খেতে বসলাম। এ সময় কে একজন বলল, পরী আপু আপনাকে ডাকছেন। সেটের মধ্যে একটা রুমে পরী তখন রাজের সঙ্গে ঢাকায় ফিরে যাওয়ার আয়োজনে ব্যস্ত। আমাকে দেখে বলল, “ভাইয়া, আমার সন্তানের চরিত্রে অভিনয় করা শিশুটাকে একটা ভালো গিফট দেওয়া উচিত।
ওর কথা শেষ হওয়ার আগেই আমি উত্তর দিলাম, ওটা নিয়ে তোমাকে চিন্তা করতে হবে না। আমি ব্যবস্থা করছি। বলেই আমি চলে এলাম। আমার মাথায় তখন খাওয়াদাওয়া শেষ করে ডে লাইটে একটা দৃশ্য শেষ করার চিন্তা।
আমি পেশাদার মানুষ। আমার প্রোডাকশন আগেই শিশুটির সম্মানী বাবদ একটা অঙ্ক খামে করে ওর মায়ের হাতে তুলে দিয়েছে। সেটাকে আমি যথেষ্ট বলে মনে করি।
খাওয়া শেষে উঠানে একটা দৃশ্যের শুটিংয়ের আয়োজন করছি, এ সময় আবার ঘরের ভেতর থেকে পরীর ডাক। আমি ব্যস্ত, তবু ভাবলাম ওকে বিদায় দিয়ে আসি। ঘরে ঢুকতেই দেখলাম রাজ আর পরীর হাতে একটা সোনার রিংয়ের ছোট বাক্স। পাশে বসা সেই শিশুটির মা।
পরী বলল, “ভাইয়া, আমার দুটো এনগেজমেন্ট রিংয়ের একটা হচ্ছে এটা। আমি বাবুটাকে আপনার হাত দিয়ে এই রিংটা উপহার দিতে চাই।” আমি হতভম্ব! কী বলে এই মেয়ে?
পরী আবার বলল, “গত কয়েকটা দিন ওর সাথে মায়ের চরিত্রে অভিনয় করে ওর প্রতি আমার যে মায়া জন্মে গেছে।” আমি আবেগাপ্লুত হলাম। শ্রদ্ধায় নত হলাম পরীর কাছে।
বললাম, তুমি সত্যিই একটা পাগল। আচ্ছা, আসো তাহলে আংটি দেওয়ার একটা ছবি তুলি একসঙ্গে। রাজ বলল, “নীরব ভালোবাসাটা নীরবই থাকুক ভাই। ছবি তোলার দরকার নাই।”
অরণ্য আনোয়ার আরও লিখেছেন, ‘আমরা ছবি তুললাম না। কিন্তু পরীর এই আবেগের কথা আমি লিখব না, মানুষকে জানাব না, এতটা চাপা স্বভাবের মানুষ যে আমি নই। দুই মাস বয়সী শিশুটির বাবা একজন অটোরিকশাচালক, মা গৃহিণী। স্যালুট, পরীমনি। তোমাকে স্যালুট, শ্রদ্ধা, ভালোবাসা।’
অরণ্য আনোয়ারের ‘মা’ ছবিটি এ বছর মুক্তি পাওয়ার কথা রয়েছে।
পরী অনেকবারই সহশিল্পীদের জন্য সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। প্রতিবছর কোরবানীর ঈদে এফডিসিতে গরু জবাই দিচ্ছেন।