প্রয়াত চলচ্চিত্র পরিচালক সাইদুল আনাম টুটুল মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র ‘কালবেলা’র শুটিং শুরু করেছিলেন ২০১৮ সালে। যখন ছবির শুধু গানের দৃশ্যায়নের কাজ বাকি, তখন হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান তিনি।
টুটুলের মৃত্যুর পর সিনেমাটির ভাগ্য ঝুলে যায়। ধরে নেওয়া হয়েছিল, ‘কালবেলা’ কালের গর্ভে হারিয়ে যাবে। কিন্তু না, হারায়নি। দেরিতে হলে সিনেমার কাজ শেষ হয়েছে। ১০ ডিসেম্বর মুক্তি পাচ্ছে এটি।
ছবিটি মুক্তি উপলক্ষে উদ্বোধনী প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়ে গেল মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে। বুধবার (৮ ডিসেম্বর) বিকেল ৫টায় অনুষ্ঠিত প্রদর্শনীতে উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা ও নির্মাতা নাসির উদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু, ‘সূর্যদীঘল বাড়ি’ নির্মাতা মসিহউদ্দিন শাকের, মানবাধিকার নেত্রী সুলতানা কামাল, অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী প্রমুখ। সেখানে তৈরি হয় এক আবেগঘন পরিবেশ।
উদ্বোধনী প্রদর্শনী শেষে আগত অতিথিরা ছবিটির প্রশংসা করেন। সাইদুল আনাম টুটুলের মৃত্যুর পর ২০১৯-এ চলচ্চিত্রটির প্রযোজক ও তার সহধর্মিণী অধ্যাপক মোবাশ্বেরা খানমের নেতৃত্বে শুরু হয় ‘কালবেলা’র অসমাপ্ত কাজ। তারা ২০২০-এ এসে ছবিটির সব কাজ শেষ করেন। তখন দেশে করোনা মহামারি দেখা দিলে ছবিটির মুক্তি আটকে যায়।
উদ্বোধনী প্রদর্শনীতে আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন মোবাশ্বেরা খানম। কান্না চেপে রেখে তিনি বলেন, “আমি টুটুলের মতো করে বানাতে পারিনি৷ সেটা সম্ভব নয়। আমরা চেষ্টা করেছি। মুক্তিযুদ্ধের পাকিস্তানের প্রভাব এই দেশে পড়েছে, তা দেখানো হয়েছে।”
২০১৭-১৮ অর্থবছরে পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র হিসেবে সরকারি অনুদান পায় ‘কালবেলা’। শুটিং শুরু হয় ২০১৮ সালের জুলাইয়ে। পুরো অক্টোবর-নভেম্বর মাস শুটিং হয় খুলনা ও কুষ্টিয়াসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায়।
‘কালবেলা’ ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের পটভূমিতে একজন নারীর সংগ্রামের কাহিনি নিয়ে নির্মিত। এই চলচ্চিত্রে উঠে আসবে যুদ্ধকালীন সাধারণ মানুষের আশ্রয়ের সন্ধানে অনিশ্চিত যাত্রা, অবরুদ্ধ শহরে কর্মজীবীদের বিপন্নতা, বিহারি ও পাকিস্তানি বাহিনীর নির্মম নৃশংসতা এবং যুদ্ধকালীন সামাজিক অস্থিরতা। ছবিটির প্রধান দুটি চরিত্রে অভিনয় করেছেন তাহমিনা অথৈ ও শিশির আহমেদ।