করোনার কারণে দীর্ঘ ১৭ মাস বন্ধ রয়েছে দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। বেশ কয়েকবার ঘোষণা দিয়েও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা থেকে সরে আসে সরকার। এদিকে দেশের করোনা পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়ায় সহসা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার সম্ভাবনাও দেখা যাচ্ছে না। এমন অবস্থায় সশরীরে ক্লাস নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪ শিক্ষক। স্বাস্থ্য বিধি মেনে প্রয়োজনে গাছ তলায় ক্লাস নেবেন তারা।
রাবির চার শিক্ষকই তাদের নিজেদের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে এই ঘোষণা দেন। এদিকে এই চার শিক্ষকের এমন ঘোষণা দেশ জুড়ে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
ক্লাস নিতে আগ্রহ প্রকাশ করা চার শিক্ষক হচ্ছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আবদুল্লাহ আল মামুন, ফোকলোর বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আমিরুল ইসলাম কণক, ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আল মামুন, আরবি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ইফতেখায়ের আলম মাসুদ।
গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক আবদুল্লাহ আল মামুন নিজের ফেসবুকে পোস্টে লিখেছেন, “আমি আগামী সপ্তাহ থেকে প্রতি সোমবার আর মঙ্গলবার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার বিভাগে উপস্থিত থাকবো। ক্লাসরুম খুলে না দিলে গাছের তলায় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মিট করবো এবং তারা পড়তে চাইলে পড়াবো।”
ইংরেজি বিভাগের আব্দুল্লাহ আল মামুন লিখেছেন, “সপ্তাহে ছয়দিন শুক্রবার বাদে সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত আমি আমার অফিসে শিক্ষার্থীদের সময় দেবো। মাঝেমধ্যে দু-একদিন ব্যতয় ঘটতে পারে।”
আরবি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ইফতেখায়ের আলম মাসউদ বলেন, “চলতি বছরে ২৭ মে রাজপথে প্রতীকী ক্লাস নিয়ে এ আহ্বান জানিয়েছিলাম। দেরিতে হলেও কিছু সমর্থন পেয়েছি। ছাত্রছাত্রীরা উপস্থিত থাকলে অবশ্যই ক্লাস নিবো। ক্লাসরুম খোলা না থাকলে গাছতলায় শুরু হবে আমাদের পাঠদান।”
ফোকলোর বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আমিরুল ইসলাম কণক লিখেছেন, “বাপের টাকা খরচ করে শিক্ষার্থীদের মেসে থাকতে হচ্ছে, এতিমের মতো ঘুরতে দেখে কষ্ট লাগে। গাছতলায়, নতুবা খোলা মাঠে ক্লাস নিতে চাই। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে আমাদের ক্লাস চলবে।”
ফেসবুকে শিক্ষকদের এমন ঘোষণায় বেশ ইতিবাচক সাড়া পেড়েছে। অনেকেই তারদের টাইমলাইনে গিয়ে ক্লাস নেওয়ার সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানাচ্ছেন।
এ বিষয়ে রাবির লোকশিল্প বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আমিরুল ইসলাম কণক বলেন, অনলাইনে যে ক্লাসগুলো নেওয়া হয়, সেখানে শিক্ষক-শিক্ষার্থী সংযোগ হয় না। আমরা শুধু বলে যাচ্ছি, কিন্তু শিক্ষার্থীরা আদৌ ক্লাসে যুক্ত আছে কিনা সেটি যাচাই করা সম্ভব হয় না। তাই আমি সশরীরে ক্লাস নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। যারা ক্লাস করতে চায়, তারা আসবে। নির্ধারিত কোর্সের বাইরের শিক্ষার্থীরাও আসতে পারে। আর যারা আসবে না তাদের পরে লেকচারের প্রিন্ট কপি দেওয়া হবে।