• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শাটল ট্রেনের ভোগান্তির শেষ কবে?


চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি
প্রকাশিত: মে ১৫, ২০২৪, ০২:১২ পিএম
শাটল ট্রেনের ভোগান্তির শেষ কবে?

চট্টগ্রাম শহর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে আসার জন্য শিক্ষার্থীদের অন্যতম বাহন  শাটল ট্রেন। তীব্র গরমে আসন সংখ্যা সীমিত হওয়ায় শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। এছাড়া চুরি-ছিনতাই, ছাত্রীদের যৌন হয়রানি, পাথর নিক্ষেপ প্রতিদিনকার ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে ঐতিহ্যবাহী এই শাটল ট্রেনে।

১৯৮০ সালে শহর থেকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ২২ কিলোমিটার দূরে হওয়ায় শিক্ষার্থীর যাতায়াতের মাধ্যম হিসেবে চালু হয় শাটল ট্রেন। ছুটির দিন ছাড়া সপ্তাহের সব দিনই নির্ধারিত সময়সূচিতে এক জোড়া শাটল ট্রেন চট্টগ্রাম শহরের বটতলী রেলস্টেশন থেকে ক্যাম্পাস এবং ক্যাম্পাস থেকে বটতলী রেলস্টেশনে যাতায়াত করে। শাটল দুটিতে প্রায় ১০ হাজারের অধিক শিক্ষার্থী প্রতিদিন আসা-যাওয়া করেন।

সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়েছে বেড়েছে ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা। বাড়েনি শাটল ট্রেনের সিট বা বগির সংখ্যা। নয়টি বগির প্রতি বগিতে সর্বোচ্চ ৫০ থেকে ৬০ জনের ধারণক্ষমতা থাকলেও দ্বিগুণের বেশি শিক্ষার্থী যাতায়াত করছেন। ২০২১ সালের নভেম্বরে অনিবার্য কারণ দেখিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয় চবির ডেমু ট্রেনটি। এরপর থেকে চাপ বাড়ে ট্রেন দুটির ওপর। বাধ্য হয়ে অনেক শিক্ষার্থীকে ঝুঁকি নিয়ে উঠতে হয় ট্রেনের ছাদে, বসতে হয় ওঠা-নামার সিঁড়িতে। এতে প্রায়ই ঘটে দুর্ঘটনা।  সর্বশেষ ৮ সেপ্টেম্বর ঘটে এক ভয়াবহ দুর্ঘটনা। ট্রেনের ছাদ থেকে পড়ে অন্তত ১৬ জন শিক্ষার্থী আহত হন। এই দুর্ঘটনার পর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শিক্ষার্থীদের ছাদে উঠা নিষিদ্ধ করে।

কোনো পাওয়ার কার সংযুক্ত না থাকায় অকেজো হয়ে থাকে সিলিংয়ের ফ্যানগুলো। গরমের দিনে ঘেমে একাকার হতে হয় শিক্ষার্থীদের। নেই সুবিধাজনক আলোর ব্যবস্থা। যা আছে তাতে আলোকিত হয় না পুরো ট্রেন। পাশাপাশি জরাজীর্ণ বগি ও ধীরগতি তো আছেই।

বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রায়ই ট্রেনে শিডিউল বিপর্যয় ঘটে। 

ট্রেনের লোকো মাস্টাররা জানান, বিভিন্ন কারণে ট্রেন দেরিতে ছাড়তে হয়। কখনো বা ইঞ্জিন থাকে না কিংবা ইঞ্জিন থাকলেও কোনো ত্রুটির কারণে তা ব্যবহার করা যায় না। মাঝে মাঝে শিক্ষার্থীরাও দেরিতে ছাড়তে অনুরোধ জানান।

জানা যায়, স্থানীয় টোকাইরা ট্রেনে পাথর নিক্ষেপ করে। এতে প্রতিদিনই কোনো না কোনো শিক্ষার্থী আহত হচ্ছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী মো. মাসুদ তার ফেসবুক পোস্টে বলেন, “এই গরমে সাড়ে সাতটা, আটটা, দেড়টা, আড়াইটা ও চারটার শাটল ট্রেনে এক সপ্তাহ আসা যাওয়ার পর প্রশাসন যদি মনে করেন এটা শিক্ষার্থীদের যাতায়াত উপযোগী; তবে আমি তওবা করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রত্ব বাতিল করে চলে যাব।”

ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী সানোয়ার আলম শিহাব বলেন, “এই তীব্র গরমে যেখানে আমাদের সিটে বসে যাওয়ার কথা, সেখানে আমরা পা ফেলার জায়গাও পাই না। শিক্ষার্থীদের এত ভোগান্তির পরেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কিভাবে নিরব থাকতে পারে।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সেকান্দর চোধুরী বলেন, “শাটল ট্রেন এককভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পদ নয়, এটি রেল মন্ত্রণালয়ের অধীনে। শাটল সংক্রান্ত যেকোনো সিদ্ধান্ত রেল মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে মিটিংয়ে বসে নিতে হবে। আগামীকাল এগারোটায় প্রক্টোরিয়াল বডির সঙ্গে রেল মন্ত্রণালয়ের মিটিং আছে, মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।"

Link copied!