খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) উপাচার্য অধ্যাপক মুহাম্মদ মাছুদের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে অনশন করছে শিক্ষার্থীদের একটি অংশ। সোমবার (২১ এপ্রিল) বিকেল ৪টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টুডেন্টস ওয়েলফেয়ার সেন্টারের সামনে তারা অনশনে বসেন।
উপাচার্যের পদত্যাগে দেওয়া আলটিমেটামের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাছুদ। মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) বেলা ১টায় উপাচার্য বলেন, ‘আমাদের যেসব শিক্ষার্থী অনশন করছে, তাদের সঙ্গে শিক্ষকেরা প্রতিনিয়ত যোগাযোগ রাখছেন। তাদের খোঁজখবর নিচ্ছেন। এখন আমার পদত্যাগের কোনো কারণ নেই। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কাজ করছে।’
‘শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনার এ চেষ্টা অব্যাহত থাকবে। যতক্ষণ পর্যন্ত আলোচনা দরজার না খুলবে, ততক্ষণ পর্যন্ত এ চেষ্টা চলবে। কারণ, আলোচনা করে সমাধান করা ছাড়া আমাদের আর কোনো পথ নেই।’
কুয়েট উপাচার্য বলেন, ‘যেসব শিক্ষার্থী এখন অনশন করছে, তাদের কোনোভাবে মেজরিটি বলা যাবে না। এখানে আমার অল্প কিছুসংখ্যক শিক্ষার্থী অংশ নিয়েছে। অন্যদিকে মেজরিটি সংখ্যক শিক্ষার্থী আমাকে আবেদনপত্রে জানিয়েছে, তারা এসব আন্দোলন চায় না। আন্দোলনের সঙ্গে তাদের সম্পৃক্ততা নেই। তারা ক্লাস-পরীক্ষায় ফিরতে চান। সুতরাং আমি কী করে বুঝব যে মেজরিটি শিক্ষার্থী এ আন্দোলনের সাথে সম্পৃক্ত?’
তিনি বলেন, ‘কুয়েটে দায়িত্ব নেওয়ার আট মাস চলছে। দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে এখানে শিক্ষার্থীদের এমন কোনো যৌক্তিক দাবি ছিল না, যেটা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন মেনে নেয়নি। তবুও হঠাৎ কেন আমাদের কিছু মেধাবী শিক্ষার্থী এত বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠল, সেটা আমাদের বুঝে আসছে না। চলমান আন্দোলন শুরুর পর থেকে আমরা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করছি। শিক্ষকেরা গিয়েও বারবার তাদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করছেন। অনশনকারীরা কারও কথা শুনছে না।’
এর আগে, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েটে শিক্ষার্থীদের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ হয়। এ সময় সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে শিক্ষার্থীরা দাবি করেন, ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবিতে তাঁদের বিক্ষোভ মিছিলে ছাত্রদল বহিরাগতদের নিয়ে হামলা করেছে।
অপর দিকে ছাত্রদল দাবি করে, সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও ছাত্রশিবির হামলা করেছে। এ সময় শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে ক্লাস বর্জন করেন এবং উপাচার্য, উপ-উপাচার্য ও ছাত্রকল্যাণ পরিচালকের পদত্যাগ, ছাত্ররাজনীতি বন্ধসহ ছয় দফা দাবিতে আন্দোলন করেন।
অনশনে বসা শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, ছাত্রদলের নেতা-কর্মী ও বহিরাগতরা গত ১৮ ফেব্রুয়ারি শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালালেও উপাচার্য নিরাপত্তা দিতে পারেননি। উল্টো ২২ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে ক্যাম্পাসের বাইরের একজন আদালতে মামলা করেছে। এ ছাড়া ৩৭ শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।