ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সলিমুল্লাহ মুসলিম (এসএম) হলের মসজিদ থেকে দীর্ঘ ২০ বছর পরে মাইকে সুউচ্চ কণ্ঠে আজানের ধ্বনি ভেসে আসে। এ সময় অনেকে সেটি ভিডিও করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেন।
পোস্টের ক্যাপশনে অনেকে বলেন, ছাত্রলীগের নেতারা তাদের ঘুমের সমস্যা হতো বলে ১৫ বছর আগে মাইকে আজান দেওয়া বন্ধ করে দেন। তবে দাবিটি সত্য নয় বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন ওই মসজিদের জ্যেষ্ঠ ইমাম ও খতিব মাওলানা আবুল কালাম আজাদ নাঈম। তিনি এ হলে ২৫ বছরের বেশি ইমামতি করছেন।
আবুল কালাম আজাদ নাঈম জানান, হলে নিয়মিত মুয়াজ্জিন না থাকায় ও সংরক্ষণের অভাবে মাইক নষ্ট হলে তা সংস্কার করা হয়নি। এ কারণে আজান দেওয়া বন্ধ ছিল।
সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের সাবেক শিক্ষার্থী ও মসজিদের সাবেক ইমাম জিয়াউল হক বলেন, “আমি ছাত্র থাকাকালে হুজুরের অনুপস্থিতিতে মসজিদে মাঝেমধ্যে নামাজ পড়াতাম। আমার সময়ে কোনো মাইক ছিল না। একসময় মাইক ছিল বলে শুনেছি তবে সেটা নষ্ট হয়ে যাওয়ায় নতুন করে লাগানো হয়নি। মসজিদের নির্দিষ্ট মুয়াজ্জিন না থাকায় মাইক সংরক্ষণ করা হয় না। তাছাড়া মাইক নষ্ট হওয়ার পরে আর কেউ সেভাবে উদ্যোগ নেয়নি। একবার উদ্যোগ নিলেও স্পন্সর কে করবে এটা ভেবেই আর সামনে আগানো হয়নি।”
সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের জ্যেষ্ঠ ইমাম ও খতিব মাওলানা আবুল কালাম আজাদ নাঈম বলেন, “এসএম হলে আমার ইমামতির বয়স ২৫ বছরের বেশি। ২০০২ সালের দিকে একজন হাউজ টিউটরের উদ্যোগে মাইক লাগানো হয়েছিল। কিছুদিন সেটা চলমান ছিল। তবে মুয়াজ্জিন না থাকায় একার পক্ষে সব কিছু পরিচালনা করাও কঠিন ছিল। শিক্ষার্থীরাই অধিকাংশ সময় আজান দিত। কিছুদিন পরে মাইক নষ্ট হলে সেটা ঠিক করার উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। এরপর থেকে ছোট সাউন্ডবক্সেই আজান দেওয়া হয়। কিছুদিন আগে শিক্ষার্থীদের আবেদনের প্রেক্ষিতে অন্যান্য কাজের সঙ্গে মাইকের ব্যবস্থা করে হল প্রশাসন।”
ছাত্রলীগের বাধায় মাইকে আজান বন্ধ হয়েছিল কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, “না, এটা সত্য নয়। ছাত্রলীগের নেতারা আজান দেওয়া নিয়ে আমাদের ওপর কখনো হস্তক্ষেপ করেনি। এটা মানুষ না জেনে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে।”
তিনি আরও বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনটি ছেলে হল ও ছাত্রী হল ছাড়া সব হলেই এখন মাইকে আজান হয়। শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল, শহীদুল্লাহ হল এবং একুশে হলে এখনও মাইক নেই। তবে লাগানোর উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে বলে শুনেছি। কিছুদিন আগে এ এফ রহমান হলে মাইক লাগানো হয়েছে। কিছু হলে ৩-৪ বছর ধরে মাইকে আজান হয়।”