বিগত সরকারের আমলে বিশ্ববিদ্যালয়ের মান উন্নয়নের জন্য কাঠামোগত অনেক উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু রাষ্ট্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর চেপে বসলে ওই উদ্যোগগুলো বাস্তবায়ন করা কঠিন হয়ে পড়ে। বিশ্ববিদ্যালয়ে সব চিন্তা বিকাশের সুযোগ দিতে হবে।
বুধবার (২ অক্টোবর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পরিচালিত ত্রৈমাসিক সাহিত্য পত্রিকা ‘সাইরেন’-এর উদ্যোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের আরসি মজুমদার মিলনায়তনে ‘কেমন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চাই? সংকটের কারণ ও সমাধানের পথ অনুসন্ধান’ শীর্ষক সেমিনারে এ কথাগুলো বলেন বক্তারা।
সেমিনারে বক্তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) নিয়ন্ত্রণ কমানো, বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য ও উপাচার্যের ক্ষমতা হ্রাস, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদকে (ডাকসু) ক্যালেন্ডারভুক্ত করাসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিলের ক্ষমতা বাড়ানোর দাবি জানান। একই সঙ্গে ছাত্ররাজনীতি বন্ধ না করে এর যৌক্তিক সংস্কারের পক্ষে মত দেন তারা।
লেখক-অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ে সকল চিন্তা বিকাশের ও প্রকাশের সুযোগ দিতে হবে। আমরা কেমন বিশ্ববিদ্যালয় চাই—এই আলোচনা আমরা কেমন রাষ্ট্র চাই এর সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত।”
সলিমুল্লাহ খান তার আলোচনায় আগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও বর্তমান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চিত্র তুলে ধরে বলেন, “আমরা কেমন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চাই, তার জন্য আমাদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেমন আছে এবং পূর্বে এটি কেমন ছিল, তা জানতে হবে।”
বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক মোহাম্মদ আজম বলেন, “স্বাধীনতার পর থেকে এখন পর্যন্ত এইবারই প্রথম আমরা এমন কোনো একটা পজিশনে এসেছি, যেখানে একসঙ্গে অনেকগুলো ভালো উদ্যোগ নেওয়া সম্ভব। যদি ডাকসু নির্বাচনকে ক্যালেন্ডারভুক্ত করা যায় এবং মাস্টার্স শেষ হওয়া মাত্রই যদি শিক্ষার্থীরা হল থেকে চলে যায় অর্থাৎ হলের সিট বরাদ্দ যদি ঠিকভাবে সম্পন্ন হয়, তাহলে কিছুদিনের মধ্যেই বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যাপক পরিবর্তন দেখা যাবে।”
সহযোগী অধ্যাপক সামিনা লুৎফা বলেন, “আমরা আসলে যে দেশের বিশ্ববিদ্যালয়, সে দেশের মতো করে এটিকে গড়তে হবে। এটিকে বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয় হতে হবে। এই বিশ্ববিদ্যালয়টিতে শ্রমজীবী মানুষেরও কী কী স্টেইক আছে, সেই বিষয়ে আলোচনা হবে। এটি এমন একটি বিশ্ববিদ্যালয় হবে, যেখানে আমরা স্বস্তিতে থাকতে পারব।”
সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন লেখক তুহিন খান। সঞ্চালনা করেন শিক্ষার্থী সালসাবিল বিনতে সালাম। অনুষ্ঠানের সমাপনী বক্তব্য দেন সাইরেনের সম্পাদক মোজাম্মেল হক। এর আগে অনুষ্ঠানের শুরুতে আশুলিয়ায় শ্রমিক নিহত ও জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে নিহত ব্যক্তিদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।