বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ ও সারজিস আলমকে রংপুরে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করায় জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফাকে তার বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করার আল্টিমেটাম দিয়েছে রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) বিকেল ৫টার দিকে মানববন্ধন করে বেরোবির বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
মানববন্ধনে শিক্ষার্থী আশিকুর রহমান বলেন, “রংপুর কারও একার সম্পত্তি নয়, রংপুর সারজিস আলমের। জাতীয় পার্টি যে বক্তব্য দিয়েছে, তা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন যেকোনো কর্মসূচি বন্ধ করার পূর্বাভাস। আমরা জাতীয় পার্টিকে স্পষ্টভাবে আল্টিমেটাম দিচ্ছি, তারা যেন অবিলম্বে তাদের উস্কানিমূলক ও বিভ্রান্তিকর বক্তব্য প্রত্যাহার করেন। যদি জাতীয় পার্টি এই বক্তব্য প্রত্যাহার না করে, তবে আমরা কঠিন থেকে কঠিনতম আন্দোলনের ডাক দিতে বাধ্য হবো।”
আরেক শিক্ষার্থী ওহি প্রধান বলেন, “সারজিস আলম এবং হাসনাত আব্দুল্লাহ বাংলাদেশের স্বৈরাচার মুক্ত করার অন্যতম নায়ক হিসেবে বিবেচিত। তারা দেশের বিভিন্ন জায়গায় প্রোগ্রাম আয়োজন করে চলেছেন, যা বৈষম্যের বিরুদ্ধে সংগ্রামের প্রতীক। এরকম অসঙ্গত আচরণ এবং বৈষম্যমূলক বক্তব্য আমরা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারি না। এসব কথার অবশ্যই তাদের জবাব দিতে হবে।”
গোলজার হোসাইন নামের একজন বলেন, “সমন্বয়দের অবাঞ্ছিত ঘোষণা করার কোনো অধিকার তাদের নেই। অতীতে আমরা দেখেছি যে, জাতীয় পার্টি আওয়ামী লীগের পাশে ছিল এবং তাদের সাহায্য করেছে। যদি হাসনাত আব্দুল্লাহ ও সারজিস আলমের মতো নেতারা না থাকতেন, তাহলে হয়তো আজ বাংলাদেশ স্বৈরাচারমুক্ত হতো না। এই জাতীয় পার্টি এবং আওয়ামী লীগের হাতেই হয়তো বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা অন্যরকম হতো। আমরা চাই, জাতীয় পার্টিকে সঠিক বিচার ও জবাবদিহিতার আওতায় আনা হোক, যেন অতীতের সকল কর্মকাণ্ডের যথাযথ মূল্যায়ন হয়।”
উল্লেখ্য, সোমবার (১৪ অক্টোবর) রংপুর শহরে জাতীয় পার্টির কার্যালয়ে এক সভায় হাসনাত আব্দুল্লাহ ও সারজিস আলমকে রংপুরে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে বক্তব্য দেন জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান ও রংপুর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা।
সভায় জাপার এই নেতা বলেন, “জাতীয় পার্টিকে রাজনৈতিক সংলাপে না ডাকতে ফেসবুকে হাসনাত আব্দুল্লাহ ও সারজিস আলম যে ঘোষণা দিয়েছে- তারা রংপুরে আসতে পারবে না। যার যা কিছু আছে তাই নিয়ে এই রংপুরের পার্টি অফিসে বসে থাকবেন। আমরা দেখিয়ে দিতে চাই, রংপুরে জাতীয় পার্টির শক্তি কতটুকু। যদি এই আন্দোলনকে আমরা জনস্রোত করতে না পারি তাহলে জাতীয় পার্টি থেকে নাকে খত দিয়ে চলে যাবো।”