সচিবালয় ঘেরাওকারী আনসার সদস্যরা ‘আনসার লীগের’ সদস্য বলে মন্তব্য করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম। তিনি বলেছেন, “ওখানে (সচিবালয়ে) যারা ছিল, তারা আনসার বাহিনীর সদস্য নয়, ওরা আনসার লীগের সদস্য। তারা জনগণকে সেবা না দিয়ে, ওই লীগকে (আওয়ামী লীগের) সেবা দিয়ে এসেছে। তারা যোগ্যতার ভিত্তিতে না এসে, পা চেটে-তোষামোদ করে এখানে এসেছিল।”
সোমবার (২৬ আগস্ট) সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে ছাত্রদের ওপর ফ্যাসিস্টদের মদদপুষ্ট কতিপয় আনসার সদস্যদের রক্তাক্ত হামলার প্রতিবাদ, ষড়যন্ত্রকারী সাবেক ডিজিসহ সবার বিচার, প্রশাসনকে ফ্যাসিবাদ মুক্ত করার দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ তিনি এসব কথা বলেন।
সারজিস আলম বলেন, “তারা (আনসার সদস্য) সোমবার (২৫ আগস্ট) সকালে যখন ওখানে আসে, আমাদের ছাত্র প্রতিনিধি যারা দুইজন সরকারে রয়েছেন, তারা মাননীয় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাসহ অন্যান্য উপদেষ্টাদের সঙ্গে ওই বিষয় নিয়ে কথা বলছিল। তাদের একাধিক আলোচনা হয়েছে। এরপর আমি এবং হাসনাত আব্দুল্লাহ আমাদের আহত ছাত্রদের স্বাস্থ্য ও শহীদদের ব্যাপারে কথা বলতে স্বাস্থ্য উপদেষ্টার কাছে যাই এবং আমরা যখন বাইরে ওই আনসার সদস্যদের দেখি তখন আমরা তাদের বিষয়ে কথা বলতে মাননীয় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার কাছে যাই। কিন্তু আমরা যখন তাদের একটি টিম সচিবালয়ের ভেতরে নিয়ে এসে সবার সঙ্গে কথা বলার ব্যবস্থা করা করি। দুপুরে একবার কথা হয়, সন্ধ্যায় একবার কথা হয়। তারা কনভিন্সড হয়। তাদের অধিকাংশ দাবি মেনে নেওয়া হয় এবং বাকি দাবিগুলোর জন্য যৌক্তিকতার ভিত্তিতে কিছু সময় দাবি করা হয়।”
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম এ সমন্বয়ক বলেন, “তারা কনভিন্সড হয়ে যখন বাইরে কথা বলতে যায়, তখন বাইরে থেকে সবাই নয়, কতিপয় আনসার সদস্য সেগুলো মেনে নেয় না। অর্থাৎ তাদের উদ্দেশ্য ছিল দাবি মেনে নেওয়া, না মেনে নেওয়া নয়, তাদের উদ্দেশ্য ছিল, সচিবালয়কে অবরুদ্ধ করে দেশকে অবরুদ্ধ করা।”
সারজিস আলম বলেন, “সচিবালয়ে আনসারদের হয়ে যিনি নেতৃত্ব দিয়েছেন, তিনি এক সময় স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা ছিলেন। সেই স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাসহ অসংখ্য ‘পেটুয়া বাহিনী’ আনসারের নাম করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ ঢাকার অন্যান্য শিক্ষার্থীদের ওপরে অতর্কিত রক্তাক্ত হামলা চালিয়েছে। আমরা জেনেছি, এর আগে যিনি আনসারের ডিজি ছিলেন। তিনি আওয়ামী লীগের মদদপুষ্ট পা-চাটা ডিজি ছিলেন। ওই ডিজিকে ছাত্রজনতার ওপর রক্তাক্ত হামলার জন্য অবশ্যই বিচারের আওতায় আনতে হবে।”
সারজিস আলম আরও বলেন, “আমাদের জায়গা থেকে স্পষ্ট করে বলতে চাই, ফ্যাসিবাদের দোসররা বিভিন্ন জায়গায় বসে ষড়যন্ত্রের চেষ্টা করছে। তাদের দ্রুত খুঁজে বের করে ওই জায়গা থেকে উৎপাটন করতে হবে।”
এর আগে রোববার আনসার সদস্যদের দ্বারা সচিবালয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম দুই সমন্বয়ক সারজিস আলম ও হাসান আব্দুল্লাহকে অবরুদ্ধ করা হলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ কয়েক হাজার শিক্ষার্থী সচিবালয় ঘেরাও করে। দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি ধাওয়ায় আনসার সদস্যসহ প্রায় ৪০ জন শিক্ষার্থী আহত হন।
-20240919071611.jpg)
