বদলি হতে পারবেন এমপিওভুক্ত বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের (স্কুল-কলেজ) শিক্ষকেরা। তবে ‘সম পদে পারস্পরিক’ ভিত্তিতে চাকরিজীবনে বদলি একবারই হতে পারবেন। বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) মাধ্যমে নিয়োগ পাওয়া শিক্ষকেরাই এ সুযোগ পাবেন।
এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের পারস্পরিক বদলি নীতিমালা, ২০২৪-এ এসব বিধান রয়েছে। এই নীতিমালা জারি করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ।
গত ৩১ জুলাই নীতিমালায় স্বাক্ষর করেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব সোলেমান খান।
তবে এই নীতিমালা অবিলম্বে সংশোধনের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ শিক্ষক ফোরাম।
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা (মাউশি) অধিদপ্তরের পরিচালক (মাধ্যমিক) অধ্যাপক সৈয়দ জাফর আলী গণমাধ্যমে বলেন, এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের দীর্ঘদিনের দাবি অনুযায়ী সরকার তাদের বদলির জন্য নীতিমালা করেছে। এখন থেকে শিক্ষকেরা সম পদে পারস্পরিক বদলি হতে পারবেন।
বর্তমানে দেশে এমপিওভুক্ত স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ২৯ হাজার ১৬৪। এগুলোর মধ্যে স্কুল-কলেজ ২০ হাজার ৪৩৭টি, বাকিগুলো কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও মাদ্রাসা। এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক-কর্মচারী আছেন সাড়ে ৫ লাখের মতো।
২০০৫ সাল থেকে শিক্ষক নিবন্ধন সনদ দিত এনটিআরসিএ। এর ভিত্তিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডি শিক্ষক নিয়োগ দিত।
তবে ২০১৫ সালের ৩০ ডিসেম্বর থেকে এনটিআরসিএ সনদ দেওয়ার পাশাপাশি শিক্ষক নিয়োগের সুপারিশও করছে। এ পর্যন্ত পাঁচটি গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ১ লাখ ৩৫ হাজারের বেশি শিক্ষক নিয়োগের চূড়ান্ত সুপারিশ করেছে এনটিআরসিএ।
বদলি নীতিমালায় রয়েছে, শুধু সম পদে কর্মরত দুজন শিক্ষকের লিখিত সম্মতিপত্রসহ পারস্পরিক বদলির আবেদন বিবেচনা করা হবে। তবে নিজ জেলা ছাড়া অন্য জেলায় বদলির আবেদন করা যাবে না। অবশ্য নারী আবেদনকারীরা স্বামীর জেলায় বদলির জন্য আবেদন করতে পারবেন। নিয়োগপ্রাপ্তির দুই বছর পূর্ণ হলে বদলির আবেদন করা যাবে। চাকরিজীবনে কেবল একবারই বদলির সুযোগ থাকবে। বদলি কর্তৃপক্ষ হিসেবে যাবতীয় প্রক্রিয়া সম্পন্ন করবেন মাউশির মহাপরিচালক।
নীতিমালায় রয়েছে, প্রতিবছরের ১৬ অক্টোবর থেকে ১৫ ডিসেম্বর অনলাইনে পারস্পরিক বদলির আবেদন নেওয়া হবে। বদলির পুরো প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে সফটওয়্যারের মাধ্যমে। একই সঙ্গে শিক্ষকের ইনডেক্সও অনলাইনে নতুন প্রতিষ্ঠানে স্থানান্তরিত হবে। অনলাইনে পাওয়া আবেদন ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে যাচাই-বাছাই করে নিষ্পত্তি করতে হবে। বদলি হওয়া শিক্ষকদের এমপিও ও অন্য সুবিধাদি এবং জ্যেষ্ঠতার ধারাবাহিকতা আগের অনুযায়ী বজায় থাকবে।
নীতিমালায় উল্লেখ করা হয়, বদলির আবেদন অধিকার হিসেবে দাবি করা যাবে না। বদলির আদেশ জারির ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান বদলি হওয়া শিক্ষকের অবমুক্তি নিশ্চিত করবেন। অবমুক্ত হওয়ার পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে শিক্ষককে নতুন কর্মস্থলে যোগ দিতে হবে।
তবে এই নীতিমালা অবিলম্বে সংশোধনের দাবি জানিয়েছে এনটিআরসিএর সুপারিশ করা শিক্ষকদের সংগঠন বাংলাদেশ শিক্ষক ফোরাম। ফোরামের আহ্বায়ক মো. সান্ত আলী আজকের পত্রিকাকে বলেন, এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের পারস্পরিক বদলির বিধান শিক্ষকদের কোনো উপকারেই আসবে না। এ নীতিমালা অবিলম্বে সংশোধন করে শূন্য পদের ভিত্তিতে বদলির ব্যবস্থা করতে হবে।