ছাত্রীকে যৌন নির্যাতন, যৌন হয়রানি ও ধর্ষণচেষ্টার প্রতিবাদে চতুর্থ দিনের মতো আন্দোলন করছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) রসায়ন বিভাগের সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) প্রশাসনিক ভবনের সামনে সকাল ১০টা থেকে চতুর্থ দিনের এই আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা।
আন্দোলনের প্রথম দিন থেকে শিক্ষার্থীরা ২টি দাবিতে অটল রয়েছেন। প্রথম দাবি, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিক্ষককে স্থায়ী বহিষ্কার করতে হবে। দ্বিতীয় দাবি, বিশ্ববিদ্যালয়কে বাদী হয়ে শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা করতে হবে। এছাড়া শিক্ষার্থীদের অভিযোগ অভিযুক্ত শিক্ষক এর আগেও অনেক শিক্ষার্থীদের সঙ্গে এ রকম ঘটনা ঘটিয়েছেন।
এর আগে সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি) শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনে উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার আশ্বাস দিয়ে বলেন, “আমরা তদন্ত কমিটি গঠন করে দিয়েছি। তদন্ত কমিটির সদস্যরা এটা নিয়ে কাজ করছে। এমনকি শুক্রবার ও শনিবার শহরে চারুকলায় বসে দিন-রাত মিটিং করেছে। আজকেও তারা রসায়ন বিভাগে গেছে। তবে তদন্তের বিষয়টি বলতে চাই না। আমরা চাই অপরাধীর সর্বোচ্চ শাস্তি হোক।”
তবে শিক্ষার্থীদের কাছে আগামী ৭ ও ৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নিপীড়ন অভিযোগ সেলের তদন্ত কমিটি সময় চাইলেও শিক্ষার্থীরা এই সময় বেধে দিতে নারাজ। তাদের দাবি শিক্ষককে খুব দ্রুতই স্থায়ী বহিষ্কার করতে হবে।
এ বিষয়ে রসায়ন বিভাগের ২০-২১ সেশনের শিক্ষার্থী জান্নাত নুর বলেন, “আমরা যতক্ষণ পর্যন্ত না ওই শিক্ষকের স্থায়ী বহিষ্কার দেখতে পাচ্ছি, ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চালিয়ে যাব। বৃহস্পতিবারের (৮ ফেব্রুয়ারি) মধ্যে কোনো দৃষ্টান্তমূলক পদক্ষেপ দেখতে না পেলে আমাদের আন্দোলন আরও কঠোর হবে। প্রয়োজনে সারা ক্যাম্পাসজুড়ে আন্দোলন করব।”
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন মেয়ে শিক্ষার্থী বলেন, “আমরা চাই যথাযথ বিচার হোক। আর তাকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হোক। কারণ আমাদের সিনিয়রের সঙ্গে যে ঘটনা ঘটেছে, সেটা আমাদের সঙ্গেও ঘটতে পারে।”
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. নুরুল আজিম সিকদার সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “একটা অভিযোগ উপাচার্যের দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেব। এটা হালকাভাবে নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই।”
এর আগে রসায়ন বিভাগের এক অধ্যাপকের বিরুদ্ধে গত ১ ফেব্রুয়ারি উপাচার্য বরাবর অভিযোগপত্র দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী।
অভিযোগে বলা হয়, থিসিস চলাকালীন সুপারভাইজার (অধ্যাপক) কর্তৃক যৌন হয়রানি ও নিপীড়নের শিকার হন তিনি। ল্যাবে একা কাজ করার সময় এবং কেমিকেল দেওয়ার বাহানায় নিজ কক্ষে ডেকে দরজা আটকে তাকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন ওই শিক্ষক।
তবে অভিযুক্ত অধ্যাপক অভিযোগটি সম্পূর্ণরূপে অস্বীকার করে মিথ্যা ও বানোয়াট বলে আখ্যা দিয়েছেন।