জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ২য় ক্যাম্পাসের কাজ সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তরসহ ৩ দফা দাবিতে প্রশাসনিক ভবনে তালা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) দুপুর ১২টা থেকে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করে সোয়া ১২টার দিকে প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নেন আন্দোলনকারীরা।
এর আগে সোমবার (৪ নভেম্বর) প্রায় আধ ঘণ্টা রাজধানীর তাঁতিবাজার মোড় অবরোধ করেন রাখেন শিক্ষার্থীরা। সেখান থেকে ক্যাম্পাসে এসে আন্দোলনকারীরা মঙ্গলবার আবারও তাঁতিবাজার মোড় অবরোধের ঘোষণা দেন। কিন্তু সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ইসলামি মহা সম্মেলন চলায় তারা তাদের কর্মসূচি পরিবর্তন করেন।
দুপুর ১২টায় আন্দোলনের মুখপাত্র তৌসিব মাহমুদ সোহান বলেন, “আজ ইসলামি মহাসম্মেলন চলায় এমনিতেই পুরো ঢাকা প্রায় অচল হয়ে পড়েছে। তাই আমরা আমাদের কর্মসূচি তাঁতিবাজার না গিয়ে ক্যাম্পাসেই প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান করব।”
এরপর শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ভবনের সামনে এসে ‘দ্বিতীয় ক্যাম্পাস আবাসন, কবে দিবা প্রশাসন?’, ‘প্রয়োজনে রক্ত নাও, তবুও মোদের হল দাও’, ‘প্রশাসনিক মূলা চাষ, আর্মি চাইলে সর্বনাশ’, ‘আর্মির হাতে দাও কাজ, যদি থাকে হায়া-লাজ’—এরকম বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন।
এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৫ ব্যাচের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মাসুদ রানা বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমাদের সামনে মুলা ঝুলিয়ে রেখেছে। আমরা মুলায় বিশ্বাস করি না। যদি কেউ মনে করে চক্রান্ত করে দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজে দুর্নীতি করবে তাহলে আমরা শিক্ষার্থীরা তা উৎখাত করব।”
এসময় শিবিরের অফিস সম্পাদক রিয়াজুল ইসলাম বলেন, “আমি প্রশাসনের কাছে দাবি জানাব, আপনারা আমাদের সাধারণ শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবিগুলো মেনে নেন।”
ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী সোহানুর রহমান বলেন, “আমাদের বিরক্ত করবেন না, আমাদের রাস্তা চেনাবেন না। চাটুকারিতা, পকেটে টাকা ঢোকানোর পায়তারা বন্ধ করুন। আমাদের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ দ্রুত সময়ে সেনাবাহিনীকে দিতে হবে। উপাচার্য গতকাল বলেছেন, আমাদের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে তিনি একমত। কিন্তু বিগত ভিসিরাও এসবই বলেছেন। জগন্নাথে আর কোনো মুলা চাষ চলবে না।”
শিক্ষার্থীদের তিন দফা দাবি হলো-
১. বিগত সরকারের আমলে নিয়োগপ্রাপ্ত প্রজেক্ট ডিরেক্টরকে আইনের আওতায় আনতে হবে এবং ৭ দিনের মধ্যে সেনাবাহিনীর দক্ষ অফিসারদের হাতে এই দ্বায়িত্ব অর্পণ করতে হবে।
২. শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে সুস্পষ্ট ঘোষণা আসতে হবে যে ২য় ক্যাম্পাসের কাজ সেনাবাহিনীর হাতে দেওয়া হয়েছে এবং হস্তান্তর প্রক্রিয়ার রূপরেখা স্পষ্ট করতে হবে।
৩. অবিলম্বে বাকি ১১ একর জমি অধিগ্রহণের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে এবং পুরাতন ক্যাম্পাস নিয়ে বিগত সরকারের আমলের সকল চুক্তি বাতিল করতে হবে।