দীর্ঘ ১৬ বছর পর প্রকাশ্যে আসতে শুরু করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিবির। শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী তার ফেসবুক টাইমলাইনে নিজেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিবিরের সভাপতি দাবি করেছেন। ওই শিক্ষার্থীর নাম সাদিক কায়েম।
ফেসবুক টাইম লাইনে সাদিক কায়েম লেখেন, “ফ্যাসিস্ট শোষণ শুধু ছাত্ররাজনীতি নয়, রাজনীতির সংজ্ঞাই পাল্টে দিয়েছে। ফ্যাসিবাদে কোনো রাজনীতি থাকে না। বিরাজনীতি ফ্যাসিবাদের ভাষা। ফ্যাসিবাদ ছাড়া সকল বাদ, ইজম ও রাজনীতি ফ্যাসিবাদে অনুপস্থিত থাকে। ফ্যাসিবাদে কোনো রাজনীতি নাই, শুধু ফ্যাসিবাদই আছে। টেন্ডারবাজি, গুম, খুন, ক্রসফায়ার, ফাঁসি, ধর্ষণ, রাহাজানি, দুর্নীতি এসব রাজনীতি না। এগুলি ফ্যাসিবাদ।”
আওয়ামী ফ্যাসিবাদের গত ১৬ বছরের ভয়ঙ্কর দিনগুলো কিংবা তারও পূর্বের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাগুলো রাজনীতির প্রতি তরুণ প্রজন্মের মধ্যে তীব্র ঘৃণা সৃষ্টি করেছিল উল্লেখ করে ওই শিক্ষার্থী বলেন, “চব্বিশের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান সমস্ত ভুল ভেঙে দিয়েছে। রাজনীতি সম্পর্কে তৈরি হয়েছে নতুন সচেতনতা। দেয়ালে দেয়ালে লেখা হচ্ছে, ‘এখানে রাজনৈতিক আলাপ জরুরি’।”
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে সাদিক কায়েম বলেন, “আমরা জানি, এই স্বাধীনতার জন্য শহীদ হয়েছে রাজনৈতিক দলসংশ্লিষ্ট এবং দলের আওতামুক্ত রাজনীতি সচেতন ছাত্র-জনতা। ফ্যাসিবাদের পতন ঘটানোর চেয়ে বড় রাজনীতি আর কোনো রাজনীতিই না। আমরা চাই সেই, রাজনীতির আদর্শে ছাত্ররাজনীতির ব্যাপক ইতিবাচক সংস্কার হবে। ভবিষ্যতের ছাত্ররাজনীতিতে মত-দ্বিমত হবে, যুক্তির পাথরে সবাই বিক্ষিপ্ত হবে। কিন্তু কোনো হকিস্টিক কিংবা স্ট্যাম্প থাকবে না। কোনো গেস্টরুম, গণরুম থাকবে না। চব্বিশের আকাঙ্ক্ষাকে বুকে নিয়ে এগিয়ে যাবে এই ছাত্ররাজনীতি। মধুতে ভিন্নমতের কেউ চা খেলে অপর পক্ষের কেউ তেড়ে আসবে না। একাডেমিক পরিবেশে কোনো বিঘ্ন ঘটবে না। বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকবে ছাত্রসংসদভিত্তিক ছাত্ররাজনীতি।”
গণতান্ত্রিক দেশে ভিন্নমতের প্রতি সম্মান থাকবে উল্লেখ করে এই ঢাবি শিক্ষার্থী বলেন, “কেউ যেন স্বৈরাচারী না হয়ে উঠতে পারে, সে ব্যাপারে রাখতে হবে সজাগ ও পূর্ণ দৃষ্টি। এই রাজনৈতিক সংস্কারে অবশ্যই চব্বিশের শহীদদের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন থাকতে হবে, তা না হলে ভেস্তে যাবে আমাদের এই স্বাধীনতা। আমরা চাই, ছাত্ররাজনীতির সংস্কার গবেষণা, পলিসি ডায়ালগের মধ্য দিয়ে তা বাস্তবায়িত হোক। এ লক্ষ্যে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানাচ্ছি।”
সাদিক কায়েম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৬-১৭ সেশনের শিক্ষার্থী ছিলেন। তার বাড়ি খাগড়াছড়ি।