কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের এক দশকপূর্তি উপলক্ষ্যে দক্ষিণ এশিয়ার সংস্কৃতি, ধর্ম ও প্রত্নতত্ত্ববিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলনের আয়োজন করেছে বিভাগটি। এই আয়োজনের প্রথম দিনে ৩৬টি গবেষণাপত্র নিয়ে সাতটি সেশন পরিচালনা করা হয়।
রোববার (২৬ মে) সকাল ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের হল রুমে এই অনুষ্ঠান শুরু হয়। যা শেষ হবে সোমবার (২৭ মে) কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের আশপাশের প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনসমূহ পরিদর্শন করার মাধ্যমে।
আন্তর্জাতিক সম্মেলনে প্রতিটি সেশনে গবেষকরা তাদের গবেষণাগ্রন্থ নিয়ে আলোচনা করেছেন।
আলোচকদের মাঝে আছেন ভারতের কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. সুদীপা রায় বন্দ্যোপাধ্যায়, ভারতের বিশ্বভারতী শান্তিনিকেতনের অধ্যাপক অনীল কুমার, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মো. মোজাম্মেল হক, অধ্যাপক ড. এ কে এম শাহনেওয়াজ ও ড. সাইদ মোহাম্মদ কামরুল আহসান, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষক মোহাম্মদ নিয়ামুল হুদা, রেজওয়ানা আফরিন রূম্পাসহ আরও কয়েকজন শিক্ষক ও কুমিল্লা অঞ্চলের কয়েকজন গবেষক।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব নাফরিজা শ্যামা। তিনি এই আয়োজন সম্পর্কে বলেন, “আর্কিওলজি পড়িনি, কিন্তু চাকরিসূত্রে এখন আর্কিওলজির অনেকখানি দেখি এবং সেখান থেকে আমার প্রীতি এবং ভালোবাসার তৈরি হয়েছে। আর্কিওলজি আসলে মাটির প্রতি টানের একটা পড়াশোনা, সেখানে আপনাদের শেকড়টা অনেক গভীর আমি জানি। আপনারা এত কষ্ট করছেন, এত গবেষণা করছেন এগুলোকে চ্যানেলাইজ করাটা আমার দায়িত্ব। আমাদের গবেষণা ও গবেষক দরকার। তবে হেলাফেলা গবেষণা আমরা নেই না। এটা সত্যি কথা সবাই গবেষক হয় না, সবাই গবেষণা করতেও পারে না। আমি আশা করছি, যারা ছাত্র আছেন আপনারা আপনাদের স্বমহিমায় স্ব-গবেষণার বিষয় নিয়ে আমাদের কাছে যোগাযোগ করবেন। আমরা চেষ্টা করব, আপনাদের এই জ্ঞানকে বিশ্বময় ছড়িয়ে দেওয়ার।”
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির বলেন, “কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন আমরা একটু টাফ সময় অতিবাহিত করছি। আজকে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় প্রাণ-প্রাচুর্যে ভরপুর একটা বিশ্ববিদ্যালয় থাকার কথা ছিল। কিন্তু আমাদের নিজেদের কিছু কারণে হয়তো আমরা সেটা উপহার দিতে পারছি না। ভারত থেকে যারা গবেষক আসছেন তারা হয়তো মনে করবে, বিশ্ববিদ্যালয়টা এরকম শিক্ষার্থীহীন বিশ্ববিদ্যালয়। আসলে তা না, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় প্রাণ প্রাচুর্যে ভরপুর একটা বিশ্ববিদ্যালয়।”
হুমায়ুন কবির আরও বলেন, “সারা পৃথিবীর পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে আর্কেওলজির গবেষণায় কিন্তু অনেক পরিবর্তন এসেছে। পূর্বে আমরা আর্কেওলজি বলতে বড় বড় সাইট বুঝতাম। কিন্তু এখন আর্কিওলজি ফোকাস করছে ইন্ডিভিজুয়ালি। হিস্ট্রি এবং আর্কিওলজি একত্রে জড়িত। একটা ছাড়া আরেকটা কোনোভাবে চলতে পারবে না।”