আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীর দেখা নেই। এতে মাথায় হাত পড়েছে পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (পাবিপ্রবি) ক্যাম্পাস সংলগ্ন দোকানিদের।
পাবিপ্রবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের কাছে বিভিন্ন অঙ্কের টাকা পাওনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন দোকানিরা। এই তালিকায় রয়েছে অনেক সাবেক নেতাকর্মীর নাম। সরকার পতনের পর ছাত্রলীগের নেতারা ক্যাম্পাস ছাড়া হওয়ার পর তাদের বাকি টাকা আদায় করা নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন তারা।
দোকানিরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে ছাত্রলীগের নেতারা বিভিন্ন খাবার দোকান, ভাতের হোটেল ও চায়ের দোকানে বাকি রেখে যাচ্ছিলেন। অনেক সময় আগের বাকি টাকা চাইলে নেতাকর্মীরা জোর করেও খেয়ে যেতেন। আবার এমনও হয়েছে যে কর্মীরা খেয়ে নেতার নাম করে চলে গেছেন। পরে টাকা চেয়ে পাওয়া যায়নি।
আলামিন সরকার নামের এক দোকান মালিক বলেন, “প্রতিদিন নানা অজুহাতে বাকি রেখে যাচ্ছিলেন ছাত্রলীগের নেতারা। বিশেষ করে তানভীর তুষারের কাছে পাব ১০ হাজার টাকা। নাইমুর রহমান ইমন বিকাশে ৩ হাজার ২০০ টাকা ধার নিয়ে সেটাও আর দেয়নি। সব সময় দেবে দেবে বলে আর দিত না। ভয় পেতাম তাই কারও কাছে নালিশ করিনি। গরীবের টাকা মেরে খেয়ে কী তারা সুখী হবে? তারা টাকা দিলে দোকানটা আরও সচল হতো। এখন তারা চলে যাওয়ায় আমাদের পাওনা টাকা কীভাবে আদায় করব বুঝতে পারছি না।”
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান গেটের সামনে আলামিন স্টোর থেকে ছাত্রলীগ নেতা নাইমুর রহমান ইমন ৩ হাজার ২০০, তানভীর তুষার ১০ হাজার, সাঈদ স্টোর থেকে ইমন ১৪ হাজার, মাসুদ ৪ হাজার ৬০০, হৃদয় ২ হাজার ৯২২, জিসান ৪ হাজার ৪২৭, নানার হোটেল থেকে মাসুদ ৪ হাজার ২০০, পিয়াস ৩ হাজার ৬০০, সৌরভ ৩ হাজার, আসিফ ১০ হাজার ৫০০, সাব্বির ১০ হাজার, লেলিন ৬ হাজার, আবির ৬ হাজার, রেন ৮০০, সাব্বির ১ হাজার, সাব্বির ৬ হাজার, হৃদয় ৫ হাজার, সিয়াম ৪ হাজার, শাহীন ২ হাজার ১০০, শামীম ৩ হাজার, সমাজি ৪ হাজার ৬০০, সোহাগ ১ হাজার, সোহান ১ হাজার ৬০০, রানা ১২ হাজার, জিহাদ স্টোর থেকে বাবু ৫০০, লেলিন ২ হাজার ৫০০, আলমগীর স্টোর থেকে আসিফ ৬০০, মাসুদ ১০০ ও শামীম ৬০০ সহ আরও কমপক্ষে ২০ হাজার টাকার বাকি নিয়েছেন বিভিন্ন স্তরের ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
অন্য এক দোকানি আবু সাঈদ বলেন, “বছরের পর বছর ছাত্রলীগের নেতারা এখানে খেয়ে টাকা দেয়নি। মাঝেমধ্যে দিত আবার মাঝেমধ্যে বাকি রাখত। দিন শেষে হিসাব করে দেখলাম বাকির পরিমাণই বেশি। এত টাকা বাকি আছে, আমরা এখন কী করব বুঝতে পারছি না। প্রায় সব নেতাকর্মীর কাছে থেকে টাকা পাব। তার মধ্যে নাইমুর রহমান ইমন ১৪ হাজার টাকা, মাসুদ রানা ৪ হাজার ৬০০ টাকা, হৃদয় ২ হাজার ৯০০ টাকা, জিসান ৪ হাজার ৪০০ টাকা বাকি রেখে চলে গেছে। এদের সঙ্গে যোগাযোগও করতে পারছি না।”
স্থানীয় দোকানিদের এই অবস্থার কারণে ব্যবসার অবস্থা সংকটাপন্ন হয়ে পড়েছে এবং তারা তাদের পাওনা টাকা ফেরত পেতে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন।