সন্ধ্যায় ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়ার পর ১০ ঘণ্টা পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ছাত্রলীগের সাবেক কমিটির গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক ও রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী নাবিল হায়দারের মৃত্যু হয়েছে। পরিবারের দাবি, তার সাধারণ মৃত্যু হয়েছে। অন্যদিকে ফেসবুক স্ট্যাটাস অনেকের মাঝেই ধোঁয়াশা সৃষ্টি করেছে।
শুক্রবার (৭ এপ্রিল) সকালে রাজধানীর একটি ভাড়া বাসা থেকে নাবিল হায়দারকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। তার গ্রামের বাড়ি ভোলা জেলায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের সলিমুল্লাহ মুসলিম (এসএম) হলে থাকতেন তিনি।
নাবিলের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মাকসুদুর রহমান বলেন, শুক্রবার সকাল ১০টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। শনিবার (৮ এপ্রিল) সকালে তার গ্রামের বাড়িতে জানাজা শেষে দাফন করা হবে।
মৃত্যু নাকি আত্মহত্যা এ প্রশ্নের জবাবে ঢাবি প্রক্টর বলেন, নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। তবে ফেসবুকে স্ট্যাটাসটি দেখে আত্মহত্যা বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এদিকে বন্ধুবান্ধবদের অনেকের দাবি, তিনি তার মৃত্যুর বিষয়টি আঁচ করতে পেরেছিলেন, তাই তিনি এমন স্ট্যাটাস দিয়েছেন।
নাবিলের বড় ভাই তওসিফ উদ্দিন তনয় শুক্রবার সকালে বলেন, “বৃহস্পতিবার নাবিল খিলগাঁওয়ে তার এক বন্ধুর বাসায় ছিল। ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেখে তার সঙ্গে যোগাযোগ করে ওই বাসায় গিয়ে দেখা করে আসি। তখন তাকে স্বাভাবিক অবস্থায় দেখতে পেয়েছিলাম। নাবিলের এমন স্ট্যাটাসে সন্দেহ হলে তাকে আমাদের বাসায় নিয়ে আসতে চাইলে সে অস্বীকৃতি জানায়।”
তওসিফ উদ্দিন আরও বলেন, “তখন বন্ধুরাও আমাকে আশ্বস্ত করেন যে, তারা আছেন সমস্যা নেই। পরে রাত ৮টার দিকে আমি ওই বাসা থেকে বের হয়ে আসি। তারপর ভোররাতের দিকে তার বন্ধু আমাকে ফোন করে জানায়, নাবিল অচেতন হয়ে পড়ে আছেন। পরে সেখান থেকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।”
এদিকে তার মৃত্যুতে বিশ্ববিদ্যালয়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাকে ঘিরে বিভিন্ন স্ট্যাটাস দিচ্ছেন অনেকে। এদিকে দীর্ঘদিনের রাজনীতিতে যুক্ত থাকা ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগও শোক বার্তা দিয়েছে।
এর আগে বৃহস্পতিবার (৬ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৬টা ৩ মিনিটে নিজের ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন নাবিল হায়দার। সেখানে তিনি লিখেছেন ‘বিদায়’। এ পোস্টের সঙ্গে ভাঙা ফ্রেমের একটি চশমার ছবি যুক্ত করেছেন তিনি। তার ১০ ঘণ্টা পর ভোর ৬টা ১৫মিনিটে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান নাবিল।