জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) থেকে উপাচার্য চেয়ে অবস্থান ও গণস্বাক্ষর কর্মসূচি পালন করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা।
বুধবার (২১ আগস্ট) সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার ও প্রশাসনিক ভবনের সামনে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।
অবস্থানকারীরা বলেন, “নির্দলীয় উপাচার্য দিতে হবে। এমন কাউকে আমরা গ্রহণ করব না যিনি কোনো দলের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করবেন। অনতিবিলম্বে আমাদের দাবি মানতে হবে নয়তো আমরা কঠোর কর্মসূচিতে যাব।”
ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী ফরহাদ হোসেন বলেন, “আমরা এখানে দাঁড়িয়েছি বৈষম্যবিরোধী জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় গড়তে। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের থেকে অনেক পিছিয়ে। আমাদের কোনো খেলার মাঠ নেই, আমাদের কোনো আবাসন ব্যবস্থা নেই। বিগত কোনো উপাচার্য আমাদের এই সমস্যাগুলো নিয়ে চিন্তা করেননি। কারণ তারা অতিথি হয়ে আসছেন আবার চলে যাবেন। যদি আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উপাচার্য দেওয়া হতো তাহলে নিজের শিক্ষার্থীদের সমস্যাগুলো অনুধাবন করতেন এবং ব্যবস্থা নিতেন। আমাদের দাবি একটি আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উপাচার্য চাই।”
লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী স্বর্ণা বলেন, “আমরা আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উপাচার্য চাই। কোনো দলীয় উপাচার্য চাই না। দলীয় কোনো এজেন্ডা বাস্তবায়ন করবে এমন কোনো উপাচার্য চাই না।”
অধ্যাপক মোস্তফা বলেন, “জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে সাতশ শিক্ষক আছেন যার মধ্যে ১৫০ এর উপরে অধ্যাপক। যারা যোগ্য আমরা কেন তাদের মধ্য থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পাই না। আমরা চাই আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভিসি হোক। আমরা অতিথি উপাচার্য চাই না। কারণ বাহিরের কোনো উপাচার্য এসে আমাদের শিক্ষার্থীদের আপন করতে পারেন না।”
অধ্যাপক মোস্তফা আরও বলেন, “প্রশাসন আমাদের মূলা স্বপ্ন দেখিয়ে রেখেছেন। আমাদের কোনো ল্যাব নাই, মাঠ নাই। আমাদের নতুন ক্যাম্পাসের স্বপ্ন দেখিয়ে বছরের পর বছর ভোগান্তিতে রেখেছেন। আমরা এই সংকীর্ণতা থেকে বের হতে চাই।”
অধ্যাপক আবু লায়েক বলেন, “জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের যে সংগ্রামের ইতিহাস এটি আজকের নয়। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের অন্যতম একটি প্রতিষ্ঠান কিন্তু আমরা সেই হিসেবে কোনো সুযোগ সুবিধা পাই না। আমাদের শুধু অবহেলিত হতে হয়। আমরা এই বৈষম্য থেকে বের হতে চাই।”
অধ্যাপক নাসির আহমেদ বলেন, “আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় নানা কারণে পিছিয়ে। তার মধ্যে অন্যতম আমাদের নিজের ক্যাম্পাসের উপাচার্য না থাকা। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ১৯ বছর আগে। আজকে পর্যন্ত এখানে একটি মাত্র ভবন হয়েছে। আমরা যদি এই সময়টাই অন্য একটি বিশ্ববিদ্যালয় দেখি, তাহলে দেখা যায় অর্ধশতাধিক ভবন হয়েছে, ল্যাব হয়েছে। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আবাসন ব্যবস্থা নেই। নতুন ক্যাম্পাস দেখিয়ে আমাদের ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। এর একটাই কারণ আমাদের নিজের বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য না থাকা।”