ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা দুই মামলায় এক বছর ধরে কারাগারে থাকা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী খাদিজাতুল কুবরার মুক্তি দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
রোববার (২৭ আগস্ট) দুপুর দেড়টায় শুরু হওয়া বিক্ষোভ মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের মুরাদ চত্বর থেকে শুরু হয়ে শহীদ মিনার, বটতলা থেকে ট্রান্সপোর্ট চত্বরে এসে শেষ হয়।
মিছিল পরবর্তী সমাবেশে নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের শিক্ষার্থী ফাইজা মেহজাবিন প্রিয়ন্তীর সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী প্রাপ্তি তাপসী দে। তিনি বলেন, “জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী খাদিজাতুল কুবরা যাকে শুধুমাত্র একটি ওয়েবিনার হোস্ট করার অপরাধে ৩৬৫ দিন ধরে জেলে থাকতে হচ্ছে। সে বাংলাদেশের ছাত্র রাজনীতির অবস্থাসহ রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট নিয়ে যৌক্তিক প্রশ্ন করেছেন যেগুলো সকল স্বাধীন নাগরিকের বলার অধিকার থাকা উচিত। অথচ এর জন্য তাকে অসুস্থ্য অবস্থায় জেল খাটতে হচ্ছে।”
মিছিলে অংশ নেওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী সুমাইয়া জাহান বলেন, “অল্প বয়স্ক একটা মেয়েকে এভাবে জামিন নাকচ করে কেনো রেখে দেওয়া হচ্ছে? রাষ্ট্রের প্রশ্নে এত ভয় কেন? এই ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট মূলত ক্ষমতাসীনদের জন্য। এই অ্যাক্টের মাধ্যমে সাধারণ জনগণকে নিপীড়ন ছাড়া আর কিছু করা হচ্ছে না। খাদিজার যে সকল ক্ষতি হয়েছে সেগুলো সরকারের সম্পূর্ণ পুষিয়ে দিতে হবে।”
প্রসঙ্গত, করোনা মহামারী চলাকালীন ২০২০ সালে খাদিজা একটি ফেসবুক ওয়েবিনার হোস্ট করেন। যেখানে একজন অতিথি বক্তা বিতর্কিত মন্তব্য করেছিলেন। সেই সময় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা ২টি মামলায় পুলিশ অভিযোগপত্র তৈরির পর গত বছরের ২৭ আগস্ট জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী খাদিজাকে গ্রেপ্তার করে। তার নামে ২০২০ সালে যখন ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয় তখন খাদিজার বয়স ছিল ১৭ বছর। কিন্তু তখন তাকে প্রাপ্তবয়স্ক দেখিয়ে মামলাটি করা হয়। ইতোমধ্যে ঢাকার একটি আদালতে খাদিজার জামিন আবেদন কয়েক দফায় নাকচ হয়েছে।
সর্বশেষ, গত ১০ জুলাই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা পৃথক দুটি মামলায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী খাদিজাতুল কুবরার জামিন আদেশ ৪ মাসের জন্য স্থগিত করেছেন সুপ্রিম কোর্ট।