• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

মুক্তিযোদ্ধা কোটা বহালের রায়ের প্রতিবাদে জাবিতে মানববন্ধন


জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি
প্রকাশিত: জুন ৭, ২০২৪, ০৯:০৪ পিএম
মুক্তিযোদ্ধা কোটা বহালের রায়ের প্রতিবাদে জাবিতে মানববন্ধন
মানববন্ধন। ছবি : প্রতিনিধি

২০১৮ সালে সরকারি প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির চাকরিতে বাতিল হওয়া মুক্তিযোদ্ধা কোটা পুনরায় বহাল করার প্রতিবাদে মানববন্ধন ও সাধারণ সভা করছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থীরা।

শুক্রবার (৭ জুন) বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার সংলগ্ন সড়কে এ মানববন্ধন করেন তারা। এসময় তারা স্বাধীনতার ৫৩ বছরেও মুক্তিযোদ্ধা কোটাসহ বহাল রাখার তীব্র সমালোচনা করেন।

মানববন্ধনে বক্তারা কোটা পুনর্বহালে আদালতের সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে বলেন, “কোটা প্রদান করা হয় পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে সামনে তোলার জন্য। কিন্তু মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ইতোমধ্যে অনেকেই সরকারি চাকরিতে বহাল রয়েছেন। এই কোটা পদ্ধতি মেধাবী শিক্ষার্থীদের দেশ ছাড়তে বাধ্য করছে এবং অযোগ্যদের হাতে প্রতিনিয়ত দেশকে তুলে দিচ্ছে। এই রায়ের মাধ্যমে তারা নতুনভাবে পাকিস্তান আমলের বৈষম্যপ্রথা পুনরায় চালু করার চেষ্টা করছে। আবারও মুক্তিযোদ্ধা কোটা নামে নতুন বৈষম্যের সূচনা করছে। এরপরও সরকারি চাকরিতে প্রায় মোট ৫৬ শতাংশ কোটা প্রদান রীতিমতো মেধাবীশূন্য দেশ গড়ার পাঁয়তারা ছাড়া কিছুই নয়।”

মানববন্ধনে আন্তর্জাতিক বিভাগের শিক্ষার্থী তৌহিদ মোহাম্মদ সিয়াম বলেন, “আমাদের পূর্বপুরুষরা ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে যে কোটা বৈষম্যের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছিল, আজকে সেই মুক্তিযোদ্ধাদের বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে হাইকোর্ট  কোটার পক্ষে রায় দিয়েছেন। মানববন্ধনে সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি  প্রমাণ করে এই কোটার রায়কে সবাই প্রত্যাখান করেছেন। ২০১৮ সালের আন্দোলনে যে কোটা বাতিল করা হয়েছে আদালতের এই রায়কেও আন্দোলনের মাধ্যমে একইভাবে প্রত্যাখ্যান করা হবে। যে রায়কে সাধারণ শিক্ষার্থীরা প্রত্যাখ্যান করেছে সেটা কখনো বাস্তবায়ন করতে দেওয়া হবে না।”

নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী সৈয়দা মেহের আফরোজ শাওলী বলেন, “কোটা হচ্ছে সমতা সৃষ্টির জন্য। কিন্তু সরকারি চাকরিতে ৫৬ শতাংশ কোটা মেধাবীদের অবমূল্যায়ন। এ কোটা ব্যবস্থা রাষ্ট্রের নাগরিকদের মধ্যে সমতার পরিবর্তে অসমতা সৃষ্টি করবে। তাই অবিলম্বে এই রায় পুনর্বিবেচনার মাধ্যমে এ কোটা  বিলুপ্ত করতে হবে।”

ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী শেখ হাফিজুর রহমান বলেন, “মুক্তিযোদ্ধা ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা কোটার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন এবং উভয়ের চাওয়া এক। আজকের আন্দোলনে মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানেরাও এই কোটার বিরুদ্ধে কথা বলছেন। দেশের যেকোনো অন্যায় রায়কে শিক্ষার্থীরা প্রত্যাখ্যান করেছেন, তেমনি কোটার অন্যায় রায়ের প্রতিবাদে আমরা শিক্ষার্থীরা মাঠে আন্দোলন চালিয়ে যাব।”

বুধবার (৫ জুন) সরকারি চাকরিতে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিল করে জারি করা পরিপত্র অবৈধ ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট। ফলে সরকারি চাকরিতে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা বহাল থাকবে। মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের করা এক রিটের প্রেক্ষিতে বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই রায় দেন।

Link copied!