• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ১ আশ্বিন ১৪৩১, ১৩ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

ঢাবিতে পুলিশ-শিক্ষার্থী সংঘর্ষ


সংবাদ প্রকাশ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: জুলাই ১৭, ২০২৪, ০৫:৫০ পিএম
ঢাবিতে পুলিশ-শিক্ষার্থী সংঘর্ষ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মলচত্বর এলাকায় পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ চলছে। বুধবার (১৭ জুলাই) বিকেল সাড়ে ৪টার পর এই সংঘর্ষ শুরু হয়। পুলিশের সাউন্ড গ্রেনেড ও কাঁদুনে গ্যাসের জবাবে ইট–পাটকেল নিক্ষেপ করছেন শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীরা মাস্টার দা সূর্যসেন হলের সামনে অবস্থান নিয়েছেন। আর বিপুল সংখ্যক পুলিশ উপাচার্যের বাসভবনের কাছে অবস্থান নিয়েছেন।

এর আগে দুপুরে পুলিশি বাধায় টিএসসিতে গায়েবানা জানাজা পড়তে ব্যর্থ হন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। পরে তারা উপাচার্যের বাসভবনের সামনে গায়েবানা জানাজা পড়েন। জানাজা শেষে ক্যাম্পাসে কফিন নিয়ে মিছিল শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। তাদের ওই মিছিলে একের পর এক সাউন্ড গ্রেনেড ও কাঁদুনে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে পুলিশ। এতে শিক্ষার্থীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যান। কিছুক্ষণের মধ্যেই তারা আবার সূর্যসেন হলের সামনে এসে জড়ো হন।

শিক্ষার্থীদের মিছিলে হামলা চালানোর বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) যুগ্ম কমিশনার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী বলেন, ভিসির বাসভবন ও আশপাশের নিরাপত্তার স্বার্থে ভিসির অনুমতিক্রমে মিছিল ছত্রভঙ্গ করা হয়েছে।

অপর দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, গায়েবানা জানাজা শেষে তারা শান্তিপূর্ণভাবে মিছিল শুরু করেন। সেখানে পুলিশ হামলা চালায়।

সম্প্রতি হাইকোর্টের রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এ দাবিতে তারা ধারাবাহিকভাবে বেশকিছু কর্মসূচি পালন করেন।

এর মধ্যে রোববার (১৪ জুলাই) সন্ধ্যায় গণভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোটা সংস্কার আন্দোলনের বিষয়ে কথা বলেন। এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে এত ক্ষোভ কেন? মুক্তিযোদ্ধাদের নাতি-পুতিরা না পেলে, তাহলে কি রাজাকারের নাতি-পুতিরা পাবে? আমার প্রশ্ন দেশবাসীর কাছে। রাজাকারের নাতি-পুতিরা চাকরি পাবে, মুক্তিযোদ্ধারা পাবে না?”

প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যে কোটা সংস্কার চেয়ে যারা আন্দোলন করছেন তাদের অবমাননা করা হয়েছে দাবি করে ওইদিন মধ্যরাত থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ শুরু করেন।  

এরপর সোমবার (১৫ জুলাই) প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য প্রত্যাহার ও কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন করতে থাকেন শিক্ষার্থীরা। এসময় পাল্টা কর্মসূচি দিয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায় ছাত্রলীগ। এতে শত শত শিক্ষার্থী আহত হয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। পরে হাসাপাতালে গিয়েও শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার অভিযোগ ওঠে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে। এঘটনায় উত্তাল হয়ে ওঠে দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়।

মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) ছাত্রলীগের হামলার প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ শুরু করেন। বিক্ষোভে অংশগ্রহণ করেন বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরাও।

এসময় ছাত্রলীগ ও পুলিশের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষে হলে ছয়জন নিহত হন। এর মধ্যে চট্টগ্রামে তিনজন, ঢাকায় দুজন ও রংপুরের একজন রয়েছেন। এ অবস্থায় দেশের সব সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে সরকার।

Link copied!