যথাযোগ্য মর্যাদা ও ভাবগম্ভীর পরিবেশে সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও সুশৃঙ্খলভাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপিত হয়েছে।
বুধবার (২১ ফেব্রুয়ারি) একুশের প্রথম প্রহরে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করতে আসা অতিথিদের স্বাগত জানান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল।
সর্বপ্রথম শহীদ বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী শহীদ বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকার প্রধান হিসেবে এ যাবৎ ২১ বার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের বেদিতে তার ২১ বারের ২১টি পুষ্পস্তবক অর্পণের দুর্লভ ছবি নিয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে প্রথমবারের মতো একটি প্রদর্শনী আয়োজন করা হয়। শেখ হাসিনা বুধবার একুশের প্রথম প্রহরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে এই প্রদর্শনী ঘুরে দেখেন।
এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের পক্ষে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল শহীদ বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
এসময় প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ, প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. সীতেশ চন্দ্র বাছার, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ, শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. নিজামুল হক ভুইয়া, সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. আব্দুস ছামাদ, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. জিনাত হুদা, প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. মাকসুদুর রহমান, সিনেট ও সিন্ডিকেট সদস্য, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও শিক্ষার্থীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি, বিভিন্ন হলের প্রভোস্টের নেতৃত্বে ছাত্র- ছাত্রীবৃন্দ, অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন, তৃতীয় শ্রেণি কর্মচারী সমিতি, কারিগরি কর্মচারী সমিতি, চতুর্থ শ্রেণি কর্মচারী ইউনিয়ন, বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন, প্রতিষ্ঠান ও সর্বস্তরের জনগণ একে একে শহীদ বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মসূচির অংশ হিসেবে ২১ ফেব্রুয়ারি সকাল সাড়ে ৬টায় উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামালের নেতৃত্বে প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. সীতেশ চন্দ্র বাছার, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ ও শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. নিজামুল হক ভূইয়াসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের একটি প্রভাতফেরি স্মৃতি চিরন্তন চত্বর থেকে শুরু হয়। প্রভাতফেরি সহকারে তারা আজিমপুর কবরস্থানে গমন করেন এবং ভাষা শহীদদের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এরপর ভাষা শহীদদের রুহের মাগফেরাত কামনা করে ফাতেহা পাঠ করা হয়। পরে
প্রভাতফেরি সহকারে তারা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গমন করেন এবং পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। প্রভাতফেরিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করে ভাষা সংগীত পরিবেশন করেন।
এছাড়া, বাদ যোহর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মসজিদুল জামিয়াসহ সকল হলের মসজিদ এবং বিশ্ববিদ্যালয় আবাসিক এলাকার মসজিদে ভাষা শহীদদের রুহের মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। অন্যান্য ধর্মীয় উপাসনালয়েও শহীদদের আত্মার শান্তি কামনা করে বিশেষ প্রার্থনা করা হয়।
এদিকে ঢাবির ব্যবস্থাপনায় বুধবার মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ভাবগম্ভীর পরিবেশে যথাযোগ্য মর্যাদার সঙ্গে সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও সুশৃঙ্খলভাবে উদযাপন জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল সর্বস্তরের জনসাধারণকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় একুশে উদযাপন কেন্দ্রীয় সমন্বয় কমিটি ও বিভিন্ন উপ-কমিটি কর্তৃক গৃহীত সকল কর্মসূচির সফল বাস্তবায়নে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সকল সদস্য, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ ও র্যাবসহ অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য, বাংলাদেশ সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়সমূহ, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংগঠন এবং গণমাধ্যমসহ সকলের সর্বাত্মক সহযোগিতার জন্য উপাচার্য কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেছেন।