স্বায়ত্তশাসিত ও রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানের জন্য ঘোষণা করা সর্বজনীন পেনশনের ‘প্রত্যয়’ স্কিম কার্যকর হচ্ছে ২০২৫ সালের ১ জুলাই থেকে। রোববার (১৪ জুলাই) জাতীয় পেনশন স্কিম কর্তৃপক্ষের জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এরপরও আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা।
রোববার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে প্রায় সাত ঘণ্টার বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
প্রথমে বিকেল ৪টায় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক ক্লাবে সভা বসে। সেখানে সবার জায়গা না হওয়ায় পরে টিএসসির অডিটোরিয়ামে বসেন শিক্ষকেরা। রাত পৌনে ১১টা পর্যন্ত চলে এই বৈঠক। পরে শিক্ষক নেতারা জানান, সভায় ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে লাগাতার কর্মসূচি চালিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। একই সঙ্গে প্রজ্ঞাপন পর্যবেক্ষণ করছে শিক্ষক সংগঠনগুলো। যা নিয়ে আগামী চার দিন পর শিক্ষক নেতারা বৈঠক করে নতুন সিদ্ধান্ত দেবেন।
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের মহাসচিব অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ নিজামুল হক ভূইয়া সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাদের সর্বাত্মক আন্দোলন চলবে। চার দিন পর আমরা সবগুলো বিশ্ববিদ্যালয় ফেডারেশনে আবার সভা করব। সেখানে যদি আবার কোনো নতুন সিদ্ধান্ত হয় তখন তা আপনাদের জানানো হবে। সর্বজনীন পেনশন স্কিম নিয়ে নতুন যে সিদ্ধান্ত এসেছে তা নিয়েও আমরা পর্যালোচনা করব।’
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়সহ সকল স্ব-শাসিত, স্বায়ত্তশাসিত, রাষ্ট্রায়ত্ত ও তার অঙ্গসংগঠনের প্রতিষ্ঠানসমূহের কর্মকর্তা–কর্মচারী হিসেবে যারা ২০২৫ সালের ১ জুলাই বা তার পরে চাকরিতে যোগ দেবেন তারা বাধ্যতামূলকভাবে সর্বজনীন পেনশন স্কিমের আওতায় আসবেন।
এরআগে, গত ১৩ জুলাই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে বৈঠক করেন আন্দোলনরত শিক্ষকেরা। বৈঠক শেষে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় অধ্যাপক ড. নিজামুল হক ভূঁইয়া বলেছেন, আলোচনা ফলপ্রসূ হয়েছে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ ১৩ জন শিক্ষক নেতা এসেছিলেন। তাঁদের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে একটা বিষয়ে ভুল–বোঝাবুঝি মিটেছে। অচিরেই সমস্যার সমাধান হবে।
শিক্ষকদের কর্মবিরতি কর্মসূচি প্রত্যাহার করার অনুরোধ করেছেন জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, তারা সাংগঠনিকভাবে ফেডারেশনের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন। তবে শিক্ষকদের সব দাবি চট করে মানা যাবে না, সরকারেরও যুক্তি আছে।
‘প্রত্যয়’ বাতিলের দাবিতে গত ১ জুলাই থেকে ৩৯টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা কর্মবিরতি পালন করছেন।