• ঢাকা
  • রবিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১, ৩ রবিউল আউয়াল ১৪৪৫

‘২৫ মার্চের কালরাত দেখিনি, ১৬ জুলাইয়ের কালরাত দেখেছি’


জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি
প্রকাশিত: জুলাই ১৬, ২০২৪, ০৮:২৯ এএম
‘২৫ মার্চের কালরাত দেখিনি, ১৬ জুলাইয়ের কালরাত দেখেছি’
রাতে এভাবে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করা হয়। ছবি : প্রতিনিধি

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) কোটা সংস্কার চেয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর ২ দফা হামলা চালিয়েছে ছাত্রলীগ। এছাড়াও অস্ত্রধারী বহিরাগতদের নিয়ে আসা, এবং এক পর্যায়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের পাল্টা ধাওয়া ও পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে পুরো ক্যাম্পাস রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। শিক্ষার্থীরা বলছেন, “আমরা ২৫ মার্চের কালরাত দেখিনি, ১৬ জুলাইয়ের কালরাত দেখেছি।”

সোমবার (১৬ জুলাই) রাত ১২টার দিকে ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের হামলার ঘটনা ঘটে। ছাত্রলীগের দেড় শতাধিক নেতাকর্মী বহিরাগতদের সঙ্গে নিয়ে হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ করেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলেও তা আরও ঘোলাটে আকার ধারণ করে। ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা ধাওয়া দিয়ে ছাত্রলীগকে পিছু হটালেও এসময় পুলিশের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ বেঁধে যায়। পরে পুলিশের ছোড়া টিয়ারশেল ও গুলিতে কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হন।

অভিযোগ আছে, শুধু সাধারণ শিক্ষার্থীই নয়, সাংবাদিকদের ওপরও পেট্রোল বোমা ছুড়ে মেরেছে বহিরাগতরা। আতঙ্কে তারা পুকুরে বসে থাকেন। কেউ কেউ জঙ্গলের ভেতরে লুকিয়ে ছিলেন।

পুলিশের ছোড়া কাঁদানে গ্যাস ও গুলিতে বণিক বার্তার মেহেদী মামুন, দৈনিক বাংলার আব্দুর রহমান খান সার্জিল ও বাংলাদেশ টুডের জোবায়ের আহমেদ আহত হন। পরে ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা কয়েকজন পুলিশ সদস্যকেও বেধড়ক মারধর করে। এরপর পুলিশ জলকামান নিয়ে আসে। পুলিশ অন্তত অর্ধশত রাউন্ড টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট ছুড়েছে। এতে শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।

এর আগে সোমবার সন্ধ্যার পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে থেকে শিক্ষার্থীরা মিছিল বের করেন। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা এলাকায় তাদের ওপর হামলা হয়। এতে অর্ধশতাধিক ছাত্রছাত্রী আহত হন। রাত সাড়ে আটটার দিকে এ ঘটনার বিচার চেয়ে ও অবৈধ শিক্ষার্থীদের হল থেকে বিতাড়িত করতে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে গিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।

রাত সোয়া ১২টার দিকে ঘটনাস্থলে পুলিশ আসলে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা উপাচার্যের বাসভবনের প্রধান ফটক ছেড়ে রাস্তায় চলে যান। পরে রাত পৌনে দুইটার দিকে ফটক ভেঙে বাসভবনের ভেতরে প্রবেশ করেন তারা। এ সময় বেশ কয়েকটি পেট্রলবোমা ছুড়ে বাসভবনের প্রধান ফটকের লাইটসহ বিভিন্ন লাইট ভাঙচুর করেন তারা। এরপর আন্দোলনকারীদের মারধর করেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এ সময় উপাচার্য বাসভবনেই ছিলেন বলে জানা গেছে।

সেসময় এক ফেসবুক পোস্টে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক মোতাহের হোসেন লিখেছেন, “ক্যাম্পাসে বহিরাগতরা ঢুকেছে। ছাত্রছাত্রীরা ভয়ে ভিসি মহোদয়ের বাংলোতে আশ্রয় নিয়েছে। প্রশাসনকে নিরাপত্তা বিধানের অনুরোধ করছি। যা কিছুই হোক, শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা বিধান করতে হবে।”

এ বিষয়ে রাতে ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন) আবদুল্লাহ হিল কাফী গণমাধ্যমকে বলেন, “আমরা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছি।”

Link copied!