• ঢাকা
  • রবিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ইবিতে বসন্তকে রাঙিয়েছে ‘রক্তকাঞ্চন’


জুয়েল রানা, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়
প্রকাশিত: মার্চ ২২, ২০২৩, ০৮:২১ এএম
ইবিতে বসন্তকে রাঙিয়েছে ‘রক্তকাঞ্চন’

ঋতুরাজ বসন্তের ছোঁয়ায় সেজেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি)। নানান বাহারের ফুলের রং ক্যাম্পাসের সৌন্দর্যকে বহুগুণ বাড়িয়েছে। নাগবল্লভী, রক্তগোলাপ, গাঁদা, পলাশ, স্যালভিয়া, চ্যামিলি, কসমস, বোতল ব্রাশসহ নানান ফুল রং ছড়াচ্ছে তার আপন রঙে। তেমনি ক্যাম্পাসে বেগুনি রঙের চাদর বিছিয়ে সৌন্দর্য বিলাচ্ছে বিদেশি এক ফুল ‘রক্তকাঞ্চন’।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু হলসংলগ্ন পকেট গেট দিয়ে ঢুকে জিয়া মোড় যেতেই চোখে পড়বে শেখ রাসেল হলের প্রাচীরঘেঁষা তিনটি ‘রক্তকাঞ্চন’ ফুল গাছ। এই গাছের পাতাসমূহ  শীতের শুষ্কতায় ঝরে যায়। বসন্তের হাওয়ায় গাছটি সেজে ওঠে বেগুনি রঙের ফুলে। পাতাহীন বেগুনি ফুল অনন্য রূপ দিয়েছে গাছগুলোকে।

রাস্তা দিয়ে চলার সময় পথচারীরা মুগ্ধ দৃষ্টিতে চেয়ে থাকেন ফুল গাছগুলোর দিকে। কেউ আবার পকেট থেকে ফোন বের করে করেন ক্যামেরাবন্দী। এ ফুলের মৃদু সুবাস মুগ্ধ করে ফুলপ্রেমী শিক্ষার্থীদের। পাতাহীন ফুলের রক্তিম বাহার তীক্ষ্ণ রোদে আরও বেড়ে যায়। বেলা গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে ঝাপসা আকাশে ফুলটির রঙে কিছুটা আকাশি রং ফিরে আসে।

এ ফুলের বেশ কয়েকটি প্রজাতি রয়েছে—দেবকাঞ্চন, শ্বেতকাঞ্চন ও রক্তকাঞ্চন। কিন্তু রক্তকাঞ্চন ফুলের রং ও বাহার একটু বেশিই আকৃষ্ট করে সবাইকে। রক্তকাঞ্চনের বৈজ্ঞানিক নাম- Phanera variegate, ইংরেজি নাম- orchid tree, mountain ebony, camel‍‍`s foot tree and kachnar। উৎপত্তিস্থলের দিক থেকে এ ফুলটির অবস্থান ভারতের পশ্চিমবঙ্গে।

এ ফুলটির মোট পাঁচটি পাপড়ি রয়েছে। পাপড়িগুলোর গোড়ার দিক হালকা বেগুনি হলেও ওপরটা গাঢ় রঙের। পাপড়িগুলো দেখলে মনে হয় কোনো কারুশিল্পীর হাতে আঁকা। ফুলে রয়েছে প্রায় চার থেকে পাঁচটি স্তবক। বসন্তের শুরুতে পাতা ঝরে গেলেও অন্য সময় সবুজ পাতায় গাছটি আবৃত থাকে। পাতা অনেকটাই গোলাকৃতির দেবকাঞ্চন ফুল গাছের মতো, আগার দিকে দুই ভাগে বিভক্ত। ফুলের কুসিগুলো রজনীগন্ধার মতো চোখা ও ছুঁচাল। এ ফুলের শিমের মতো ফল হয়ে থাকে তা থেকে বীজ হয়, যা ফুলটির বংশবিস্তারে সহায়ক হয়। এ ছাড়া এ ফুলের কলম করেও বংশবৃদ্ধি করা সম্ভব।

বিশ্ববিদ্যালয় জিওগ্রাফি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থী মারিয়া শিফা বলেন, “হোস্টেল থেকে ক্যাম্পাসে যাওয়ার পথে রক্তকাঞ্চনের ঘ্রাণ ও রক্তিম সৌন্দর্যে মুগ্ধ হই। পথে যেতে বা আসতে ফুলটির দিকে তাকালে সারা দিনের ক্লাস শেষে ক্লান্তি মনটা সতেজ হয়ে ওঠে। এ রকম অনিন্দ্য সুন্দর ফুল ক্যাম্পাসে থাকলে ক্যাম্পাসের সৌন্দর্য অনেকখানি বেড়ে যাবে।”

এ বিষয়ে শেখ রাসেল হলের শাখা কর্মকর্তা সজল কুমার অধিকারী বলেন, “রক্তকাঞ্চনের সুগন্ধি ও ফুলটা খুব সুন্দর হওয়ায় বেশ কয়েকটি গাছ লাগিয়েছিলাম। তার মধ্যে তিনটি গাছ হয়েছে। তিনটি গাছ এখন সুন্দর সুন্দর ফুলে ফরে ওঠে বসন্তের সময়। ফুলগুলো দেখলে মন জুড়িয়ে যায়। এমনকি ফুল গাছ লাগানোর ইচ্ছার সার্থকতা অনুভব করি ।”

Link copied!