গণঅভ্যুত্থানের মুখে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে শেখ হাসিনার দেশত্যাগের ছয় মাস পূর্তিতে বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) ধানমন্ডি ৩২ নম্বরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে, তার রেশ পড়েছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়েও।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গতকাল রাতে চারটি আবাসিক হলের নামফলক ভেঙে ফেলে। এর মধ্যে একটি ছিল ছাত্রী হল, যেটিতে একপর্যায়ে সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটে। যে হলগুলোর নাম ফলক মুছে দেয়া হয়েছে, সেগুলোর তিনটি-ই মুজিব পরিবারের সদস্যদের নামে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীব বৃহস্পতিবার ৬ ফেব্রুয়ারি সকালে বলেন, কাল রাতে মেয়েদের একটি হলে কিছু অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে। বাকিগুলোতে সংঘর্ষ হয়নি। সেগুলোর নাম নিয়ে ছাত্রদের আপত্তি ছিল। কাল দেশজুড়ে যা ছিল, সেটিরই একটি বহিঃপ্রকাশ আর কি।
তিনি বলেন, কোন মাত্রায় অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে, সে বিষয়ে আমরা খোঁজ নিচ্ছি।
নামফলক পরিবর্তন কারা করেছে- জানতে চাইলে তিনি বলেন, সেগুলো আমাদের দেখতে হবে আর কি। রিপোর্টের প্রেক্ষিতে আমরা বের করবো যে কার কী ভূমিকা আছে। এখনও বলতে পারছি না।
তবে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস সাংবাদিক মীর কাদির বলেন, আন্দোলনে সাধারণ শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি রাবি শাখা ছাত্রশিবিরের বেশ কিছু নেতাকর্মীকে দেখা গেছে।
তিনি জানান, সন্ধ্যায় ফেসবুকে নামফলক ভাঙার ডাক দেন রাবির অন্যতম এক সাবেক সমন্বয়ক। পরে রাত নয়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ শামসুজ্জোহা চত্বরে জড়ো হয় শিক্ষার্থীরা। এরপর সেখান থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে প্রথমে নামফলক ভেঙে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের নতুন নাম ‘বিজয়-২৪’ লিখে দেয়।
এরপর নির্মাণাধীন শহীদ কামারুজ্জামান হলের নাম মুছে শহীদ আলী রায়হান হল, শেখ হাসিনা হলের নাম মুছে ফাতিমা আল ফিহরিয়া হল এবং বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা হলের নাম নবাব ফয়জুন্নেসা চৌধুরানী হল নাম রাখেন রাখেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা।
এছাড়া, শেখ রাসেল মডেল স্কুলের নামফলক পরিবর্তন করে রিয়া গোপ মডেল স্কুল রাখা হয়।
কিন্তু শেখ ফজিলাতুন্নেসা আবাসিক হলের নাম পরিবর্তন করতে গেলে হলের নারী শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ করেন বলে জানান মীর কাদির।
মেয়েদের হল, ফজিলাতুন্নেচ্ছা হলে যখন ভাঙতে যায়, তখন মেয়েরা জানেও না যে কী হচ্ছে। তখন প্রথমে মেয়েরা বাধা দেয় এবং তারপর মেয়েদের সাথে ইট-পাটকেল ছোড়াছুড়ি হয়। শেষ পর্যন্ত মেয়েরা ওই ব্যানার ছিঁড়ে পুড়িয়ে ফেলে।
তিনি বলেন, ওরা যখন কালকে নামফলক ভাঙে, ভাঙার পর প্রত্যেকটা ফলকের সামনে ব্যানার টাঙিয়ে দেয় এবং সেই ব্যানার ওরা আগে থেকে বানিয়ে এনেছে।