রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক এম আবদুস সোবহানের আমলে নিয়োগ সংক্রান্ত অনিয়মের অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব প্রকার নিয়োগে স্থগিতাদেশ জারি করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
এই নিষেধাজ্ঞার প্রায় তিন বছর পর চলতি বছরের ২৫ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম জোরদার করার স্বার্থে সব ধরনের নিয়োগের স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
নিষেধাজ্ঞার আদেশ প্রত্যাহারের তিন মাস পর শিক্ষা মন্ত্রণালয় এক চিঠিতে জানিয়েছে, নিয়োগ অনিয়মের বিষয়ে হাইকোর্টে এখনো একটি রিট পিটিশন মামলা চলমান। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ স্থগিতাদেশ প্রত্যাহারের চিঠিতে বিচারাধীন রিট পিটিশনের সেই তথ্য গোপন করেছে। কেন তথ্য গোপন করা হলো তার ব্যাখ্যা চেয়েছে মন্ত্রণালয়।
বৃহস্পতিবার (২৬ অক্টোবর) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মোছা. রোখছানা বেগম স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এই ব্যাখ্যা চাওয়া হয়। সোমবার (৩০ অক্টোবর) চিঠিটির একটি কপি এই প্রতিবেদকের হাতে আসে।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০২০ সালের ১০ ডিসেম্বর তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহানের সময় নিয়োগ সংক্রান্ত অনিয়মের অভিযোগে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়োগ স্থগিতাদেশ জারি করা হয়। পরে ২০২২ সালের ১২ অক্টোবর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের আবেদনের প্রেক্ষিতে উক্ত স্থগিতাদেশ ২০২৩ সালের ২৫ জুলাই প্রত্যাহার করা হয়।
পরবর্তীতে জানা যায়, উক্ত নিয়োগ অনিয়মের বিষয়ে মহামান্য হাইকোর্ট ডিভিশনে ৭১২৩ /২১নং রিট পিটিশন মামলা চলমান আছে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ প্রেরিত আবেদন পত্রে উক্ত বিচারাধীন রিট পিটিশনের তথ্য গোপন করেছে মর্মে প্রতীয়মান হয়। এমতাবস্থায়, বর্ণিত ৭১২৩/২১ নং রিট পিটিশনের তথ্য গোপন করে কেন নিয়োগ স্থগিতাদেশ প্রত্যাহারের আবেদন করা হয়েছিল তার ব্যাখ্যা জরুরি ভিত্তিতে প্রেরণের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।
এদিকে, গত ২৬ অক্টোবর আরও একটি চিঠিতে ৭১২৩/২১নং রিট পিটিশন নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত জারি করা প্রত্যাহার আদেশ স্থগিত করা হয় এবং উক্ত রিট পিটিশনটি নিষ্পত্তির যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য নির্দেশনা প্রদান করা হয়।
এর আগে রাবির শিক্ষক নিয়োগ নীতিমালা-২০২২ এবং প্রকাশিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি বিশেষ শর্ত (প্রথম শ্রেণিতে প্রথম থেকে সপ্তম হতে হবে) বাংলাদেশের সংবিধান এবং বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) নির্দেশিকা অনুসরণ করা হয়নি মর্মে ফলিত গণিত বিভাগে প্রাক্তন শিক্ষার্থী মো. আব্দুল আওয়াল হাইকোর্টে একটি রিট (১২৮৯৭/২০২৩) আবেদন করেন। শুনানি শেষে শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা-২০২২ এবং প্রকাশিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি সংবিধান ও ইউজিসির নীতিমালার সঙ্গে সাংঘর্ষিক হওয়ায় হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ দুই মাসের জন্য ফলিত গণিত বিভাগের নিয়োগ স্থগিতের আদেশ দেন।
মামলার তথ্য গোপন রাখার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক আবদুস সালাম বলেন, “আমরা ব্যাখ্যা পাঠিয়েছি। তথ্যগুলো যথাযথভাবে পাঠিয়েছিলাম। একটু ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে; বা হয়তো কোনো ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার নজরে আসেনি বিষয়টি।”