সাংবাদিক পরিচয়ে গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বশেমুরবিপ্রবি) ক্যাফেটেরিয়া বন্ধের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে দুই শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে। তারা হলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক সমিতির একাংশের সভাপতি মো. আশরাফুল আলম ও আরেকজন শেখ রাসেল হলের ক্যান্টিন পরিচালক তুহিন শান্ত।
সোমবার (১১ সেপ্টেম্বর) ক্যাফেটেরিয়া পরিচালনার দায়িত্বে থাকা খান ট্রেডার্সের ব্যবস্থাপক মো. আল আমিন খান উপাচার্য বরাবর এক অভিযোগপত্রে এই অভিযোগ আনেন।
অভিযোগে আল আমিন বলেন, “আমরা বিগত দিনগুলো খুব সুনামের সঙ্গে ক্যাফেটেরিয়ায় স্বাস্থ্যসম্মত খাবার পরিবেশন ও স্বল্প মূল্যে সেবা নিয়ে আসছি। এতে শিক্ষকগণ ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা অনেক সন্তুষ্ট। কিন্তু শেখ রাসেল হল ক্যান্টিনের পরিচালকগণ (তুহিন এবং আশরাফুল) আমাদের সুনাম সহ্য করতে না পেরে ক্যাফেটেরিয়া নিয়ে নানা রকম গুজব প্রচার করছেন। যেন ক্যাফেটেরিয়া বন্ধ হয়ে যায়। এছাড়াও তারা বিভিন্নভাবে ষড়যন্ত্র করতে থাকে। কিন্তু কোনোভাবে সফল না হয়ে আমাদের প্রস্তাব দেয় ক্যাফেটেরিয়া বন্ধ করে দেন, না হয় আমাদের দিয়ে দেন।”
আল আমিন আরও বলেন, “আমরা আন্দোলনের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ক্যাফেটেরিয়ার নামে ভর্তুকি টাকা আদায় করব। এছাড়াও তারা হুমকি দেয় আমরা সাংবাদিক, আমাদের সংগঠন আছে, আমরা চাইলে সব পারি। কিন্তু তাদের কথায় আমরা সাড়া না দিলে তারা ক্যাফেটেরিয়ার বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ও বশেমুরবিপ্রবি সাংবাদিক সমিতির নামে তাদের পেজে আইসিটি আইনের অপব্যবহার করে নানা রকম গুজব ও অপপ্রচার এবং ক্যাফেটেরিয়া বন্ধ হয়ে গেছে বলে মিথ্যা প্রচারণা চালাচ্ছে। এতে ক্যাফেটেরিয়ার সুনাম নষ্ট হচ্ছে এবং বিক্রয় কমে গেছে। ফলে আমাদের আর্থিক অনেক ক্ষতি হয়েছে।”
ক্যাফেটেরিয়া প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে ক্যাফেটেরিয়া না থাকলেও শিক্ষার্থীদের দাবি ও একাধিক সংবাদ প্রকাশের প্রেক্ষিতে এই প্রতিষ্ঠানটি চালু হয়। পরে গত এপ্রিল মাস থেকে খান ট্রেডার্স নামের ওই প্রতিষ্ঠান নিরবচ্ছিন্নভাবে তাদের সেবা প্রদান করে আসছিল। তবে সম্প্রতি আশরাফুল ও তুহিন শেখ রাসেল হলের ক্যান্টিনের পাশাপাশি ওই ক্যাফেটেরিয়ার দায়িত্ব নিতে চায়। এ জন্য তারা চলমান ক্যাফেটেরিয়াকে বন্ধ ও পালিয়ে গেছে বলে একাধিক মিথ্যা প্রচারণা বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের মাধ্যমে তুলে ধরে।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী খান ট্রেডার্সের ব্যবস্থাপক মো. আল আমিন খান বলেন, “আমাকে ক্যাফেটেরিয়ায় এসে ওই দুইজন চলে যাওয়ার জন্য বারবার হুমকি দিয়েছেন। এমনকি সাংবাদিক পরিচয়ে আমাকে তারা ক্যাফেটেরিয়া বন্ধ করে চলে যেতে বলেন। এতে আমি বিচলিত হয়ে এই অভিযোগ আনতে বাধ্য হই।”
এ বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষার্থী মো. আশরাফুল আলম ও তুহিন শান্ত বলেন, “এসব ষড়যন্ত্র, বানোয়াট ও মিথ্যা। এসবের সঙ্গে আমাদের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।”
ক্যাফেটেরিয়া প্রশাসক ড. মো. বশির উদ্দিন বলেন, “এই ক্যাফেটেরিয়া ভালোভাবে চললেও ওই দুই শিক্ষার্থী এর দায়িত্ব নেওয়ার জন্য ষড়যন্ত্র করে নানা অপপ্রচার চালাচ্ছে। এছাড়াও তাদের মধ্যে আশরাফুল আমার নামেও মিথ্যা প্রচারণা ও ব্যাঙ্গাত্মক কথা প্রকাশ করেছে। বিষয়টি আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।”
এ বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. একিউএম মাহবুব বলেন, “সব বিষয়ে জেনেছি ও অভিযোগ পত্র পেয়েছি। এ বিষয়ে পরবর্তীতে আমরা তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করব।”