• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর, ২০২৪, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

চবিতে মোহনীয় মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে জারুল ফুল


চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি
প্রকাশিত: মে ১২, ২০২৪, ০১:৩৭ পিএম
চবিতে মোহনীয় মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে জারুল ফুল
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে জারুল গাছ। ছবি : প্রতিনিধি

রূপসী বাংলার কবি জীবনানন্দ দাশ লিখেছেন, “ভিজে হয়ে আসে মেঘে এ-দুপুর-চিল একা নদীটির পাশে/ জারুল গাছের ডালে বসে বসে চেয়ে থাকে ওপারের দিকে।” জারুল তার নিজ সৌন্দর্যে সকলের কাছে প্রকৃতিকে অভিভূত করে তুলে ধরেছে। জারুল ফুলকে সেইভাবে সুগন্ধি ফুল হয়ত বলা যায় না। কিন্তু বৃষ্টির পরে পিচঢালা পথে ঝড়ে পড়া রাশি রাশি ফুল এক অদ্ভুত মাদকতা তৈরি করে প্রকৃতিতে। আর সেই মাদকতায় মাতাল হয় প্রকৃতিপ্রেমীরা।

জারুলের বেগুনী আভায় মুগ্ধ হয়ে কবি আহসান হাবীব তার ‘স্বদেশ’ কবিতায় জারুলের প্রশংসা করে  লিখেছেন, “মনের কোনায় খুশির আলো জ্বলে ওঠে, তখন এক অনন্য চিত্র আঁকি—এক পাশে বিশাল জারুল গাছ, তার ডালে দুটি হলুদ পাখি।”

জারুলের হৃদয়কারা ও নয়নাভিরাম সৌন্দর্যে সেজেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৩০০ একরের প্রতিটি প্রান্তর।  দেশের তীব্র গরমের মধ্যে শীতল ও স্নিগ্ধ একটুকরো স্বর্গ যেন দেশের সর্ববৃহৎ এই ক্যাম্পাস।এ যেন নীল আকাশের নিচে চিত্রশিল্পীর তুলির ছোঁয়ায় রঙিন ক্যানভাস। আর এই ক্যানভাসেই যেনো স্বপ্ন বুনেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজারও শিক্ষার্থী। জারুলের তুর্কি রঙে চবি ক্যাম্পাস এখন সকলের কাছে এক নতুন আকর্ষণের কেন্দ্র হয়ে উঠেছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার, প্রশাসনিক ভবন, পুরাতন কলা ভবন,সোশ্যাল সায়েন্স রোড, বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল  প্রাঙ্গণে অদ্ভুত সৌন্দর্য ছড়াচ্ছে এই জারুল ফুল। গাছের নিচে পড়ে থাকা বেগুনি পাপড়ি যেন প্রাকৃতিক  বেগুনি গালিচার জন্ম দিয়েছে। আর এই গালিচায় আথিতেয়তা পাচ্ছে ক্যাম্পাস জুড়ে ঘুরে বেড়ানো প্রকৃতি প্রেমি প্রতিটা ক্যাম্পাস পিপীলিকা।

জারুলের অপরূপ দৃশ্য ক্যাম্পাসের নানা অংশে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং সাংস্কৃতিক অধ্যায়ে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। এটি এখন ফটোগ্রাফার এবং পর্যটকদের জন্য একটি আকর্ষণের কেন্দ্র। তারা বলেছেন, জারুলের এই অসাধারণ সৌন্দর্য তাদের ক্যামেরা লেন্সে এক ভিন্ন মাত্রা ধারণ করে।

শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থীদেরই নয়, এই অদ্ভুত মাদকতায় আসক্ত বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত ভ্রমণপিপাসুরাও। এটি এখন ফটোগ্রাফার এবং পর্যটকদের জন্য একটি আকর্ষণের কেন্দ্র। তারা বলেছেন, জারুলের এই অসাধারণ সৌন্দর্য তাদের ক্যামেরা লেন্সে এক ভিন্ন মাত্রা ধারণ করে। তরুণ-তরুণীদের এক অন্যরকম মিলনমেলায় পরিণত হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটা প্রান্তর।

শুধু জারুল নয় এই রৌদ্রজ্বল আবহাওয়ায় প্রতিটা শিক্ষার্থীদের অভ্যর্থনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে গেলেই দেখা মিলবে সোনালো ফুলের। আবার বঙ্গবন্ধু হলের সড়ক জুড়ে রয়েছে লাল রক্তিমময় কৃষ্ণচূড়া ফুল।এছড়াও নাম না জানা অনেক ফুল ক্যাম্পাসের প্রতিটি প্রান্তে ছড়াচ্ছে সৌন্দর্যের সুবাস।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষার্থী সাজ্জাদ সাকিব বলেন, “যে ফুল ভালোবাসে না সে নাকি মানুষ খুন করতে পারে সহজে। কিন্তু ২৩শ একরের ক্যাম্পাস চবিতে আসলে যেকোনো মানুষের কঠিন হৃদয় স্নিগ্ধ রঙে রাঙিয়ে যাবে। এখন বসন্ত শেষের দিকে ঝরাপাতার দিন শেষে গাছগুলো সেজেছে আপন সজীবতায়।তপ্ত এই আবহাওয়ায়ও বিভিন্ন ফুলের সজীবতা অভ্যর্থনা দিয়ে আমাদের বরণ করে নেয়।”

জানতে চাইলে রাজনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী শিহাবুর রহমান শিহাব বলেন, “অপার বিশ্বের সবচেয়ে মনোমুগ্ধকর জিনিস হচ্ছে ফুল।এই সৌন্দর্যময় ফুল চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় যেন পরিণত করেছে ফুলের বাগিচায়।বিভিন্ন ধরনের ফুল পাহাড়ঘেরা এই  ক্যাম্পাসের সৌন্দর্য বহু গুণে বাড়িয়ে দিয়েছে।”

Link copied!