• ঢাকা
  • বুধবার, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ১০ আশ্বিন ১৪৩১, ২১ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬
ছাত্রলীগ নেতা শামীমের মৃত্যু

প্রক্টরিয়াল বডির ভূমিকা জানালেন জাবি কর্তৃপক্ষ


জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৫, ২০২৪, ০১:৪২ পিএম
প্রক্টরিয়াল বডির ভূমিকা জানালেন জাবি কর্তৃপক্ষ

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) সাবেক ছাত্রলীগ নেতা শামীম মোল্লার মৃত্যুর ঘটনায় প্রক্টরিয়াল বডির ভূমিকা নিয়ে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম রাশিদুল আলম।

মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় প্রশাসনিক ভবনের কাউন্সিল কক্ষে আয়োজিত এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে নিজেদের অবস্থান ও পদক্ষেপের বিষয়ে জানালেন তিনি। 

এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক কামরুল আহসান।

গণমাধ্যমে প্রকাশিত শামীম হত্যায় প্রক্টরিয়াল বডির গাফিলতির বিষয়টি সত্য নয় দাবি করে অধ্যাপক রাশিদুল আলম বলেন, “সেদিন উপাচার্যের নির্দেশের পরপরই আশুলিয়া থানা পুলিশকে অবহিত করা হয় এবং শামীম মোল্লাকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়ার জন্য দ্রুত পুলিশের টিম পাঠানোর জন্য অনুরোধ করি। নিরাপত্তার স্বার্থে শামীম মোল্লাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা শাখার কলাপসিবল গেইটে তালাবদ্ধ করে সামনে নিরাপত্তাকর্মীদের পাহারায় রেখে নিজের অফিসে ফিরে আসি। এরমধ্যে কতিপয় বিক্ষুদ্ধ ব্যক্তি গেইটের তালা ভেঙে শামীম মোল্লাকে মারধর শুরু করলে তৎক্ষণাৎ আমি নিরাপত্তা শাখায় গিয়ে বিক্ষুব্ধদের সামনে দুহাত মেলে দিয়ে ঢাল হয়ে দাঁড়াই। সেখান থেকে তাদের সরিয়ে দিয়ে এরপর শামীম মোল্লার নিরাপত্তার স্বার্থে আবারও নিরাপত্তা শাখার কলাপসিবল গেইটে নতুন তালা লাগিয়ে দেওয়া হয়। রাত আনুমানিক সাড়ে ৭টার সময় পুলিশের টিম প্রক্টর অফিসে আসে। এরপর রাত আনুমানিক ৮টার দিকে আমি এবং নিরাপত্তাকর্মীরা শামীম মোল্লাকে ঢালস্বরূপ নিরাপত্তা বেষ্টনী দিয়ে পুলিশের গাড়িতে তুলে দিই।”

থানায় মামলা দায়ের ও ক্রম পরিবর্তনের বিষয়ে প্রক্টর বলেন, ‘এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিতে মামলা করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা সুদীপ্ত শাহিন মামলা করেছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নির্দেশিত নিয়মেই তাকে মামলা করতে হবে। তবে মামলার এজহারে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রেরিত অভিযুক্তদের ক্রমের সঙ্গে আসামিদের ক্রমের অমিল পরিলক্ষিত হয়। ক্রম পরিবর্তনের সঙ্গে মামলার বাদী প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা জড়িত আছেন কি না, তা খতিয়ে দেখার জন্য তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। তবে ইতিমধ্যেই মামলায় আসামিদের ক্রম সংশোধন করা হয়েছে।”

সার্বিক বিষয়ে উপাাচার্য অধ্যাপক কামরুল আহসান বলেন, “একাধিক গণমাধ্যমে উল্লেখ করা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের উপস্থিতিতে শামীম মোল্লাকে মারধর করা হয়েছে। অথচ আমি ঘটনা জানার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ প্রশাসনের সহযোগিতা নেওয়ার জন্য প্রক্টরকে নির্দেশ দেই। এ ছাড়া ঘটনার গুরুত্ব উপলদ্ধি করে নিজেই রাত ৭ টা ২০ মিনিটের দিকে প্রক্টর অফিসে উপস্থিত হই। আমি গিয়ে দেখতে পাই, পুলিশ তখনও ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়নি। তাৎক্ষণিকভাবে আবারও পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের দ্রুত আসার জন্য অনুরোধ করি।”

গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে প্রক্টর অফিসে উপস্থিত সাবেক শিক্ষার্থী ও জাবি ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু সাঈদ ভূঁইয়া এবং আমাকে জড়িয়ে যে তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন দাবি করে তিনি বলেন, “সেদিন প্রক্টর অফিসে গেলে নবনিযুক্ত উপাচার্য হিসেবে আমার সঙ্গে অনেক সাবেক শিক্ষার্থী দেখা করেন। তাদের মধ্যে আবু সাঈদ ভূঁইয়াও ছিল বলে নিশ্চিত হয়েছি। তাদের সঙ্গে শামীম মোল্লাকে মারধরের বিষয় নিয়ে আমার কোনো কথা হয়নি।”

এই মৃত্যুর ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের গাফিলতির কথাটি উল্লেখ করে একটি মহল উদ্দেশ্যপ্রনোদিতভাবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বিরুদ্ধে অপপ্রচার বলে দাবি করে উপাচার্য বলেন, শামীম মোল্লার মৃত্যুর ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাৎক্ষণিকভাবে শোক প্রকাশ করে ২৪ ঘন্টার মধ্যে তদন্ত কমিটি গঠন করে এবং প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে কয়েকজনকে চিহ্নিত করে রাষ্ট্রীয় ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি অধিকতর তদন্ত সাপেক্ষে প্রকৃত অপরাধীদের চিহ্নিত করে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। এ ঘটনায় এত তড়িৎ গতিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যা বিশ্ববিদ্যালয়ে নজিরবিহীন। এরপরও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে দোষারোপ করার বিষয়টি দূরভিসন্ধিমূলক।

Link copied!