শিক্ষার্থীদের অনশনের মুখে পোষ্য কোটায় বেশ কিছু পরিবর্তন এনেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) রাত ১২টার দিকে পরিবর্তনের বিষয়গুলো জানান উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসান।
পোষ্য কোটার বিষয়ে নেওয়া নতুন সিদ্ধান্তগুলো হলো—আগে প্রতি বিভাগে সর্বোচ্চ চারজন করে মোট ১৪৮ জনের ভর্তির সুযোগ ছিল, এখন সেটা ৪০টি আসনে সীমাবদ্ধ করা হয়েছে। আগে পোষ্য হিসেবে সন্তান, স্ত্রী, ভাই ও বোন এ সুবিধা পেতেন, এখন শুধু সন্তানের ক্ষেত্রে এ সুবিধা পাবেন এবং একজন চাকরিজীবী একবারই এই সুবিধা ভোগ করবেন। অর্থাৎ একজন চাকরিজীবীর যদি একাধিক সন্তান থাকেন, তবুও তিনি একটি সন্তানের ক্ষেত্রেই এই সুবিধা পাবেন। আগে চাকরিজীবীরা যে বিভাগে চাকরি করতেন, সে বিভাগেও পোষ্যরা ভর্তি হতে পারতেন, এখন সে সুযোগ রাখা হয়নি।
অনশনকারী কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক সম্মান প্রথম বর্ষে ভর্তিতে পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে গত রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আমৃত্যু অনশনে বসেন একদল শিক্ষার্থী। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানার থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে অনশন শুরু করেন তারা।
এরপর সোমবার ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে উপাচার্যের আশ্বাসে অনশন স্থগিত করেন। পরে সোমবার বিকেলে মিটিং শেষে উপাচার্য একটি তদন্ত কমিটি করে শিক্ষার্থীদের জানালে তারা ক্ষোভে ফেটে পড়েন এবং সন্ধ্যা সাতটার দিকে ফের অনশনে বসেন। এরপর উপাচার্য আবার সভায় বসেন এবং পোষ্য কোটার বিষয়ে বেশ কিছু সিদ্ধান্তের কথা জানান। পরে শিক্ষার্থীরা রাত সাড়ে ১২টার দিকে অনশন ভাঙেন।
এ বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক আরিফুজ্জামান উজ্জ্বল বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পূর্বঘোষণা অনুযায়ী আগামী ৫ ফেব্রুয়ারি জুলাই-আগস্টে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনার বিচার করার বিষয়ে প্রশাসনের প্রতিশ্রুতির শেষ দিন। আগামী ৬ ফেব্রুয়ারি জাকসুর তফসিল ঘোষণা করার কথা। এ ছাড়া আগামী ৯ ফেব্রুয়ারি থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা শুরু হবে। এমন পরিস্থিতিতে প্রশাসন পোষ্য কোটার ব্যাপারে কিছু পরিবর্তন এনে প্রস্তাব দেওয়ায় তাঁরা সেগুলো মেনে নিয়ে অনশন ভেঙেছেন।