গাজায় ফিলিস্তিনিদের ওপর নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় প্রতিবাদ জানিয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) শিক্ষক সমিতি।
বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে এই প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করা হয়। সমাবেশ শেষে নিরীহ ফিলিস্তিদের জন্য দোয়া করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল বিভাগের শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীরা।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, “ইসরায়েল আজকে বিশ্বের একটি বিষফোড়া হয়ে দাঁড়িয়েছে। তারা নির্বিচারে মানুষ মারছে কিন্তু আমেরিকা বা বিশ্ব মানবাধিকার কর্মীরা কিছু বলছেন না। যারা সারা বছর মানবাধিকারের গল্প বলেন, মুসলমানদের সময় এলে তারা চুপ হয়ে যান। গাজাবাসীকে মারতে আজ আমেরিকা প্রশাসন সাহায্য করছেন। তাদেরকে উস্কে দিয়ে সাধারণ একটা বিবৃতির মাধ্যমে দুঃখ প্রকাশ করে শান্ততনা দিচ্ছেন।”
সমাবেশ থেকে শিক্ষকরা সকল ইসরাইলি পণ্য বয়কটের ঘোষণা দেন। তারা বলেন, “আমরা তাদের অর্থনৈতিকভাবে অচল করে দেব। আমরা কেউ তাদের পণ্য ব্যবহার করব না।” সরকারকে এ ব্যপারে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান তারা।
শিক্ষকরা আরও বলেন, “ইসরায়েলের বিপক্ষে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য যদি কোনো দেশের দূতাবাস ঘেরাও করতে হয়, আমরা তাই করব। তবুও এই বর্বর ইসরায়েলের বিপক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে বিশ্বকে এবং জাতিসংঘকে।”
দর্শন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হাফিজুল ইসলাম বলেন, “এটা শুধু মুসলমানদের বিরুদ্ধে আঘাত নয়, এটা মানবতার বিরুদ্ধে আঘাত। তাদের টার্গেট গাজার ভূমি দখল করা তারা কোনো ধর্মের বিরুদ্ধে না তারা পুরো বিশ্বের বিরুদ্ধে। তাই মানুষ হিসেবে এটির প্রতিবাদ করা সবার কর্তব্য।”
জবি শিক্ষক সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বেলাল হোসেন বলেন, “আমরা এক কোটি মানুষকে ১৫০ কোটি মানুষ ভয় পাচ্ছি। আমরা ফেসবুকে একটি পোস্টও করতে পারি না। ফিলিস্তিনে আমাদের ভাই বোনদের নির্মমভাবে হত্যা করা হচ্ছে। আমরা সরাসরি কোনো হস্তক্ষেপ করতে না পারলেও তাদেরকে অর্থনৈতিকভাবে হস্তক্ষেপ করতে পারব। আমাদের নিজ নিজ অবস্থান থেকে সকল ইসরাইলী পণ্য ব্যবহার বন্ধ করতে হবে।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক বলেন, “ফিলিস্তিনিরা আজকে হামলার শিকার হচ্ছে। আমাদেরও একই অবস্থা হতে পারে। তাই সবাইকে এর বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে। বাংলাদেশে বিগত বছরগুলোতে অসংখ্য ইজরায়েলি পণ্য কেনা হয়েছিল, যা দিয়ে দেশের জনগণের ওপর গুপ্তচর বৃত্তি চালানো হয়েছে। সেসব পণ্য নিষিদ্ধ করতে হবে। বিগত সময়ে যত ইসরায়েলি জাহাজ দেশে এসেছে, সবগুলোর তথ্য প্রকাশ করতে হবে।”
শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক রইছ উদ্দিন বলেন, “বিশ্ব আজ যে নির্মম চিত্র দেখছে তা কোনোভাবেই কাম্য নয়। পুরো বিশ্ব ঘুমিয়ে আছে। আর আমার ফিলিস্তিনি ভাই বোনদের মধ্যে হাহাকার। আমি ইন্তেফাদা ফাউন্ডেশনকে আহ্বান করব তারা যেন ফিলিস্তিনিদের পাশে দাঁড়ায়। আমরা নিজেদের সাধ্যমতো সাহায্য করব। আমরা যদি ১০টি টাকা দিতে পারি কাল কিয়ামতের মাঠে বলতে পারব যে আমি তাদের পাশে কোনো না কোনোভাবে ছিলাম।”