গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা থেকে বেরিয়ে স্বতন্ত্র ভর্তি পরীক্ষার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে ক্যাম্পাসের বটতলা প্রাঙ্গণ থেকে মিছিল শুরু করেন তারা।
এসময় শিক্ষার্থীরা ‘শিক্ষার নামে বৈষম্য, মানি না মানবো না’, ‘সবাই যখন স্বতন্ত্রে, ইবি কেন গুচ্ছে’, ‘ইবির স্বকীয়তা, বজায় রাখো করতে হবে’, ‘গুচ্ছের ভোগান্তি, আর না আর না’, ‘গুচ্ছের বিড়ম্বনা, আর না আর না’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।
পরে মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে প্রশাসনিক ভবনের সামনে এসে শেষ হয়। পরে সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে শিক্ষার্থীরা বলেন, “২০২০ সালে শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি দূরীকরণের উদ্দেশ্যে দেশের সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর একাংশ প্রথম গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা শুরু করে। কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি এতে ভোগান্তি দূর না হয়ে বরং শিক্ষার স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আসন সংখ্যা খালি রেখেই ভর্তি কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। তাছাড়া এক দীর্ঘ ভর্তি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীদের যেতে হচ্ছে। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বকীয়তা বজায় থাকছে না।”
শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, “স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য ধরে রাখতে ইতোমধ্যে জবি, শাবিপ্রবি, খুবিসহ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় গুচ্ছ থেকে বেরিয়ে এসে স্বতন্ত্র ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। কিন্তু স্বাধীনতার পর প্রতিষ্ঠিত প্রথম বিশ্ববিদ্যালয় এখনো গুচ্ছেই রয়ে গেছে। শিক্ষার্থীদের স্বার্থেই যদি বিশ্ববিদ্যালয় কাজ করে থাকে তাহলে কেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় গুচ্ছ থেকে বেরিয়ে স্বতন্ত্র ভর্তি পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না।” এসময় তারা অনতিবিলম্বে গুচ্ছ থেকে বেরিয়ে আসার জন্য দাবি জানান।
সমাবেশে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন ইবি সংসদের সভাপতি মাহমুদুল হাসান বলেন, “আমরা দেখেছি ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষ থেকে পরীক্ষামূলক গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা শুরু হয়। কিন্তু যে উদ্দেশ্যে গুচ্ছ পদ্ধতি চালু হয় সেই আলো আমরা এখনো দেখতে পাইনি বরং বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আঞ্চলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত হচ্ছে। সেশনজট বেড়েই চলছে, অধিক সংখ্যক আসন ফাঁকা রেখে ভর্তি কার্যক্রম শেষ করছে। সর্বশেষ ২০২৩-২৪ বর্ষে ১০৩ আসন ফাঁকা রেখে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি কার্যক্রম শেষ করেছে। একটি সেশনের ভর্তি কার্যক্রম শেষ করতে যদি সাত থেকে আট মাস সময় নেয় তাহলে সেই গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা কীভাবে শিক্ষার্থীদের উপকারে আসবে?”
মাহমুদুল হাসান আরও বলেন, “এর আগের ভর্তি প্রক্রিয়ায় দেখা গেছে ১০বার মেরিট প্রকাশ করেও আসন পূরণ করতে পারেনি। তাই আর গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষায় ইবি অংশগ্রহণ করতে পারবে না। আমাদের দাবি অনতিবিলম্বে গুচ্ছ থেকে বেরিয়ে এসে নিজস্ব স্বকীয়তা বজায় রেখে স্বতন্ত্র ভর্তি পরীক্ষার আয়োজন শুরু করুক। এরপরও প্রশাসন যদি গুচ্ছ থেকে বেরিয়ে আসার অপারগতা প্রকাশ করে তাহলে সাধারণ শিক্ষার্থীরা এর বিরুদ্ধে কঠোর আন্দোলন গড়ে তুলবে।”