অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাসসহ সব ধরনের একাডেমিক কার্যক্রম বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন ধানমন্ডি আইডিয়াল কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীরা। কলেজের বর্তমান গভর্নিং বডির বর্তমান সভাপতি ও কতিপয় সদস্যদের যোগসাজসে প্রতিষ্ঠানে ব্যাপক অনিয়ম ও আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ এনে তাদের পদত্যাগের দাবিতে ক্লাস বর্জন ও কর্মবিরতির এই ঘোষণা দেন তারা। একই সঙ্গে গভর্নিং বডির ওপর অনাস্থা প্রকাশ করে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছেন শিক্ষক-কর্মচারীরা। এছাড়া কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকেও কলেজে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।
রোববার (৫ জানুয়ারি) সকালে আইডিয়াল কলেজে গভর্নিং বডির বিরুদ্ধে অনিয়ম দুর্নীতির বিরুদ্ধে এক সংবাদ সম্মেলনে তারা এই দাবি করেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন কলেজের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের শিক্ষক মনিরুল ইসলাম। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, জীববিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক নাজমুল হুদা, ইংরেজি বিভাগের সেগুপ্তা ইসলাম, সিএসই বিভাগের প্রভাষক মারুফ নেওয়াজ প্রমুখ।
লিখিত বক্তব্যে মনিরুল ইসলাম বলেন, “ধানমন্ডি আইডিয়াল কলেজের গভর্নিং বডির বর্তমান সভাপতি অ্যাডভোকেট সৈয়দ রেজাউর রহমান। তিনি আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য। প্রায় ১৪ বছর ধরে তিনি এই প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করে আসছেন। গভর্নিং বডিতে অন্য সব পদে কিছুটা পরিবর্তন এলেও সভাপতির পদটিতে এত বছরেও কোনো পরিবর্তন আসেনি।”
মনিরুল ইসলাম বলেন, “কিছুদিন আগে বিভিন্ন অনিয়ম করে ও প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন খাত থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ লুটপাট ও আত্মসাৎ করেন সাবেক অধ্যক্ষ জসিম উদ্দীন আহম্মেদ, মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষক তৌফিক আজিজ চৌধুরী ও বাংলা বিভাগের শিক্ষক তরুণ কুমার গাঙ্গুলী। সুপ্রতিষ্ঠিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির সুনাম চরমভাবে নষ্ট করেছেন তারা। এসব অনিয়ম ও দুর্নীতির সঙ্গে কলেজ গভর্নিং বডির সভাপতি ও কতিপয় সদস্য প্রত্যক্ষভাবে জড়িত থাকায় এগুলো কখনই প্রকাশিত হয়নি এবং এর বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থাও নেওয়া হয়নি।”
তিনি আরও বলেন, “অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে সাময়িক বরখাস্ত অধ্যক্ষ ও অপর দুই শিক্ষকের বিষয়ে প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরীণ প্রাথমিক তদন্তের পরে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি মোতাবেক অভিযোগ তদন্তে কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া দীর্ঘ প্রায় পাঁচ মাস ধরে বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা ও আইনগত জটিলতায় আটকে আছে। এ তদন্তকাজ বাধাগ্রস্ত করতে অভিযুক্ত ব্যক্তিরা হাইকোর্টে রিট পিটিশন দায়ের করেন, যেখানে অন্য আরও ছয়জনের পাশাপাশি কলেজ গভর্নিং বডির সভাপতিকে প্রতিপক্ষ করা হয়। কিন্তু অজানা কারণে প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনো আইনি পদক্ষেপ গ্রহণের ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।”
এ সময় বর্তমান গভর্নিং বডি বাতিল করে নতুন গভর্নিং বডি গঠন ও অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান শিক্ষকেরা।