সাংবাদিক গোলাম রাব্বানী নাদিম হত্যার সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে মানবনন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে।
রোববার (১৮ জুন) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের পাদদেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সাফায়িত সিফাতের সঞ্চালনায় এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
এ সময় তারা ‘সাংবাদিক হেনস্তা বন্ধ করুন, সাংবাদিকদের সুরক্ষা চাই, সাংবাদিকদের নিরাপত্তা কোথায়? সাংবাদিক নাদিম হত্যার বিচার চাই, সাংবাদিকতা কোনো অপরাধ নয়, সাংবাদিক নির্যাতন বন্ধ করুন’ লেখা বিভিন্ন প্লেকার্ড হাতে নিয়ে প্রতিবাদ জানান।
মানববন্ধনে বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান কাজী এম. আনিছুল ইসলাম বলেন, “যারা সাংবাদিকতার বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়, যারা সাংবাদিক নিধন করে, হত্যা করে তারা জাতির শত্রু, রাষ্ট্রের শত্রু। কারণ সাংবাদিক জাতির বিবেক। সমাজের যে অনাচার অত্যাচার থাকে সেগুলো তুলে এনে সরকার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সহযোগীতা করে। সাংবাদিক নাদিমকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে। হত্যার আগে তার ওপর অমানবিক অত্যাচার করা হয়েছে। আমি কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় প্রেস ক্লাবের এই মানববন্ধন থেকে দাবি জানাই নাদিম হত্যার দ্রুত বিচার নিশ্চিত করা হোক।”
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি সাজ্জাদ বাসার বলেন, “করোনার দুর্দিনেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, ডাক্তারদের পাশাপাশি জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সঠিক তথ্য দিতে কাজ করে গেছেন সাংবাদিকরা। তারা ৩৬৫ দিন, ২৪ ঘণ্টাই দেশের জন্য কাজ করেন। যখনই যেই দল অন্যায় করে, যে ব্যক্তি অন্যায় করে তার বিরুদ্ধে লেখালেখি করেন। কিছু দুর্বৃত্ত অনিয়ম, দুর্নীতি টিকিয়ে রাখার জন্য সাংবাদিকদের গলা চেপে ধরে। এই মানববন্ধন থেকে সারা দেশের সাংবাদিকদের ওপর সকল জুলুম, নির্যাতন বন্ধের দাবি জানাই। এছাড়া সাংবাদিক নাদিম, সাগর-রুনিসহ সকল হত্যার বিচার চাই।”
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন প্রেস ক্লাবের দপ্তর সম্পাদক ও দৈনিক জনকণ্ঠ পত্রিকার বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি ইকবাল হাসান, কার্যনির্বাহী সদস্য কাতিব হাসান মুরাদসহ কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় প্রেস ক্লাবের অন্যান্য সদস্যরা। এছাড়া অনুপ্রাস কণ্ঠ চর্চা কেন্দ্র, বিএনসিসি, বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের প্লাটফর্ম এমসিজে নিউজ, অভয়ারণ্য, থিয়েটার কুবিসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য সংগঠন মানববন্ধনে একাত্মতা জানিয়েছে।
বুধবার (১৪ জুন) রাতে পেশাগত দায়িত্বপালন শেষে বাড়ি ফেরার পথে জামালপুরের বকশীগঞ্জের পাথাটিয়ায় পৌঁছালে অস্ত্রধারী ১০ থেকে ১২ জন দুর্বৃত্ত নাদিমকে পিটিয়ে জখম করে পালিয়ে যান। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। এরপর রাত ১২টায় সেখান থেকে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় বৃহস্পতিবার (১৫ জুন) সকালে তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বেলা পৌনে ৩টার দিকে তিনি মারা যান।