চলমান তাপপ্রবাহের মধ্যেই সারা দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হয়েছে। রমজান, ঈদ ও তাপপ্রবাহজনিত কারণে দীর্ঘ ছুটি শেষে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা ফিরেছেন ক্লাসে। রোববার (২৮ এপ্রিল) সকাল থেকেই সরব হয়ে ওঠে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর আঙিনা। অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের অতি সতর্কতার সঙ্গে ক্লাসে ক্লাসে পৌঁছেও দিয়েছেন। পাঠও শুরু হয়। তবে শিক্ষক, শিক্ষার্থী কিংবা অভিভাবক কারও মধ্যেই স্বস্তি ফেরেনি।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলেই আগামী তিন দিনের জন্য আবহাওয়া অধিদপ্তরের জারি করা হিট অ্যালার্টের দুঃসংবাদ পেলেন শিক্ষকরা। শুধু তা-ই নয়, জলবায়ু বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, এবারের হিট অ্যালার্টের মধ্যে তাপমাত্রা আরও বেড়ে আগের রেকর্ড ভাঙতে পারে।
এমন পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বেশি উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন অভিভাবকরা। তবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার প্রথম দিনেই বেশ কয়েকটি দুঃসংবাদ পাওয়া গেছে। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় গরমে শিক্ষক আর শিক্ষার্থীরা অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। এমনকি হিটস্ট্রোকে যশোর ও চট্টগ্রামের দুই শিক্ষকের মৃত্যুও হয়েছে।
গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, যশোরে প্রচণ্ড গরমে অসুস্থ হয়ে আহসান হাবিব নামের এক স্কুলশিক্ষকের মৃত্যু হয়েছে। আহসান হাবিব যশোর সদর উপজেলার আমদাবাদ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ছিলেন। এ ছাড়া তীব্র গরমে অসুস্থ হয়ে চট্টগ্রামের কালুরঘাটে মাদ্রাসাশিক্ষক মাওলানা মো. মোস্তাক আহমেদ কুতুবী আলকাদেরী (৫৫) মারা গেছেন।
এ ছাড়া রাজধানীর মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের সাদিকা রহমান নামের ইংরেজি ভার্সনের চতুর্থ শ্রেণির এক শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েছে। এ ছাড়া প্রতিষ্ঠানের অনেক শিক্ষার্থীই গরমের মধ্যে ক্লাস করে অসুস্থ হয়ে পড়ছে। তাদের অভিভাবকরা এ নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছেন। তারা বলছেন, এই গরমের মধ্যে স্কুলে পাঠদান বন্ধ করে অনলাইনে ক্লাস নিলে ভালো হয়।
নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে আমানউল্যাপুরের জয়নারায়ণপুর ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসার শ্রেণিকক্ষে এক শিক্ষার্থী গরমে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাকে বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
টানা প্রায় একমাস ধরে দেশে প্রচণ্ড গরম চলছে। অর্ধশতাধিক জেলার ওপর দিয়ে বইয়ে যাচ্ছে তাপপ্রবাহ। এর মধ্যে কয়েক দফায় হিট অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে বের হওয়ার ক্ষেত্রে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে সপ্তাহ খানেক আগে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটি সাতদিন বাড়িয়ে দেওয়া হয়।
সেই ছুটি শেষে রোববার (২৮ এপ্রিল) দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হয়েছে। প্রথম দিনেই প্রচণ্ড গরমে দুইজন শিক্ষকের মৃত্যুসহ বহু প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক শিক্ষার্থীরা অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। এভাবে তাপপ্রবাহের মধ্যে স্কুল খুলে দেওয়া নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন অভিভাবকেরা।