রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে শিক্ষক-সাংবাদিকসহ অন্তত ৩৪ জন আহত হয়েছেন। সোমবার (১৮ নভেম্বর) আইন ও মার্কেটিং বিভাগের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
এদিন বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে স্টেডিয়ামের সামনে প্রথম দফায় সংঘর্ষ হয়। এরপর রাত ৮টার দিকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একাডেমিক ভবনের সামনে আরেক দফা সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এরপর এক জরুরি সভায় উদ্ভুত পরিস্থিতিতে ফুটবল টুর্নামেন্ট সাময়িক স্থগিত ঘোষণা করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
সংঘর্ষে মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থীদের হামলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সহকারী প্রক্টর ও আইন বিভাগের সাবেক সহযোগী অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান ও বণিক বার্তার ক্যাম্পাস প্রতিনিধি আবু ছালেহ শোয়েব আহত হয়েছেন।
পুলিশ ও প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ে চলমান আন্তঃবিভাগ ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে কেন্দ্রীয় স্টেডিয়ামের সামনে আইন বিভাগ ও মার্কেটিং বিভাগের মধ্যে লাঠিসোঁটা ও চেয়ার দিয়ে সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষের পর আইন বিভাগের শিক্ষার্থীরা স্টেডিয়াম চত্বর ত্যাগ করেন। পরে আইন বিভাগের শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসের হবিবুর রহমান হল মাঠ ও মার্কেটিংয়ের শিক্ষার্থীরা টুকিটাকি চত্বরে অবস্থান নেন। সন্ধ্যা ৬টার দিকে আইন বিভাগের শিক্ষার্থীরা প্রশাসন ভবনের সামনে জড়ো হন এবং প্যারিস রোড প্রদক্ষিণ করে দুইপক্ষ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একাডেমিক ভবনের সংলগ্ন রাস্তায় মুখোমুখি অবস্থান নেন। তবে এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য ও প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা মধ্যে অবস্থান নিয়ে মীমাংসার চেষ্টা চালিয়ে যান। কিন্তু রাত পৌনে ৮টার দিকে মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা কাচের টুকরো ছুড়লে ব্যাপক সংঘর্ষের শুরু হয়। সংঘর্ষের কয়েক মিনিটেই মার্কেটিং বিভাগ কাচের বোতল, ইট, বাশ ও লাঠিসোঁটার হামলায় আইন বিভাগের শিক্ষার্থীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যান। এ সময় মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা আইন বিভাগে ব্যাপক ভাঙচুর চালান। এরপর রাত সোয়া ৮টার দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পুলিশ, সেনাবাহিনী এবং সিআরটি ঘটনাস্থলে অবস্থান নেয়।
এ বিষয়ে উভয় বিভাগের সভাপতির সঙ্গে যোগাযোগের একাধিক চেষ্টা করা হলেও তারা সাড়া দেননি।
আহতের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসা কেন্দ্রের প্রধান চিকিৎসক মাফরুহা সিদ্দিকী লিপি বলেন, অন্তত ২৫ চিকিৎসা নিয়েছেন এখানে। তবে আহত শিক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়তে পারে। এ ছাড়াও রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অন্তত ৯ জন চিকিৎসা নিয়েছেন বলে জানা গেছে।
জনসংযোগ প্রশাসক অধ্যাপক আখতার হোসেন মজুমদার বলেন, ‘মঙ্গলবার দুই বিভাগের ক্লাস স্থগিত করা হয়েছে। এ ছাড়া কাল আলাদা করে দুই বিভাগের শিক্ষকদের সাথে আলোচনায় বসবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীব বলেন, “উদ্ভুত পরিস্থিতিতে ফুটবল টুর্নামেন্ট আপাতত স্থগিত করা হয়েছে। আমরা এটা নিয়ে মিটিং করছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম রক্ষার্থে সবদিক ভেবে সিদ্ধান্ত নেব।”