জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম হলে অবস্থানরত এক ‘ভুয়া’ হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীকে আটক করেছে প্রক্টোরিয়াল টিম।
বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) রাত সাড়ে ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
আটক ব্যক্তির নাম আবু হুরাইরা (২২)। তিনি সিরাজগঞ্জের মিরপুর গ্রামের বাসিন্দা। হলের ২১৩ নম্বর কক্ষে অবস্থানকালে শিক্ষার্থীরা তার পরিচয় নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন। পরে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে প্রক্টোরিয়াল টিমকে খবর দেন। প্রক্টরিয়াল টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তার কাছ থেকে একটি নকল হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের আইডি কার্ড জব্দ করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে হুরাইরা স্বীকার করেন যে, তিনি নিজেকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী, হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএর শিক্ষার্থী পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন জন, এমনকি তার পরিবারের সদস্যদেরও বিভ্রান্ত করেছেন।
হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ভুয়া আইডি কার্ড তৈরির বিষয়ে জানতে চাইলে আবু হুরাইরা বলেন, “আমি শুধুমাত্র মজার ছলে এটি বানিয়েছি, অন্য কোনো উদ্দেশ্য ছিল না। আমি শুধু রাতটা কাটানোর জন্য জাবিতে এসেছিলাম, কোনো খারাপ উদ্দেশ্য ছিল না।”
তবে, জিজ্ঞাসাবাদে তিনি আরও স্বীকার করেন যে, তিনি এর আগেও এই বছর ভর্তির পরীক্ষার সময় ৭-৮ দিন হলে অবস্থান করেছিলেন, তখন তিনি এক শিক্ষার্থীর আত্মীয় পরিচয় দিয়েছিলেন।
এ বিষয়ে হলের ৫৩তম ব্যাচের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের শিক্ষার্থী মো. রিফাদুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, “তার (আবু হুরাইরা) পরিচয় সন্দেহজনক মনে হওয়ায় আমরা খোঁজ নিয়ে জানতে পারি, তিনি ভুয়া পরিচয় ব্যবহার করে এর আগেও ২১২ নম্বর কক্ষে থেকেছেন এবং আজও থাকার উদ্দেশ্যে এসেছিলেন। আমরা তাকে ২১৩ নম্বর কক্ষে আটকে রেখে হল প্রশাসনকে জানাই। পরে প্রশাসন এসে তাকে প্রক্টর অফিসে নিয়ে যায়।”
এ ছাড়া কয়েকজন শিক্ষার্থী অভিযোগ করেন যে, হুরাইরা নিজেকে জাবির আইন বিভাগের ৫২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী পরিচয় দিয়ে জুনিয়রদের র্যাগও দিয়েছেন।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর অধ্যাপক আবদুর রাজ্জাক বলেন, “শিক্ষার্থীরা আমাদের জানান যে, হলে একজন বহিরাগত অবস্থান করছে। বিষয়টি জানতে পেরে আমরা দ্রুত সেখানে যাই এবং তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করি। তিনি ভুয়া পরিচয় ব্যবহারের কথা স্বীকার করেন এবং আমরা তার কাছ থেকে একটি নকল হারভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের আইডি কার্ড উদ্ধার করি।”
আবদুর রাজ্জাক আরও বলেন, “এরপর আমরা তার বোন ও বোনের স্বামীর সঙ্গে যোগাযোগ করি, যারা বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী এলাকায় থাকেন। তার এবং তার বোনের কাছ থেকে তার প্রতারণার বিষয়টি স্বীকার করে লিখিত বক্তব্য নেওয়ার পর আমরা তাকে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করি।”