জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থী ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকা আত্মহত্যার ঘটনাটি সুষ্ঠু তদন্ত করে প্ররোচনাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চেয়েছে মানবাধিকার কমিশন।
শুক্রবার (১৫ মার্চ) রাত ১০টার দিকে ফেইসবুকে একটি পোস্টে ‘কারণ’ উল্লেখ করে আত্মহত্যা করেছেন জবির আইন বিভাগের ১৩তম ব্যাচের শিক্ষার্থী অবন্তিকা। সেখানে তিনি সহপাঠী ১৪তম ব্যাচের শিক্ষার্থী রায়হান সিদ্দিকি আম্মানের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানিসহ নানা ধরনের নিপীড়নের অভিযোগ করেন। একইসঙ্গে সহকারী প্রক্টর সহকারী অধ্যাপক দ্বীন ইসলামের বিরুদ্ধে ওই অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর পক্ষ নিয়ে তার সঙ্গে বাজে আচরণের অভিযোগও করেন তিনি।
শনিবার (১৬ মার্চ) মানবাধিকার কমিশন থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শিক্ষক দ্বীন ইসলাম অবন্তিকার সঙ্গে যা যা করেছেন, সেটা তাকে আত্মহত্যায় প্ররোচনার শামিল। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আত্মহত্যার আগে ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছেন। সেখানে তার বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সহপাঠীর বিরুদ্ধে যৌন হয়রানিসহ নানা ধরনের নিপীড়নের অভিযোগ করেন। সেইসঙ্গে সহকারী অধ্যাপকের বিরুদ্ধেও তিনি অভিযোগ করেছেন, যিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। সেই শিক্ষক তার দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন না করে বরং আত্মহত্যাকারী শিক্ষার্থীর সঙ্গে এমন আচরণ করেছেন, যা আত্মহত্যায় প্ররোচনার শামিল মর্মে সুস্পষ্ট।
এ ঘটনায় জাতীয় মানবাধিকার কমিশন ক্ষোভ প্রকাশ করে জানায়, সম্প্রতি শিক্ষাঙ্গনে নারী শিক্ষার্থীদের হয়রানিসহ নৈতিক স্খলনের যেসব ঘটনা ঘটছে, সেটা কমিশনকে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন করেছে।
জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, “আত্মহত্যার ঘটনাটির সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক প্ররোচনাকারীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা প্রয়োজন।”
নারী শিক্ষার্থীরা প্রায়ই হয়রানির শিকার হচ্ছেন এবং এ বিষয়ে শক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করে কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, “কোনো ধরনের শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চলতে পারে না। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে শিক্ষার্থীদের প্রতি বিশেষ যত্নশীল হতে হবে এবং শিক্ষার্থীবান্ধব সুষ্ঠু শিক্ষার পরিবেশ তৈরির জন্য মনোযোগী হতে হবে।”
মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন, “এ ধরনের ঘটনা প্রমাণ করে শিক্ষাঙ্গনে আমাদের নৈতিকতা ও শুদ্ধাচারের দিকে বিশেষ জোর দেওয়া প্রয়োজন। উন্নত মানসিকতা ও মূল্যবোধ বিকাশ ছাড়া শিক্ষাঙ্গণ অপূর্ণ থেকে যাবে।”
এসব ঘটনায় কমিশনের প্রস্তুত করা যৌন হয়রানি নিরোধ আইনের খসড়া দ্রুত কার্যকর করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন।